Advertisement
Advertisement

Breaking News

Argentina vs France World Cup final

‘মেসি দারুণ কিন্তু জিতবে ফ্রান্সই’, বলছেন কলকাতার ‘বাঙালি’ ফরাসিরা

ব্রাজিল ছিটকে যাওয়ায় মন খারাপ তাঁর।

France will beat Argentina in World Cup Final, says French man in Kolkata | Sangbad Pratidin
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:December 16, 2022 6:16 pm
  • Updated:December 16, 2022 6:20 pm

অণ্বেষা অধিকারী: আর পাঁচজনের মতো তিনিও ব্রাজিলেরই সমর্থক। রবিবারের ফাইনালে তাঁর হৃদয় কিন্তু ফ্রান্সের দিকেই। আর হবে নাই বা কেন! তাঁর শিকড় তো মোনালিসার দেশেই। তিনি, স্টিভন ডেভিড ডি’মন্টি। বছর ষাটেকের স্টিভন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের প্রতিনিধিকে বলছেন, ”জন্ম থেকেই আমি ব্রাজিলের সমর্থক। ব্রাজিল জিতলে বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ আনন্দ করি।”

কিন্তু এবারের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের দৌড় থেমে গিয়েছে। দুঃখিত গোটা ফুটবল-বিশ্ব। সবার মতো মনে ঝড় স্টিভনেরও। কিন্তু রবিবারের রক্তের গতি বাড়িয়ে দেওয়া ফাইনালে (World Cup Final) তিনি কিন্তু ফরাসি শিবিরের দিকেই। পার্ক সার্কাস নিবাসী ভদ্রলোক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছেন, ”ফ্রান্স অবশ্যই ফেভারিট। মেসি ভাল খেললেও ফ্রান্সকে (Argentina vs France) আটকে রাখা কঠিন। ফাইনালে কিন্তু এগিয়ে ফ্রান্সই।” ঝরঝরে বাংলায় কথাগুলো বলছিলেন তিনি।  

Advertisement

[আরও পড়ুন: রোনাল্ডোর বিদায়ে মনখারাপ, মেসির জন্য প্রার্থনা, কাতার বিমানবন্দরে বসেই ফাইনাল দেখবেন জাহানারা]

ফ্রান্স থেকে ‘সিটি অফ জয়ে’ কীভাবে এলেন? তা জানতে অবশ্য টাইমমেশিনের সাহায্য নিয়ে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েক বছর। সেই কবে ফ্রান্স ছেড়ে ভাগ্যান্বেষণে বেরিয়ে পড়েছিলেন স্টিভন ডেভিড ডি’মন্টির বাবা টেরেন্স জোসেফ ডি’ মন্টি। নানা দেশ ঘুরে ১৯৪২ সাল নাগাদ পণ্ডিচেরিতে পৌঁছন তিনি। তখন এই দেশে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন। উত্তাল দেশ। টেরেন্স জোসেফ তখন যুবা। ভারতীয় সংস্কৃতি দেখেশুনে ভাল লেগে যায় তাঁর। স্থির করেন এই দেশের মাটিতেই কাটিয়ে দেবেন জীবন। বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন এক ভারতীয় নারীর সঙ্গে। কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। আবার এই শহরেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পারিবারিক ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন স্টিভন।   

Advertisement

তাঁর মেয়ে শ্যানন সেই অর্থে ক্রীড়াপ্রেমী নন। তবে ‘ইন্ডিয়া’ ক্রিকেট খেললে টিভির সামনে বসে পড়েন কলেজপড়ুয়া তরুণী। কাতার বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) নিয়মিত দেখেননি। শ্যানন বলছিলেন, “বাবা টিভি দেখলে মাঝেসাঝে বসে দেখি। তবে ফ্রান্স ফাইনালে উঠেছে বলে আলাদা করে কোনও আনন্দ নেই। যদি কোনওদিন ভারতকে এই জায়গায় দেখি, তাহলে অবশ্যই গর্বে বুক ফুলে যাবে। ক্রিকেট বিশ্বকাপে যেমনটা হয়।” ফুটবল নিয়ে খোঁজখবর খুব একটা রাখেন না তিনি। কিন্তু ফ্রান্সের ফুটবল-গরিমা তাঁকে শ্রদ্ধাশীল করে তোলে। টানা দু’ বার কাপ জেতার সামনে ফ্রান্স। শ্যাননেরও ভোট ফ্রান্সের দিকেই। 

[আরও পড়ুন: খেলা চলাকালীন সিরাজকে কটাক্ষ লিটনের, মোক্ষম জবাব ভারতীয় পেসারের, ভিডিও ভাইরাল]

শ্যাননের বাবা স্টিভনের জন্ম শহর কলকাতায়। এখানকার স্বাদ-বর্ণ-গন্ধ বড় আপন, বড় প্রিয় স্টিভনের। তিনি বলছেন, “বাঙালিদের মধ্যে আছি বলেই জীবনটা এত সুন্দর কেটেছে। অন্য কোনও শহরে থাকলে এত আনন্দে বাঁচতে পারতাম না।” কলকাতা থেকে কাতারের দূরত্ব কত? গুগল সার্চ ইঞ্জিন জবাব দিয়ে দেবে কয়েক হাজার মাইল। কাতারের হর্ষ-বিষাদ, আনন্দ-উত্তেজনা ছুঁয়ে যাচ্ছে এই শহরকে। স্টিভনও ভাসছেন সেই আবেগের স্রোতে।

ফাইনালে কাকে এগিয়ে রাখছেন তিনি? স্টিভন বলছেন, “এমবাপে (Kylian Mbappe) ভাল খেলছে। কিন্তু অন্যদিকে মেসিও (Lionel Messi) তো জাদুকর। বেশ কয়েকটা ম্যাচে অসাধারণ খেলেছে। কিন্তু দিনের শেষে জিতবে ফ্রান্সই। ওরাই এগিয়ে।” ফ্রান্স জিতলে কীভাবে সেলিব্রেট করবেন? স্টিভন অবশ্য ফ্রান্সের জয় সেলিব্রেট করতে সেভাবে আগ্রহী নন। বলছেন, “ব্রাজিল জিতলে সকলে মিলে অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিল। তবে সামনে বড়দিন। আপাতত সেই নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। ফ্রান্সকে সমর্থন করলেও এমবাপেদের জয় নিয়ে আলাদা মাতামাতিতে আগ্রহী নই।”

ব্যবসার কাজে সারা ভারত ঘুরেছেন স্টিভন। আত্মীয়দের অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন কানাডা, ইংল্যান্ডের মতো দেশে। কিন্তু কলকাতা ছাড়তে নারাজ তিনি। বাঙালিকে বিয়ে করে কলকাতার বুকেই সংসার পেতেছেন। এই শহরের মাটিতেই মিশে যেতে চান তিনি। কলকাতা যে তাঁর প্রাণের শহর। 

[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের বিদায়ের পরই জমকালো পার্টির আয়োজন! বিতর্কে নেইমার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ