সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবারের বিশ্বকাপকে বলা হচ্ছে অঘটনের বিশ্বকাপ, কারণ তথাকথিত বড় দলগুলি ছোট দলের সামনে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়ে যাচ্ছে। কোনও কোনও দল কষ্টে বা অতিকষ্টে জয় পেলেও, আটকে যাওয়া বা পরাজিত হওয়া দলের সংখ্যা কম নয়। বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বড় অঘটনটি ঘটিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ান জায়ান্টদের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছে জার্মানি। তবে, এই প্রথম নয়, প্রায় প্রতি বিশ্বকাপেই এমন অঘটন ঘটে থাকে। এর আগে এমন অঘটন ঘটিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াও। চলুন ইতিহাসের পাতা উলটে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপের ইতিহাসের কুখ্যাত কিছু অঘটন-
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটনগুলির মধ্যে একটি। জাপান এবং কোরিয়ায় আয়োজিত এই বিশ্বকাপে নামার আগে হট-ফেভরিট ছিল ৯৮’এর চ্যাম্পিয়নরা। জিনেদিন জিদান তখন কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ফর্মে ছিলেন, কেরিয়ারের সেরা সময় যাচ্ছিল প্যাট্রিক ভিয়েরা, থিয়েরি অঁরি-দের মতো মহাতারকার। এ হেন ফ্রান্সকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই বড়সড় ধাক্কা দেয় আফ্রিকান বিস্ময় সেনেগাল। সেবারে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় ফ্রান্সকে।
মারাদোনার ৮৬’ বিশ্বকাপজয়ী দল। তখনও দুর্দান্ত ফর্মে আর্জেন্টিনা। দলের নেতৃত্বে স্বয়ং ফুটবল রাজপুত্র। এ হেন দলকে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেতে হবে কে জানত? সেসময় ক্যামেরুনকে পাত্তাই দিতে চায়নি আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম, সেই আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দিয়ে নিজেদের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্স দেয় ক্যামেরুন। এই হার অবশ্য শাপে বর হয়েছিল আর্জেন্টিনার জন্য। কারণ এরপর আরও মরিয়া হয়ে ওঠে আলবেসেলেস্তরা। সেবারের টুর্নামেন্টে ফাইনালে উঠেছিল মারাদোনা অ্যান্ড কোং। ফাইনালে পরাস্ত হয় জার্মানির কাছে।
[ পেনাল্টি নিয়ে দু’রকম মত রেফারির, আরেকটা ‘হ্যান্ড অফ গড’ নিয়ে বিতর্ক ]
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে একমাত্র এশিয়ার দল হিসেবে সুযোগ পেয়েছিল উত্তর কোরিয়া। তাও কঠিন গ্রুপে খেলতে হয়েছিল কোরিয়ানদের। গ্রুপে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, চিলি এবং ইটালি। সোভিয়েতের কাছে হার, এবং চিলির বিরুদ্ধে ড্র করে প্রথম দু-ম্যাচে ১ পয়েন্ট পায় এশিয়ার দলটি। শেষ ম্যাচে তাদের জিততেই হত নক-আউটে যেতে হলে। সবাইকে চমকে দিয়ে ইটালির বিরুদ্ধে বিখ্যাত জয় তুলে নেয় উত্তর কোরিয়া। এবং সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের নক-আউট যাত্রা, ছিটকে যায় ইটালি।
এক ঝলক দেখে হয়তো ভাবছেন জার্মানি হাঙ্গেরিকে হারিয়েছে এতে অঘটনের কী আছে? কিন্তু সেসময়ের পরিস্থিতি বিচার করলে এই ফলকে অঘটনই বলতে হবে। বিশ্বকাপের আগে টানা পাঁচ বছর অপরাজিত ছিল হাঙ্গেরি, পুসকাসের নেতৃত্বাধীন দলটি বিশ্বকাপেও হারিয়েছিল ব্রাজিল, উরুগুয়ের মতো হেভিওয়েটদের। অন্যদিকে জার্মানরা তখনও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, এই পরিস্থিতিতে ফুটবলই তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেন জার্মান ফুটবলাররা। হাঙ্গেরিকে হারিয়ে জিতে নেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব।
মারাকানায় ব্রাজিলের লজ্জার ইতিহাস বলতে অনেকেরই মনে পড়বে গত বিশ্বকাপে জার্মানদের হাতে ৭-১ গোলে হারার স্মৃতি। কিন্তু তার আগেও মারাকানা লজ্জা দিয়েছে ব্রাজিলকে। কথা হচ্ছে ১৯৫০ বিশ্বকাপের। মারাকানায় তখন দর্শক ছিলেন প্রায় ৩ লক্ষ। ঘরের মাঠে উরুগুয়েকে পাত্তাই দিচ্ছিল না ব্রাজিল মিডিয়া। কিন্তু অঘটনটি ঘটিয়েই ফেলল উরুগুয়ে। মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে ব্রাজিলের বুক থেকে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ঘরে ফেরে তারা। ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাসে এই দিনটিকে অন্যতম কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
[ ‘স্পিড লিমিট মানতে হয়’, কলকাতা পুলিশের প্রচারে ভিলেন থেকে হিরো মেসি ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.