দুলাল দে: বাহরিন পার্ট-ওয়ান। বাহরিন পার্ট-টু। রবিবার সকালে ব্রেকফাস্টের পর ফুটবলারদের নিয়ে কোচ স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন মিটিং রুমে ঢুকলেন। স্টাফদের বললেন, বাহরিন পার্ট-ওয়ান সিডি চালাতে। বাহরিন পার্ট ওয়ান শুনে ফুটবলাররা ধরে নিয়েছিলেন, বাহরিনের উপর কোনও মুভি হতে পারে। স্টিফেন তখন রহস্য ভেঙে বলছেন, “আজ বাহরিন দলটার পজিটিভ দিকগুলো দেখব। কাল খেলতে যাওয়ার আগে মিটিংয়ে দেখব, বাহরিনের দুর্বল জায়গাগুলো। মানে পার্ট-২।”
এই দলটার মানসিকতা স্টিফেন এমনভাবে সেট করেছেন যে, মুহূর্তের মধ্যে ফোকাস সরিয়ে নিতে পারেন ফুটবলাররা। বাহরিন ম্যাচের আগে শারজায় ইন্ডিয়া টিম হোটেলে এখন ‘আমিরশাহি’ শব্দটাই ব্যান হয়ে গিয়েছে। ওদের নিয়ে কোনও কথা নয়। সেই ম্যাচে ভারতীয় দলের পজিটিভ দিকও এখনও পর্যন্ত আলোচনায় আসছে না। পাখি পড়ার মতো এখন সবাই আউড়ে চলেছেন, ‘বাহরিন’ নামটা।
[মাঠের বাইরেই চেন্নাই বধের প্রস্ততি সারলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ]
জাতীয় দলের হয়ে গোলের রেকর্ড আগেই ভেঙেছেন। সোমবার শারজার স্টেডিয়ামে বাইচুংয়ের আরও একটা রেকর্ডের পাশে নিজের নাম লিখতে চলেছেন সুনীল। এখনও পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ১০৭টি ম্যাচ খেলেছেন বাইচুং ভুটিয়া। সোমবার বাহরিনের বিরুদ্ধে সুনীল যে মুহূর্তে মাঠে নামবেন, ভেঙে যাবে বাইচুংয়ের সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার একক রেকর্ড। এবার বাইচুংয়ের পাশে থাকবে সুনীলের নামও। সোমবারের তারিখটা আরও এক দিক থেকে উল্লেখযোগ্য। আট বছর পর ফের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। সেদিনও, ১৪ জানুয়ারি দোহা এশিয়ান কাপে বাহরিনের কাছে ২-৫ গোলে হেরেছিল ভারত। গোল করেছিলেন গৌরমাঙ্গি আর সুনীল ছেত্রী। আবার সেই বাহরিন। আবার ১৪ জানুয়ারি। কিন্তু এই আট বছরে শুধু সময়ের পার্থক্যই হয়নি, বদলে গিয়েছে ভারতীয় ফুটবলের পরিমণ্ডলও। সেদিন এশিয়ান কাপে খেলার সময় ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাহরিন অনেকটাই এগিয়ে ছিল ভারতের থেকে। আর এখন সুনীলরা এশিয়ান কাপে বাহরিনের বিরুদ্ধে খেলতে নামছেন র্যাঙ্কিংয়ে বাহরিনের থেকে এগিয়ে। সুনীল বলছিলেন, “র্যাঙ্কিং সব সময় ঠিক কথা বলে না। তাহলে আমরা আমিরশাহির বিরুদ্ধে এত ভাল খেললাম কী করে? ওরা কঠিন প্রতিপক্ষ। আমাদের লক্ষ্য, বাহরিনকে হারিয়ে নকআউটে যাওয়া। আগের ম্যাচে যা হওয়ার হয়েছে। বাহরিন একটা নতুন ম্যাচ।”
আগে আমিরশাহির মতো দলের কাছে হারার পর ভারতীয় ফুটবলারদের হতাশায় ডুবে যেতে দেখা যেত। এখন ছবি বদলে গিয়েছে। ভারতীয় হোটেলে পা দিলে মনে হবে না সোমবার বাহরিনের মতো দলের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নামছে তারা। যে ম্যাচটা না জিতলে কী হবে তা সবাই জানেন। তখন তাকিয়ে থাকতে হবে অনেক যদি-কিন্তুর উপর। ভারতীয় ফুটবলাররা অন্য কোনও দিকে তাকাতে চান না। হয় জেতো, নয়তো মর। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে সবাই হাসি খুশি। মনে হচ্ছে, সোমবার বাহরিন ম্যাচ দিয়ে এশিয়ান কাপে অভিযান শুরু ভারতের।
[ ঘোষণা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, আগামী বছর থেকে আইএসএলে নেই এটিকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.