Advertisement
Advertisement
Austria

গরুর পেটের ব্রহ্মাস্ত্রেই ধ্বংস হবে প্লাস্টিক! নয়া আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

পরিবেশরক্ষার ময়দানে গেমচেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে গরু।

Cattle gut microorganisms will fight plastic menace | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:July 14, 2021 2:12 pm
  • Updated:July 14, 2021 2:12 pm

গৌতম ব্রহ্ম: যাকে বলে সুপার ডাইজেস্টর! এবং তার সুবাদে পরিবেশরক্ষার ময়দানে গেমচেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে সাধারণ চারপেয়ে! গরুর (Cow) কথা হচ্ছে। আমাদের চিরপরিচিত গৃহপালিত জীবটি যে প্লাস্টিক বা ওই প্রকারের বিজাতীয় বস্তু খেয়ে হজম করে ফেলার ক্ষমতা রাখে, সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার (Austria) একদল বিজ্ঞানী সে তথ্য সামনে এনে চমকে দিয়েছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, গরুর পাকস্থলীতে মজুত অণুজীবের দল এমন কিছু উৎসেচক নিঃসরণ করে, যা কিনা ‘অক্ষয়’ প্লাস্টিককেও পচিয়ে দিতে পারে। এই তথ্য যে একশো শতাংশ সঠিক, ল্যাবরেটরিতে তার প্রমাণও দিয়েছেন বৈজ্ঞানিকরা। অস্ট্রিয়ার একাধিক কসাইখানা থেকে গরুর রুমেনে মজুত পাচকরস সংগ্রহ করে তা প্লাস্টিক নিধনে কাজে লাগিয়েছেন।

কী রকম? পরীক্ষায় তিন ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে— পোশাক ও প্যাকেজিং শিল্পে ব্যবহৃত পলি ইথিলিন টেরেপথলেট (পিইটি), পলি বুটিলিন অ্যাডিপেট টেরেপথালেট (পিবিএটি) এবং পলি ইথিলিন ফুরানোয়েট (পিইএফ)। এই তিন ধরনের প্লাস্টিকের ফিল্ম ও গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, প্লাস্টিক পাউডার ফিল্মের চেয়ে আগে ভাঙছে। এমতাবস্থায় গবেষকদের দাবি, কসাইখানা থেকে গরুর রুমেন সংগ্রহ করা সহজসাধ্য। তা থেকে পাচকরস বার করে বড় আকারেও এই প্লাস্টিক নিধন যজ্ঞ সম্পাদন করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ‘ফ্রন্টিয়ারস ইন বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি মাইক্রোবিয়াল কমিউনিটি’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই গবেষকরা পলিয়েস্টার হাইড্রোলাইসিসের দাবি পেশ করেছেন, যা পরিবেশবিজ্ঞানে বিপ্লব এনে দিতে পারে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভূগর্ভ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে গনগনে কাদার তাল! কাস্পিয়ান সাগরের নয়া আতঙ্ক Mud Volcano]

ভাবনাটি মাথায় এল কী ভাবে? গবেষকদের ব্যাখ্যা, গরুর খাদ্যে প্রচুর পরিমাণ ন্যাচারাল প্লান্ট পলিয়েস্টার থাকে। সেই বস্তুটি কীভাবে হজম হয়, তা দেখতে গিয়েই গরুর পাচনতন্ত্রে এই প্লাস্টিকখেকো অণুজীবের হদিশ মিলেছে। তাহলে প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে পর্বতপ্রমাণ দুশ্চিন্তা লাঘব হতে চলেছে? রাজ্য প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, চার কুঠুরি (প্রকোষ্ঠ) যুক্ত জাবর কাটা-রোমন্থনকারী গবাদি প্রাণীদের অন্ধকার ও রহস্যময় পাকস্থলী বরাবরই গবেষকদের কাছে আকর্ষণীয়। এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে রুমেন বায়োটেকনোলজি গবেষণাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। ‘রুমেন লিকারে’ প্রাপ্ত অণুজীবদের নিঃসৃত উৎসেচক (এনজাইম)-কে প্লাস্টিক নিকাশের কাজে লাগাতে হলে ল্যাবরেটরিতে কৃত্রিম উপায়ে ওই সমস্ত অণুজীবের চাষ করা প্রয়োজন, যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের।

Advertisement

একসময় তেলখেকো ব্যাকটিরিয়া সিউডোমনাস পুটিডা আবিষ্কার করে দুনিয়া জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী অধ্যাপক আনন্দমোহন চক্রবর্তী। তারপর আরও এক বাঙালি অধ্যাপক ডা. স্বপনকুমার ঘোষ প্লাস্টিক নিধনের ক্ষমতা আবিষ্কার করেছিলেন সিউডোমোনাস অ্যারিজনাসার মধ্যে। সেই স্বপনবাবু জানাচ্ছেন, গরুর খাবারের অন্যতম যে খড়, তার মধ্যে সেলুলোজ বা পলি স্যাকারাইড থাকে। তাকে মনো স্যাকারাইডে পরিণত করতে পারে গরুর পাচক রস। তাই রুমেনে প্লাস্টিকখেকো ছত্রাক মজুতের সম্ভাবনা স্বাভাবিক। তবে এ বিষয়ে আরও অনেক গবেষণার দরকার।

[আরও পড়ুন: ‘জীবন বদলে দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা’, মহাকাশ ভ্রমণের পর উচ্ছ্বসিত ভারতীয় নভোচর সিরিষা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ