সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজ শেষ। এবার বিসর্জনের পালা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের। প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার এই স্পেস স্টেশনকে ব্যবহার করে এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রগুলি। এবার তার কাজ ফুরিয়েছে। তাই প্রশান্ত মহাসাগরে বিসর্জন দেওয়া হবে তাঁকে।
ওই মহাকাশ স্টেশনে মোট ৬টি ঘর রয়েছে। এতদিন ওই স্টেশনকে ব্যবহার করেছে নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইসা), জাপান স্পেস এজেন্সি (জাক্সা), রুশ মহাকাশ সংস্থা (রসকসমস) ও কানাডার মহাকাশ সংস্থা (সিএসএ)। ১৯৮৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক এই মহাকাশ স্টেশনের ঘোষণা হয়। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগন নাসাকে মহাকাশ স্টেশন বানানোর কথা বলেন। সিদ্ধান্ত হয়, রাশিয়া, ইউরোপ (ইসা) জাপান এবং কানাডাও আমেরিকার সঙ্গে এই স্পেস স্টেশন বানানোর কাজে হাত লাগাবে। ২০০০ সালের ২ নভেম্বর ওই স্পেস স্টেশনে কয়েক মাস কাটিয়ে গবেষণা চালানোর জন্য রওনা হন ইউরি গিদজেনকো, সের্গেই ক্রিকালেভ ও বিল শেফার্ড। গবেষণার জন্য ‘ডেস্টিনি’ নামে একটি গবেষণাগার তৈরি করে আমেরিকা।
[ আরও পড়ুন: বন্ধু দেশের মহাকাশচারীদের জন্য স্পেস স্টেশন খুলে দিল নাসা ]
কিন্তু এখন ওই মহাকাশ স্টেশনকে চালু রাখার খরচ ক্রমশ মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। নাসা এর পিছনে আর খরচ করতে নারাজ। কারণ পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে থাকা এই স্পেস স্টেশনটি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত। নাসার এখন লক্ষ্য ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার দূরে লুনার স্পেস স্টেশন। আটের দশকে এই স্পেস স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বাতাসহীন প্রায় শূন্য অভিকর্ষে গবেষণা চালানো এর মূল লক্ষ্য। যদিও নাসার বক্তব্য, শুধু তারা নয়, বন্ধু দেশগুলিকেও মহাকাশের এই স্টেশন ব্যবহার করতে পারবে। তবে তা ২০২৭ সাল থেকে।
পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) সিনিয়র সায়েন্টিস্ট গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান, এই স্পেস স্টেশনটি পৃথিবীকে অনন্তকাল প্রদক্ষিণ করে যাবে। কিন্তু তাতে অন্য মহাকাশযান পাঠাতে অসুবিধা হতে পারে। এছাড়া মহাকাশে আবর্জনা বাড়তে পারে। তাই পরিত্যক্ত এই স্পেস স্টেশনটি নষ্ট করে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। সম্ভবত ২০৩০ সালের মধ্যে ধ্বংস করে দেওয়া হবে সেটি।