Advertisement
Advertisement
প্লাস্টিক

প্লাস্টিক ব্যবহারই ভোগাচ্ছে শহরকে, জলমগ্ন কলকাতা দেখে তিতিবিরক্ত পরিবেশবিদরা

নিকাশিতে নির্মীয়মাণ বাড়ির ইট, স্টোন চিপস, থার্মোকলও জমাচ্ছে জল।

Increasing plastic waste responsible for a flooded Kolkata
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:August 19, 2019 4:59 pm
  • Updated:August 19, 2019 5:00 pm

স্টাফ রিপোর্টার: জমা জল সাঁতরে বেহালার সরশুনায় ঘরে সাপ ঢুকেছে। মহেশতলায় বহু বাড়িতে খাটের উপরই চলেছে রান্নাবান্না। ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, আলিপুর বডি গার্ড লাইনে ফের ভেসেছে নৌকো। জলযন্ত্রণা ফের ভাসিয়ে দিয়েছে প্লাস্টিক। গালিপিট থেকে পাম্পিং স্টেশনের নজেল, সর্বত্রই প্লাস্টিকের ছোবল। ‘প্যারালাইজড’ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা। ফি বর্ষায় জলযন্ত্রণা সহ্য করা শহরবাসীর কানে কেন জল ঢুকছে না? হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হল না এই শহরে? কেন এখনও হাটে-বাজারে সর্বত্র প্লাস্টিকের রমরমা? বিরক্ত শহরের পরিবেশবিদরা।

২০০৭ সালে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সেই মামলার রেশ ধরেই বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর তীব্র তিরস্কার করেছিলেন কলকাতা পুরসভাকে। জানিয়েছিলেন, দেশের আর কোনও মেট্রো শহরে তিনি এরকম দেখেননি। আদালতের তিরস্কার ঘুম ভাঙাতে পারেনি পুরকর্তাদের। প্লাস্টিক বন্ধে অভিযান সেভাবে হয়নি। সুভাষবাবুর পর্যবেক্ষণ, পাতলা প্লাস্টিক ব্যবহারে রাশ টানতে বাংলাই দেশকে সবার প্রথম পথ দেখিয়েছিল। সবার প্রথম প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু এখন সবার থেকে পিছিয়ে। আসলে বিজ্ঞপ্তি কার্যকর করার সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। সুভাষবাবুর সাফ কথা, তৃণমূল স্তরেই প্লাস্টিক-বধ করতে হবে। প্লাস্টিক উৎপাদনে, মজুতে, পরিবহণে লাগাম পরাতে হবে। সেটা না হলে সবটাই খাতায়-কলমে বিজ্ঞপ্তি থেকে যাবে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: প্রাকৃতিকভাবেই জল পরিশোধনে বড় ভূমিকা এই সামুদ্রিক প্রাণীটির, চলছে আরও গবেষণা ]

প্লাস্টিক নিয়ে তিতিবিরক্ত পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থার মেয়র পারিষদ তারক সিং। জানালেন, গালিপিটের মুখে প্লাস্টিক জমে থাকে বলেই রাস্তার জল নামতে এত দেরি হচ্ছে। পাম্পিং স্টেশনের মুখে প্লাস্টিক জমে বিকল হয়ে যাচ্ছে পাম্প। নিজের ওয়ার্ডেই এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তারকবাবু। তবে তিনি প্লাস্টিকের পাশাপাশি থার্মোকল, ইট, স্টোনচিপসকেও দায়ী করেছেন। জানালেন, শুধু প্লাস্টিককে ভিলেন বানিয়ে লাভ নেই। সম্প্রতি মোমিনপুরের একটি অঞ্চলের নিকাশি ব্যবস্থা পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখি ম্যানহোল খুলে কে বা কারা বস্তাভর্তি স্টোনচিপস, বালি ফেলে দিয়েছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মত, নির্মীয়মাণ বাড়ির ঢালাই-মশলা ধোয়া জল নিকাশির জন্য আরও বেশি বিপজ্জনক। এই সিমেন্ট গোলা জল নিকাশির স্থায়ী ক্ষতিসাধন করছে। এই বিষয়টি পুরসভার মাথাতেই নেই বলে আক্ষেপ পরিবেশবিদদের। যদিও অন্ধকারেও আশার ঝিলিক রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও ‘প্লাস্টিক ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। উদ্দেশ্য, ১০০ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা। থার্মোকল নিয়েও আলোচনা হয়। কারণ, এই দুই জিনিস গঙ্গার স্বাস্থ্যেরও বারোটা বাজাচ্ছে।

[ আরও পড়ুন: ঘাতক প্লাস্টিক দূষণ, প্রাণ গেল সামুদ্রিক প্রাণী ডুগং মরিয়মের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ