Advertisement
Advertisement

‘বেলজিয়াম অন্যতম ফেভারিট, তবুও ব্রাজিলের ঐতিহ্যকেই এগিয়ে রাখছি’

ফেভারিট বনাম ট্র্যাডিশনের লড়াই।

FIFA World Cup: Brazil to face Belgium in quarter final
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 6, 2018 11:41 am
  • Updated:July 6, 2018 11:41 am

সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য কলম ধরলেন হোসে ব্যারেটো

বুঝতে পারছি না কোথা থেকে শুরু করব। সহজভাবে বললে এই বিশ্বকাপে আজ আমার দেশের অগ্নিপরীক্ষা। বেলজিয়াম কমপ্লিট একটা টিম। স্টার কোয়ালিটি হোক বা রিজার্ভ বেঞ্চ। প্রতিটা ক্ষেত্রেই বেলজিয়াম খুব ধারালো। এই ম্যাচটা অনেকটা সেই ফেভারিট বনাম ট্র্যাডিশন। একদিকে এবারের অন্যতম দাবিদার। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে যাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি সবাই একবাক্যে বলেছে, বেলজিয়াম অন্যতম ফেভারিট। উলটোদিকে আমার ব্রাজিল। বিশ্বকাপের অন্যতম ঐতিহ্যশালী দেশ। যারা এরকম পরিস্থিতিতে অনেকবার পড়েছে। সবাই যখন ধরে নিয়েছে পারবে না, তখনই কিন্তু জিতে বেরিয়ে এসেছে।

Advertisement

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বিশ্বকাপ কিন্তু বরাবর জিতে এসেছে কয়েকটা ট্র্যাডিশনাল ফুটবল দেশ। আসলে বিশ্বকাপ জেতাটা শুধু দলে ক’টা তারকা আছে তার উপর নির্ভর করে না। আলাদা নার্ভ লাগে। প্রতিটা পরিস্থিতিতে কীভাবে রিঅ্যাক্ট করতে হবে, সবার আগে সেটা জানতে হয়। জার্মানি হোক বা ব্রাজিল। ইতালি হোক বা আর্জেন্টিনা। স্পেন হোক বা ফ্রান্স। এরা জানে বিশ্বকাপের মঞ্চে কীভাবে জয় তুলে আনতে হয়। বিশেষজ্ঞরা এদেরও ফেভারিট ধরে। কিন্তু শুধু ফেভারিট শব্দটা ব্রাজিল বা জার্মানির জন্য সঠিক নয়। বরং ফেভারিটের থেকেও বেশি এরা ট্র্যাডিশন হয়ে উঠেছে বিশ্বকাপের।

Advertisement

[আজ দেশঁ বনাম তাবারেজ, সুয়ারেজ-এমবাপে দ্বৈরথের জন্য মুখিয়ে বিশ্ব]

হ্যাঁ ব্রাজিল-জার্মানিরও ট্রানজিশন আসে। কিন্তু আর একটা প্রজন্ম তৈরি হয়ে যায়। কারওর সময় লাগে। কেউ তাড়াতাড়ি সেই ফেজ কাটিয়ে ওঠে। কিন্তু দিনের শেষে যতবারই বিশ্বকাপ হোক, সবার ধারণা থাকে ট্র্যাডিশনাল দেশগুলোর মধ্যেই কেউ জিতবে। কারণ সেই পদ্ধতিটা তারা রপ্ত করে এসেছে। সেই চাপের পরিস্থিতিগুলো সামলে এসেছে। যেমন ২০০৬-এর ইতালিকে ধরুন। কেউ ভাবেইনি চ্যাম্পিয়ন হবে। ব্রাজিলও এক ধরনের ফেভারিট।

বেলজিয়াম এমন একটা দেশ যারা একইসঙ্গে সোনার প্রজন্ম পেয়ে গিয়েছে। প্রতিটা পজিশনে একটা করে মহাতারকা তুলে এনেছে। হ্যাজার্ড হোক বা ডি ব্রুইন। লুকাকু হোক বা ভার্তোঙ্গেন। সত্যি অবিশ্বাস্য যে একইসঙ্গে এতগুলো তারকা পেয়েছে বেলজিয়াম। কিন্তু দিনের দিনে কাজটা কি করতে পারবে বেলজিয়াম? ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারবে? জাপানের মতো ব্রাজিলের বিরুদ্ধে যদি শুরুতে পিছিয়ে পড়ে তা হলে কামব্যাক করতে পারবে? আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমি বলতে পারছি না, পারবে বেলজিয়াম।

তিতে কোচ হওয়ার পর ব্রাজিল দলে তিনটে জিনিস লক্ষ করছি। এক, অনেক বেশি অর্গানাইজড দল। ব্যাকলাইন যেমন কম্প্যাক্ট। আবার ফরোয়ার্ডরাও অনবরত কিছু তৈরি করার চেষ্টা করছে। দুই, পজেশনে খেলা। চার বছর আগের মতো আর ঝুঁকির পাস খেলে পজেশন নষ্ট করছে না ব্রাজিল। বরং সহজ সহজ পাস খেলছে। বিল্ড আপ প্লে-তে ধৈর্য্য ধরছে। তিন, ডিফেন্স। গত কয়েক বছরে রক্ষণ নিয়ে সমস্যায় পড়ছিল ব্রাজিল। কিন্তু তিতে এসে সেটা মেরামত করেছে। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে মাত্র ১ গোল খেয়েছে ব্রাজিল। আর তিতে জমানায় এখনও পর্যন্ত ২৫ টি ম্যাচে মাত্র ছ’টি গোল হজম করেছে দল। থিয়াগো সিলভা আর মিরান্ডা জুটির কম্বিনেশন দেখার মতো। আবার ফ্লাইং উইংব্যাকেও কত ভেরিয়েশন। মার্সেলোর মতো আক্রমণাত্মক ফুটবলার আছে। ফিলিপে লুইসের মতো মাথা ঠান্ডা রাখা ডিফেন্ডার। তাই ব্রাজিল বিপক্ষের মতো তারকাখচিত নয়। কিন্তু এই বিশ্বকাপে যেখানে গোলের পর গোল হচ্ছে, ব্রাজিল ডিফেন্সকে সেখানে বেশি আঁটসাট লেগেছে। হ্যাঁ কাসেমিরোর মতো হোল্ডিং মিডফিল্ডার না থাকাটা আজ ধাক্কা। কিন্তু মনে হয় না, এতে সমস্যা হবে।

[কার দখলে যাবে বিশ্বকাপের সোনার বল, মেসি-রোনাল্ডোর পর কে এগিয়ে দৌড়ে?]

বেলজিয়ামের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে ওরা আল্ট্রা অ্যাটাকিং খেলছে। খুব ফাস্ট। শুরুর থেকেই প্রেস করছে বিপক্ষকে। সোজা কথায় গোল করার থেকেও গোল করানোর লোক বেশি। কিন্তু বেলজিয়ানদের সমস্যা ব্যাকলাইনে। ফরোয়ার্ডে যতটা ঝাঁঝ, ডিফেন্স ততটাই নড়বড়ে। তার উপর আবার কেভিন ডে’ব্রুইনের মতো প্রতিভা এখনও জ্বলে উঠতে পারেনি। তাই বেলজিয়াম দুর্দান্ত দল হলেও এখনও পর্যন্ত হেভিওয়েট প্রতিপক্ষের মুখে পড়েনি। আর শেষ ষোলোর পারফরম্যান্স গ্রাফ পাশাপাশি রাখলে অবশ্যই ব্রাজিলকে এগিয়ে রাখব। অন্তত এক পার্সেন্ট হলেও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ