Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tree

গাছ ‘দম্পতি’র বিবাহবার্ষিকী! পরিবেশ সচেতনতার বার্তা দিতে অভিনব উদ্যোগ মালদহে

পাত পেড়ে খেলেন প্রচুর মানুষজন।

People celebrate anniversary of tree 'couple' in Maldah and Asansol | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 9, 2023 6:27 pm
  • Updated:May 9, 2023 6:27 pm

বাবুল হক ও শেখর চন্দ্র: ঠিক ১১ বছর আগে বিয়ে দিয়েছিলেন পাড়ার বয়স্করা। সেই থেকেই প্রতি বছর পালিত হচ্ছে বিবাহবার্ষিকী। এবার দশম বিবাহবার্ষিকী পালিত হল মহাসমারোহে। না, কোনও নারী-পুরুষের নয়, ঘটা করে বিবাহবার্ষিকী পালন করা হল গাছ ‘দম্পতি’র। মালদহ (Maldah) ইংলিশবাজার শহরের সুকান্তপল্লিতে পাশাপাশি বট ও পাকুড় গাছের বিয়ে দিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। এই দুই গাছ পাশাপাশি থাকলে বিয়ে দিতে হয় বলে বাসিন্দাদের মধ্যে একটা সংস্কার রয়েছে। সেই সংস্কার থেকেই ১১ বছর আগে বট-পাকুড়ের বিয়ে (Marriage)হয়। তারপর থেকে প্রথা মেনে ফি বছর বিবাহবার্ষিকী পালন করা হয়। সেই সঙ্গে শিব ঠাকুরের পুজো ও নরনারায়ণ সেবারও আয়োজন করা হয়।

Advertisement

শিব পুজো কমিটির সভাপতি সন্দীপ রায় বলেন, “একেবারে হিন্দু শাস্ত্র মতে এখানে বিয়ে হয়েছিল বট আর পাকুড়ের৷ পরিপাটি করে সাজানো হয়েছিল ছাদনাতলা। আমরা এখন প্রথা মেনে বট-পাকুড়ের বিবাহবার্ষিকী পালন করে আসছি। আশা রাখছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও এটা করবে।” আয়োজনের কোনও খামতি ছিল না। শুধু সুকান্তপল্লির বাসিন্দারাই নন, আশেপাশের আরও প্রায় শতাধিক পরিবার অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এদিন শুভলগ্নে বটগাছকে ‘কনে’ আর পাকুড় গাছকে ‘বর’ হিসেবে সাজানো হয়। সাজানো ছাদনাতলায় ছিলেন পুরোহিতও। সেখানে বট আর পাকুড় গাছ প্রাকৃতিকভাবেই জন্মেছিল। এলাকার প্রবীণরা সেই গাছেরই বিয়ে দিয়েছিলেন। এতে এলাকার ছেলেমেয়েদের বিপদ-আপদ দূর হয় বলে বিশ্বাস বর্তমান প্রজন্মের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধকতাকে বুড়ো আঙুল, বুদ্ধিমত্তায় আইনস্টাইনকে টপকাল অটিস্টিক বালিকা!]

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইংলিশবাজার পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুতপা মুখোপাধ্যায় এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পূজা দাস-সহ এলাকার বিশিষ্ট মানুষজন। এসেছিলেন সুকান্তপল্লির পাশের পাড়া ঝলঝলিয়ার বাসিন্দা জয়ন্ত রায়। তাঁর কথায়, “বট-পাকুড়ের বিয়ে দিলে ধর্মীয়ভাবেই একটা পুণ্য লাভ হয়। পরিবারের অমঙ্গল দূর হয়। ছেলেমেয়েদের কোনও বিপদ বা দুঃখ-কষ্ট তাঁদের জীবনে আসে না। অনেক আগে থেকে এই বিয়ের প্রথা চলে আসছে। এখানে আমরা বিবাহবার্ষিকী পালন করে আসছি।” এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদও করেছেন উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সভাপতি সন্দীপ রায় বলেন, “এটা সবাইকে বুঝতে হবে যে, বৃক্ষ আমাদের মা। কেউ কখনও মায়ের ক্ষতিসাধন করবেন না। ‘গাছ লাগাও, প্রাণ বাঁচাও’, এই মহৎ বার্তাটুকুও আমরা জনে জনে ছড়িয়ে দিতে চাইছি।”

[আরও পড়ুন: তুঙ্গে চিন-কানাডার ঠান্ডা লড়াই, বেজিংয়ের কূটনীতিককে তাড়াল ট্রুডো সরকার]

মালদহের মতো ঘটনা দেখা গেল আসানসোলেও (Asansol)। গাছের সঙ্গে গাছের বিয়ে! না, কোনও সংস্কার বা কুসংস্কারের বশে নয়। এমন কর্মকাণ্ডের পিছনে উদ্দেশ্য রয়েছে সাধু উদ্যোগ। অবাধে বৃক্ষ নিধন রুখতে বাড়ির অশ্বত্থ ও বট গাছের বিয়ে দিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্তর্গত আসানসোল পৌরনিগমের ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নারায়ণ দাস (বলাই)। উলুধ্বনি, মালাবদল, মন্ত্রোচ্চারণ-সহ হিন্দু শাস্ত্র মতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল অশ্বত্থ ও বট বৃক্ষ। শুধু এটুকুই নয়, দুই বৃক্ষের এমন শুভ পরিণয়ে পাত পড়ল পাড়াতে। চলল বালক ভোজনও।

অনাবৃষ্টিতে আরও শুকনো, খটখটে হয়ে যাচ্ছে রুখাশুখা এলাকা। তারপরেও গাছ কেটে জঙ্গল সাফ করার বিরাম নেই। তাতে সংকট বাড়ছে ধরিত্রীর, বিপদ ক্রমশ বাড়ছে সাধারণ মানুষজনের। সেই কথা উপলব্ধি করেই গাছ কাটা ঠেকাতে দুই গাছের বিয়ে দিলেন গাছপ্রেমী বলাই দাস। বলাই দাসের এমন উদ্যোগের তারিফ করেছেন সকলে। পাড়ার সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে যেটা উঠে এসেছে সেটা হল তিনি বরাবরই পাড়াতে গাছপ্রেমী মানুষ হিসাবে পরিচিত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ