Advertisement
Advertisement

Breaking News

সবুজায়ন

মাটির পুতুলে সবুজের অভিযান, পরিবেশ সচেতনতায় নতুন পথ দেখাল পুরুলিয়া

ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার মাটির পুতুল তৈরি করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা।

Unique bid to save green in West Bengal's Purulia districts
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:August 7, 2019 8:29 pm
  • Updated:August 7, 2019 8:33 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মাটি দিয়ে পাখি, হাতি, ঘোড়া, পেঁপে, কলা, ডাব তৈরি হচ্ছে। আর তার মধ্যে একাধিক বীজ ঢুকিয়ে সবুজায়নের উদ্যোগ নিয়েছে স্বনির্ভর সংঘ। এর আগে এই জেলায় প্রশাসনের উদ্যোগে বীজ-কলম, বনদপ্তরের সিড বল তৈরি করা হলেও স্বনির্ভর দলের এমন সামাজিক কাজ বনমহলের জেলায় এই প্রথম।

চলতি মাসের গোড়াতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজকে সংরক্ষণ করতে ‘সবুজের অভিযান’ নামকরণে ‘সেভ গ্রিন, স্টে ক্লিন’-এর পরিকল্পনা নেন। রাজ্য সরকারের সেই পদক্ষেপের পর স্বনির্ভর দলের এই সামাজিক কাজ যেন অন্যমাত্রা নিয়ে এল এই জঙ্গলমহলে। পুরুলিয়ার মানবাজার দু’নম্বর ব্লকের বড়গড়িয়া-জামতোড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বুঁড়িবাঁধ এলাকার ‘নবীন আশার আলো সাথী মহিলা স্বনির্ভর সংঘ’ এলাকার সবুজায়নে গত চার মাস থেকে এই কাজ শুরু করেছে। শাল, সেগুন, শিশু, নিম, কাঁঠাল, জাম, পেয়ারা বীজ দিয়ে মাটির ছোট-ছোট পুতুল তৈরি করে তা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও স্কুলগুলিতে দিয়ে আসছেন এই স্বনির্ভর সংঘের মহিলারা। এই সংঘের উদ্দেশ্য একটাই যাতে খেলার ছলে শিশুদের হাত ধরেই তৈরি হয়ে যায় জঙ্গল।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: গাছ কাটা ঠেকাতে অডিট, সিদ্ধান্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ]

কীভাবে মাটির পুতুলে থাকা বীজ তৈরি করবে জঙ্গল? ওই স্বনির্ভর সংঘের মুক্তা মাহাতো, রিনা কর্মকার, রেণুকা মাহাতো বলেন, “মাটির খেলনা দেখলেই তাতে আকর্ষণ বাড়ে শিশুদের। তাই আমরা মাটির নানা অবয়ব তৈরি করে একেবারে জৈব রং দিয়ে রংবাহারি করে দিচ্ছি। ফলে তাদের চোখে সহজেই নজর কাড়ছে। সেই মাটির পুতুলগুলি নিয়ে খেলতে খেলতে তা ভেঙে গেলে সেখানে থাকা বীজ মাটিতে পড়ে গাছের জন্ম দিচ্ছে।” এভাবেই পরিবেশকে বাঁচাতে কার্যত নতু্ন প্রাণের জন্ম দিচ্ছেন ওই স্বনির্ভর সংঘের মহিলারা।

Advertisement

স্বনির্ভর সংঘের এমন সামাজিক কাজে অভিভূত মানবাজার দু’নম্বর ব্লকের বিডিও তারাশঙ্কর প্রামাণিক। তাঁর কথায়, “সবুজায়নে স্বনির্ভর সংঘের এমন ভাবনা সত্যিই তারিফযোগ্য। তাঁদের এই সামাজিক কাজে যাতে সফল হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি।” আসলে স্বনির্ভর দল বা গোষ্ঠী বা সংঘ তাদের স্বনির্ভরতায় নানান বাণিজ্যিক কাজ করে নিজের আর্থ সামাজিক অবস্থাকে উন্নত করে। যার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। কিন্তু এই পদক্ষেপ একেবারে সামাজিক। তাই প্রশাসনের এমন প্রশংসা পেয়েছে ওই স্বনির্ভর সংঘ। ওই সংঘের আওতায় থাকা বারোটি স্বনির্ভর দলের একজন করে এই কাজ করছেন। কখনও তাঁরা নিজের নিজের এলাকার গাছ তলায় আবার কখনও সংঘের কার্যালয়ে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

[ আরও পড়ুন: চাঁদমামার গল্প লিখে পাঠাতে বলল ইসরো ]

ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার মাটির পুতুল তৈরি করে তাঁরা ওই এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও বিভিন্ন স্কুলের হাতে তুলে দিয়েছেন। ওই এলাকার কেন্দাজোড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক উদয় সাহু বলেন, “স্বনির্ভর সংঘের এই কাজ পড়ুয়াদের কাছে শিক্ষারও সহায়ক। ওই মাটির খেলনা পেয়ে খুদে পড়ুয়ারা খুবই উৎসাহিত।” পুতুল গড়েই রুখাশুখা পুরুলিয়ায় অনাবৃষ্টির অভিশাপ রোখার যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন ওই স্বনির্ভর সংঘের মহিলারা।

ছবি- অমিত সিং দেও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ