BREAKING NEWS

৫ আশ্বিন  ১৪৩০  শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

দিঘায় মৎস্যজীবীদের জালে এ কী! ভারতে নতুন প্রজাতির ইল মাছের অস্তিত্ব নিয়ে শোরগোল

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: May 15, 2022 4:32 pm|    Updated: May 15, 2022 4:32 pm

New variety of Eel fish caught at Digha, big surprise to the researchers | Sangbad Pratidin

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সামুদ্রিক ইল মাছের (Eel) নতুন প্রজাতি ‘রিঙ্কোকঙ্গার–স্মিথি’ আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের গবেষক। সহযোগিতা করেছেন দেশ ও বিদেশের বেশ কয়েকজন গবেষক ও বিজ্ঞানী। ভারতবর্ষে রিঙ্কোকঙ্গার প্রজাতির দু’ধরনের ইল মাছ পাওয়া যায়। সারা বিশ্বে এর সংখ্যা ৭। গবেষণার মাধ্যমে রিঙ্কোকঙ্গার প্রজাতির স্মিথি ইল মাছের আবিষ্কার হওয়ায় ভারতে এর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ এবং বিশ্বে রিঙ্কোকঙ্গার প্রজাতির সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৮। এত বড় সাফল্যে খুশি পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore)জেলাবাসী।

কাঁথির দেশপ্রাণ পেটুয়া মৎস্য বন্দরের এক মৎস্যজীবীর জালে ওঠে এক বিরল প্রজাতির ইল মাছ। মৎস্যজীবীরা সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেন সামুদ্রিক মাছ নিয়ে গবেষণারত ড. দীপাঞ্জন রায়ের সঙ্গে। তিনি বাজকুল কলেজের জুওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজারহাটের বাসিন্দা। তিনি মাছটি সংগ্রহ করে গবেষণার কাজ শুরু করেন। জানা গিয়েছে, তিনি প্রথমেই আবিষ্কার করেন, এটি বিরল প্রজাতির একটি ইল মাছ।

২০১০সাল থেকে দীপাঞ্জন বাবু সামুদ্রিক মাছ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ২০১৩ সাল থেকে শুধুমাত্র সামুদ্রিক ইল মাছ নিয়েই গবেষণা করেন। ২০১৯-২০ সালে সামুদ্রিক এক বিরল প্রজাতির ইল মাছের সন্ধান পাওয়ায় গবেষণা করার কাজে মন দেন। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার সমুদ্রেই মূলত এই ধরনের ইল বেশি পাওয়া যায় বলেই তিনি ইল মাছ নিয়ে গবেষণায় মন দেন। প্রথমিকভাবে বিরল প্রজাতির ইল বলে শনাক্ত করার পরে দিঘা মেরিন অ্যাকোরিয়ামের প্রাক্তন আধাকারিক তথা মৎস্য বিজ্ঞানী ড.অনিল মহাপাত্রের কাছে ইল মাছটিকে পাঠান। তিনিও গবেষণা করে বিরল প্রজাতির বলে সহমত পোষণ করেন।

[আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বাংলা টেলিভিশনের অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ, গড়ফায় চাঞ্চল্য]

তারপরেই মাছটির ডিএনএ (DNA) বারকোডিং করানোর প্রয়োজন পড়ে। স্মৃতিরেখা আচার্য এই মাছটির ডিএনএ বারকোডিং করেন। সহযোগিতায় ছিলেন শুভ্রেন্দু শেখর মিশ্র। পাশাপাশি তাইওয়ানের বিজ্ঞানী হসুয়ান-চিং হো’র সঙ্গে গবেষণার মাধ্যমে অবেশেষে বিরল প্রজাতির ইল মাছটির নাম দেওয়া হয় রিঙ্কোকঙ্গার-স্মিথি। রিঙ্কোকঙ্গার হল ইল মাছের প্রজাতি এবং আমেরিকার বিখ্যাত মৎস্য বিজ্ঞানী ডেভিড জি স্মিথকে সম্মান জানাতে বিরল প্রজাতির মাছের নাম দেওয়া হয় স্মিথি।

[আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য কম খরচে দক্ষিণ ভারত ঘুরিয়ে দেখাবে ভারতীয় রেল, জানুন বিশদে]

ড. দীপাঞ্জন রায় বলেন, ”২০১৩সাল থেকে ইল মাছ নিয়েই গবেষণা করছি। তবে গবেষণার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেলেও আমি কিন্তু ভালবেসেই বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ নিয়ে পর্যালোচনা করি। তাই বিভিন্ন মৎস্যজীবী বিষয়টা জানেন বলে সমুদ্রে কিছু বিরল প্রজাতির মাছ পেলেই আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। এই ইল মাছটি পেটুয়াঘাটের মৎস্যজীবীদের জাল পড়ে। বিরল বলে মনে করে তারা আমার কাছে পাঠায়। আমি মাছটি নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করায় বুঝতে পারি, আমাদের দেশে যে সামুদ্রিক ইল মাছ পাওয়া যায় তার মধ্যে এটি নয়। এটি বিরল। তাই ড.অনিল মহাপাত্রের কাছে পাঠাই। তিনিও আমার সঙ্গে সহমত হন। তারপর এটির ডিএনএ বারকোডিং করানোর জন্যে পাঠানো হয়। আমাদের পুরো টিম কাজ করে। তাইওয়ানের বিজ্ঞানী সহযোগিতা করেন। এই সাফল্য আমাদের পুরো টিমের।” দিঘায় এমন বিরল প্রজাতির ইল মাছের হদিশ মেলা এবং তাকে চিহ্নিতকরণে গবেষণার বিষয়টি একটি জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে