Advertisement
Advertisement

Breaking News

Residents adopt Laxmi idol to get rid of draught

বৃষ্টিহীন গ্রামে বন্ধ চাষ, ভাগ্য ফেরাতে পাশের গ্রামের ‘মুটলক্ষ্মী’কে দত্তক নিলেন গৃহস্থ

গ্রামবাংলায় এটাই প্রথম লক্ষ্মীপুজো।

Residents adopt Laxmi idol to get rid of draught । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 18, 2022 3:07 pm
  • Updated:November 18, 2022 3:07 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: খরার কবলে পড়ে গ্রাম লক্ষ্মীহীন। চাষ হয়নি। তাই পাশের গ্রাম থেকে লক্ষ্মীকে দত্তক নিল সিউড়ির (Suri) চাকদহ গ্রাম। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের লোক প্রতি পরিবার থেকে একজন করে স্নান সেরে পাশের গ্রামে গিয়ে মাঠের ধান কেটে এনে ‘মুঠ লক্ষ্মী’ নিঃশব্দে নিয়ে এল ঘরে। গ্রামবাংলায় এটাই প্রথম লক্ষ্মীর পুজো।

‘কার্তিক সংক্রান্তির দিনে কল্যাণ করিয়া আড়াই মুঠা ধান কাটিয়া লক্ষ্মীপূজা হইয়া গিয়াছে…’ বীরভূমের কথা সাহিত্যিক তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় তার গণদেবতা উপন্যাসে এই মুঠ পুজোর উল্লেখ এভাবেই করে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ছিল গ্রাম বাংলায় সেই লক্ষ্মী আনার দিন। এদিকে সিউড়ির কাছেই চাকদহ, গোবিন্দপুর, জীবধারপুর এলাকায় গ্রামের পর গ্রাম খরার কবলে। জলের অভাবে এক মুঠো ধানও হয়নি। এদিকে মুঠ আনা প্রথা। ধান হয়নি বলে তো গৃহের লক্ষ্মীকে আমন্ত্রণ করা যাবে না। দ্বিধা কাটিয়ে তাই পাশের গ্রাম নিমটেকুড়ির জমির থেকে আড়াই মুঠ ধান কেটে, লাল কাপড়ে জড়িয়ে নিঃশব্দে খালি পায়ে হেঁটে লক্ষ্মীকে দত্তক নিয়ে বাড়ি ফিরলেন গ্রামবাসীরা। চাকদহ গ্রামের দামোদর মণ্ডল ১০ বিঘা জমিতে এক মুঠো ধানও হয়নি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: দিল্লি কাণ্ডের ছায়া বারুইপুরে, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর টুকরো করা দেহ মিলল পুকুরে!]

তিনি জানালেন, পাশের নিমটিকুড়ি গ্রামের বন্ধু দিলীপ মণ্ডলের জমির এক কোণ থেকে আড়াই মুঠ ধান কেটে বাড়িতে আনলাম। চাকদহ গ্রামে প্রায় তিনশো পরিবার। চাষা পাড়া, ব্রাহ্মণ পাড়া, দলুই পাড়া, অঙ্কুর পাড়া। চারটে পাড়ার বেশিরভাগের নির্ভরতা চাষের উপর। কিন্তু এবার বৃষ্টিহীন বছর। গ্রামে কোনও স্যালো নেই। জলসেচের বিকল্প ব্যবস্থা নেই। গ্রামে যে বাধ, শাল গড়ে, সায়ের আছে তার জলে গ্রামের কয়েকশো বিঘের ধানের চাষ অসম্ভব। তাই বর্ষা পেড়িয়ে গেলেও গ্রাম ঘিরে থাকা তালবোনার মাঠ, কুলুপুকুরের মাঠ, বড়ি মাঠ, সিনে মাঠ ধুধু ফাঁকা থেকেছে।

Advertisement

চাকদহ গ্রামের ধীরেন চুনারি জানালেন, কি করব, ফসল হয়নি তাই এবছর লক্ষ্মীকে দত্তক নিলাম। সদানন্দ মণ্ডল জানালেন কার্তিক সংক্রান্তিতে নিজের জমির এক কোন থেকে নিজের হাতে ধান কেটে বাড়ি এলে গৃহবধূ চাষির পা ধুইয়ে সেই ধান সযত্নে তুলে রাখেন। লক্ষ্মী হিসাবে সেই ধান পুরোহিত পুজো করেন। পরে সেই ধান পায়েস অথবা খিচুড়ি প্রসাদ করে খান চাষিরা। কৌশিক মণ্ডল জানান, ধান না হওয়ায় এবার আমাদের গ্রামের লক্ষ্মীপুজোর দিন কমেছে।

কল্পতরু সংঘের উদ্যোগে গ্রামের প্রধান পুজো লক্ষ্মীপুজো হয়। এবার কোনও আনন্দ হয়নি। পরের বছর যাতে লক্ষ্মীদেবী সদয় হন, তাই পাশের গ্রাম থেকে লক্ষ্মীকে এবার গ্রামে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখা হল। চাকদহ পঞ্চায়েত সদস্য তথা কল্পতরু সংঘের সম্পাদক নিমাই সরকার জানান, বৃষ্টি না হলে আমাদের গ্রামে চাষ হয় না। এবার লক্ষ্মীপুজোয় অর্কেস্ট্রা করা যায়নি। চারদিনের পুজো তিনদনে নমো নমো করে হয়েছে। তাই বছরের প্রথম লক্ষ্মীকে সাদরে দত্তক নিলাম আগামী বছরের জন্য।

[আরও পড়ুন: আরও জটে SLST নিয়োগ প্রক্রিয়া, শূন্যপদে চাকরিতে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়াল হাই কোর্ট]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ