সোম রায়: এশিয়া হোক বা ইউরোপ। আফ্রিকা হোক বা ওশিয়ানিয়া। ব্রাজিলের স্কিল ফুটবলের ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের প্রতিটি কোণায়। সিনিয়র হোক বা বয়সভিত্তিক– সব ধরনের বিশ্বকাপেই ঈর্ষণীয় সাফল্য পেলের দেশের। পাঁচটি বিশ্বকাপ জিতে সিনিয়র বিশ্বকাপে সবার উপরে ব্রাজিল। অনূর্ধ্ব ২০ ও অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রথমটিতে ন’বার ফাইনাল খেলে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন পাঁচটিতে। প্রথম স্থানে ফুটবল সাম্রাজ্যের শত্রু দেশ আর্জেন্টিনা। সাতবার ফাইনালে উঠে তারা ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে ছ’বার। অনূর্ধ্ব ১৭ পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিল ফাইনাল খেলেছে পাঁচবার। যার মধ্যে ভিকট্রি ল্যাপ দিয়েছে তিনবার। শীর্ষে থাকা নাইজেরিয়া পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি তিনবার রানার্স।
[ যুবভারতীতে রুইজ বনাম ব্রিউস্টার, মেগা ফাইনাল ঘিরে তুঙ্গে উত্তেজনা ]
সাফল্যের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের জন্যই ব্রাজিল মাঠে নামা মানে গোটা দুনিয়ার হলুদ-সবুজ মনে চ্যাম্পিয়ন ছাড়া আর কোনও শব্দের খোঁজ পাওয়া যায় না। কিন্তু হাজার চেষ্টা করলেও যা আর সম্ভব নয় পওলিনহোদের পক্ষে। ম্যাচের আগেরদিন হাজার চেষ্টা করেও যা লোকাতে পারল না তারা। বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর মাঠেই মুষড়ে পড়েছিল ফুটবলাররা। তাদের চাঙ্গা করতে হোটেলে ফিরে সাপোর্ট স্টাফদের নিয়ে আলাদা বৈঠক করেছিলেন কোচ কার্লোস আমেদিউ। বলেছিলেন, “এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ভারতে ২৪টি দেশের সঙ্গে লড়াই করেছি আমরা। এছাড়া আরও অনেক দেশ আছে, যারা এখানে আসার সুযোগই পায়নি। তাও তো আমরা সেরা চারটি দলের অন্যতম। এটাই বা কম কী?” মালির বিরুদ্ধে নামার আগেরদিন আরও একবার বললেন সেই কথাগুলি। সঙ্গে জুড়লেন, “জীবনে ওঠা-নামা থাকে। ছেলেদের বুঝিয়েছি ফুটবলই আমাদের জীবন। তাছাড়া আমরা তো টুর্নামেন্টের শেষদিন পর্যন্ত এখানেই আছি। যে যার বাড়িতে বসে টিভিতে বিশ্বকাপ দেখছি না। এটাই যথেষ্ট।”
[ ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপকেও হার মানাতে চলেছে যুব বিশ্বকাপের খুদেরা ]
তৃতীয় স্থানাধিকারী ম্যাচকেও কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে ব্রাজিল, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তাদের প্র্যাকটিসে। প্রথম দলে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। শেষ ম্যাচে নিজেদের নামের সঙ্গে সুবিচার করে তৃতীয় স্থান দখল করাই এখন এক ও একমাত্র লক্ষ্য আমেদিউদের। আমেদিউর কথাতেই যা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে যায়। “এটা ঠিক যে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার থেকেও বড় হল ডেভলপমেন্টের কাজ ঠিকঠাকভাবে করা। আমরা সেই কাজটাই করছি। তবে এটাও ঠিক, যখনই আমরা হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নামি, গোটা দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ছেলেরা তখন দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে নামে। সেটাই করব শনিবার।” বলছিলেন ব্রাজিল কোচ।
আমেদিউর মতো একই কথা শোনালেন মালি কোচ কোমলা জোনাস। কোয়ার্টার ফাইনালে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভরিট ঘানাকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল মালি। সেমিফাইনালে অবশ্য স্পেনের বিরুদ্ধে অবশ্য আর অঘটন ঘটাতে পারেনি। তবে তাদের একটি ন্যায্য গোল সেদিন বাতিল না হলে কী হত, তা বলা মুশকিল। অতীত ভুলে ছেলেদের মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকানোর কথা বলছেন মালি কোচ। মালি ড্রেসিংরুমে ইতিমধ্যেই খবর পৌঁছেছে যে, শেষ ম্যাচে তাদের মোকাবিলা করতে হবে গ্যালারির সঙ্গেও। ফুটবলারদের সেই বার্তা দিয়ে রেখে চাপ না নেওয়ার পরামর্শ কোমলার। বলছিলেন, “আফ্রিকায় এমন হাউসফুল স্টেডিয়াম হামেশাই হয়। ছেলেরা অভ্যস্ত। সাপোর্টা পাই বা না পাই, এসবে আমাদের উপর প্রভাব পড়বে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.