Advertisement
Advertisement
Carles Cuadrat

ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার ময়নাতদন্ত, বোরহাকে ছাড়ার পিছনে লুকিয়ে আসল রহস্য

সুপার কাপের পরে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স কেন পড়তির দিকে?

East Bengal released Borja Herera and the story of failure lies here

কার্লেস কুয়াদ্রাত। ফাইল চিত্র

Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:March 16, 2024 9:23 am
  • Updated:March 16, 2024 12:24 pm

দুলাল দে: কোথায় কে কী বলছেন জানি না। কোথায় তাঁকে নিয়ে কী ‘মিম’ তৈরি হচ্ছে, সেটাও বড় কথা নয়। বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat) সত্যিই ভাল এবং বড় কোচ।
আই এসএলের লিগ টেবিলের যে ফলাফলের জন্য, কুয়াদ্রাতকে নিয়ে বিভিন্ন বিদ্রুপ করা হচ্ছে, সেই ফলটাই যদি শেষ কথা হয়, তাহলে একই মরশুমে দুটি ট্রফির ফাইনালে। ডুরান্ডে রানার্স এবং সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন করার জন্যও কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। এসবের শেষেও বলতে হয় ফলাফলটাই শেষ কথা নয়। ক্রিকেট হলে অবশ্যই সেই নেভিল কার্ডাসের কথা বলতাম। ফলাফলের বাইরেও একজন কোচের আরও আরও অনেক কিছু থাকে। যে কারণ, তাঁকে বড় কোচ বলা হয়। যে কারণে, বিপদের সময় বারবার মোহনবাগানে ট্রফি জেতানো শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওদিন বড় কোচের তকমা পাননি। কিন্তু এটাও সত্যি, সুপার কাপে এরকম দুর্ধর্ষ পারফরমান্স করা একটা দল আইএসএলে এসে কীভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল ! এরজন্য ইস্টবেঙ্গলের উচিত, তদন্ত কমিটি গড়া। এর উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে, আইএসেলের শেষ পর্বে এসে ইস্টবেঙ্গলের এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ার আসল কারণ। 

[আরও পড়ুন: নতুন মরশুমে নতুন পরিচয়, নাম বদলাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের!]

গত তিন বছরে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলে খেলেছে, লিগ টেবিলের শেষতম স্থান এড়ানোর জন্য। এবার কুয়াদ্রাতের হাতে পড়তেই লাল-হলুদ সমর্থকরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন, হয়তো এবার। হ্যাঁ, হয়তো এবার প্রথম ছ’য়ে ঢুকলেও ঢোকা যেতে পারে। এই স্বপ্নটাও তো এমনি এমনি দেখা সম্ভব হয়নি।
গত তিন বছরের পারফরম্যান্সের পর ডর্বি জেতা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের সামনে ‘সোনার পাথরবাটি’র মতো মনে হচ্ছিল। এক মরশুমে দু’বার ! অনেকে বলবেন, সুপার কাপে মোহনবাগানের অনেক ফুটবলার ছিলেন না। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন, প্রতিটি ডার্বির আগেই পোড় খাওয়া প্রাক্তন ফুটবলাররা বলেন, ‘ডার্বিতে কে খেলছে, কে খেলছে না বড় ব্যপার নয়। আসল হল, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান খেলছে।’ দু’বার ডার্বি। সুপার কাপের মতো সর্বভারতীয় ট্রফি জয়। লাল-হলুদ সমর্থকরা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো গত তিন বছরের পারফরম্যান্সের পর সত্যিই কেউ ভেবেছিলেন, এই মরশুমে এরকমটা হতে পারে ?
আর ভাবেননি বলেই হতো সবে স্কুলে শিক্ষকতা করতে আসা ভদ্রলোককে দ্রুত আবেগে, ‘প্রফেসর’ বানিয়ে দিলেন। সমর্থকদের এই মুশকিল, কখন যে গাছের মগডালে চড়াবেন, আর কখন যে গাছে থেকে ফেলে দেবেন, বলা মুশকিল। কিন্তু সুপার কাপের পর কেন বোরহাকে (Borja Herera) ছেড়ে দেওয়া হল, শুধু এটুকু রহস্য উদ্ঘাটিত করতে পারলেই ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে ব্যর্থতার যাবতীয় কৌতূহল নিরসন হবে।
তথ্য বলছে, জানুয়ারি ৯ থেকে মার্চের ১০। এই দু’মাসে টানা ১৪টা ম্যাচ খেলতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। কোন ইস্টবেঙ্গল? না, যেই দল থেকে এবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ১ জন। সেখানে মোহনবাগানের ৮জন। তাহলেই বোঝা যাবে, কুয়াদ্রাতের হাতে কোন দল রয়েছে। তারপরেই বোরহা-হিজাজি-ক্রেসপো নিয়ে সুপার কাপের ত্রিভুজটা ভেঙে পড়তেই সব শেষ।
কেন ভেঙে ফেলা হল এই ত্রিভুজ? সুপার কাপের পর ক্রেসপো চোটের জন্য বাইরে। কিন্তু বোরহা? সবার মুখে আঙুল। কোচ সরকারি ভাবে বলছেন, একটা মাত্র গোল রয়েছে বোরহার। কোনও অ্যাসিস্ট নেই। সিভেরিও-র কোনও অ্যাসিস্টও নেই। গোলও নেই। তাই ছেড়ে দিয়েছেন। সব বুঝলাম।
কিন্তু কাদের আনলেন? ফেলিসিও, ভিক্টর আর পান্টিচ। সকলের জ্ঞাতার্থে জানাই, এই তিনজনকে পছন্দ করে আনার পিছনে এক এবং একমাত্র দায়ী কোচ কুয়াদ্রাত। এরা সফল হলে কৃতিত্ব কুয়াদ্রাতের। এরা ব্যর্থ হলেও পুরো দায় নিতে হবে ‘প্রফেসর’কে। ইস্টবেঙ্গলের অন্দরমহলে ঢুঁ মারুন, শুনতে পারবেন, কোচ কেন হঠাৎ সব কিছু ছেড়ে রোজ রেফারি, রেফারি নিয়ে চিৎকার শুরু করে দিয়েছেন। এটাও সত্যি যে, এই মরশুমে রেফারির জন্যও বহুবার ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু লিগ টেবিলে ক্রমশ নীচের দিকে চলে যাওয়ার জন্য কারণ, একমাত্র রেফারি। এটাও মানা সম্ভব নয়। দুষ্টু লোকেরা বলছেন, নিজের পছন্দ করে আনা ফুটবলারদের জঘন্য পারফরম্যান্স থেকে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই কুয়াদ্রাত রেফারি নিয়ে সবাইকে পাগল করে দিচ্ছেন। ভাবুন, একজন ফুটবলার খারাপ খেলছেন। ম্যাচ শেষে তিনি জানলেন, হারের জন্য তাঁর কোনও দোষ নেই। সব দোষ রেফারির। ব্যস, খারাপ খেলেও তিনি খুশি। কিন্তু স্ট্র্যাটেজিস্ট, ট্যাকটেশিয়ান হিসেবে কুয়াদ্রাতকে ফেলে দেওয়ার কোনও জায়গা নেই।
কোনও কোনও কোচ একটা ফিক্সড ফর্মেশনে পুরো লিগ খেলেন। কুয়াদ্রাত উল্টো মেরুর। প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ অনুযায়ী প্ল্যানিং। হাতে ভাল ফুটবলার নেই। তারপরেও সত্যিই কি এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গল খুব খারাপ খেলেছে? তাহলে সুপার কাপে পারফরম্যান্স ভাল হল কী করে? খেয়াল করে দেখুন, শুধুই ভারতীয় নন। অনেক দলে বিদেশিরাও ঠিকঠাক ছিল না। সেখানে কুয়াদ্রাতের ৬ জন বিদেশিই তৈরি ছিল। আর বোরহাকে খেলিয়েছেন, উইংয়ে। যিনি পুরো আইএসএলে চারজন বিদেশির জন্য খেলেছেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কর্নাটকের হয়ে আগুনে বোলিং আর্চারের, আউট করলেন তাঁরই দুই সতীর্থকে, ব্যাপারটা কী?]

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ