নন্দন দত্ত, বীরভূম: তারাপীঠ মন্দিরে এবার ‘গুলাবি গ্যাং’! লাল পোশাকের পান্ডাদের পাশাপাশি গোলাপি পোশাকের ছড়িদার। যাঁরা পুরোহিতদের মায়ের পুজোয় সাহায্য করবেন। সেবাইতদের সঙ্গে ছড়িদারদের পার্থক্য তৈরি করতেই এবার তারাপীঠ মন্দিরে এমন রংয়ের পোশাক বিধি চালু করে দিল মন্দির কমিটি। সেবাইত কমিটির ধারণা, এর ফলে পূণ্যার্থীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করলে যেমন সেই ছড়িদারকে চিহ্নিত করা সহজ হবে, তেমনই কমবে প্রতারণার অভিযোগ।
তারাপীঠ মন্দিরে নথিভুক্ত সেবাইত রয়েছেন ২০০ জন। ছড়িদার রয়েছেন আরও ১০০ জন। সকলেই পুজো করেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ উঠছিল, কিছু দর্শনার্থীকে ভুল বুঝিয়ে মোটা টাকা নেওয়া হয়েছে। আবার কখনও কখনও যাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণেরও অভিযোগ উঠছিল। কিন্তু সকলের লাল পোশাক থাকায় সেবাইত না ছড়িদার, কারা মূলত খারাপ ব্যবহার করেছে, তা চিহ্নিত করতে অসুবিধা হচ্ছিল। কারণ, ছড়িদারদের অধিকাংশই বহিরাগত। তাছাড়া তাদের উপর খুব একটা নিয়ন্ত্রণও থাকে না সেবাইতদের। ফলে পুণ্যার্থীদের সঙ্গে অশান্তির অভিযোগ হামেশাই উঠছিল। সেই অশান্তির ঝড় সামলাতে মন্দির কমিটি এবং প্রধান সেবাইতদের নাকাল হতে হত। মন্দিরের এই সমস্যা আটকাতেই এবার তাই ছড়িদারদের ভিন্ন পোশাক বিধি চালু হল। ছড়িদারদের জন্য গোলাপি রঙের জামা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেবাইত পান্ডারা যেমন লাল রংয়ের পোশাক পরেন তেমনটাই পরবেন।
[হাসপাতালের বেডে বসেই মাধ্যমিক অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার, বেনজির ঘটনা জামালপুরে]
মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগে সবাই লাল পোশাক পরত। ফলে কোনও দর্শনার্থী প্রতারণার শিকার হলে কারা এর সঙ্গে যুক্ত তা চিহ্নিত করা যেত না। প্রতারণা এবং অশান্তি এড়াতে নির্দিষ্টভাবে তাদের চিহ্নিতকরণ করতেই এই পোশাক বিধি চালু হয়েছে। ছড়িদারদের কাজ সেবাইতদের সাহায্য করা। মায়ের ভোগের ডালা সাজানো। ভক্ত-দর্শনার্থীদের জন্য পুজোর ডালা নিয়ে আসা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তারা সেবাইত পরিচয় দিয়ে দর্শনার্থীদের ভুল বুঝিয়ে পুজো দেন। এটা রুখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ছড়িদারদের পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা হবে।” ভক্ত-দর্শনার্থীদের আশা, তারাপীঠ মন্দিরে এই ‘গুলাবি গ্যাং’ থাকায় এবার অন্তত ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।
ছবি: সুশান্ত পাল
[তৃণমূলের রাম নবমী, নৈতিক জয় দেখছে সংঘ]