স্টাফ রিপোর্টার: সম্মান বাঁচাতে ‘ঘরের ছেলে’ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের হাতেই সুপার কাপে কোচিংয়ের দায়িত্ব তুলে দিতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। গত মরশুমে ফেডারেশন কাপে যেভাবে কোচিংয়ের দায়িত্ব সামলেছিলেন লাল-হলুদের ঘরের ছেলে, অঘটন না ঘটলে এবারও সেই ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তাঁকে। তিনি কোচ হলে একটা সমস্যার সামনে পড়তে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। গত মরশুমে ফেডারেশন কাপে সহকারী কোচ ছিলেন রঞ্জন চৌধুরি। সুপার কাপের নিয়ম অনুযায়ী চিফ কোচের ‘এ’ লাইসেন্স থাকতেই হবে। রঞ্জনের সেই ক্যাটাগরিতে পড়েন না। তাঁর ‘বি’ লাইসেন্স। তাই মনোরঞ্জনের সঙ্গে ‘এ’ লাইসেন্স থাকা কাউকে নিয়ম রক্ষার জন্য জুড়ে দেওয়া হতে পারে।
আই লিগে চার নম্বর হওয়ায় কোচ খালিদ জামিলকে নিয়ে ঘরে বাইরে চাপে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। টেকনিক্যাল-নন টেকনিক্যাল এমন একজনকেও পাওয়া যাচ্ছে না যিনি খালিদের সমর্থনে কথা বলছেন। এই অবস্থায়, কীভাবে ফের খালিদের হাতেই সুপার কাপের দায়িত্ব তুলে দেবেন কর্তারা? বৃহস্পতিবার আই লিগের শেষ ম্যাচের পর খালিদ নিজেই কর্তাদের জানান, শুক্রবার কর্তাদের সঙ্গে বসতে চান। তিনি কী বলতে চান তার ধারণা ছিল না কর্তাদের। তাই লাল-হলুদ কর্তারা ঠিক করেন, খালিদের ভবিষ্যৎ ঠিক করার আগে নিজেদের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে মিটিং করবেন খালিদের সঙ্গে। রাখার হলে রাখবেন, সম্ভব না হলে সেটাও জানিয়ে দেবেন। ঘনিষ্ঠ মহলে খালিদ বলেছেন, ব্যর্থতার কারণে তাঁকে সরিয়ে দিলে প্রতিবাদ করবেন না।
মিটিংয়ের জন্য ক্লাবে আসা নিয়ে এদিন খালিদের সঙ্গে ফোনে কথা হয় ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যর সঙ্গে ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার ও ফুটবল সচিব রাজা গুহ পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার জন্য আলোচনায় বসবেন বলে খালিদকে এদিন ডাকা হয়নি। তাঁকে ফোনে বলা হয় শনিবার সকাল ন’টায় প্র্যাকটিস। খালিদের বিদায় এবং মনোরঞ্জনের হাতে নতুন দায়িত্ব তুলে দেওয়া দ্রুত প্রক্রিয়ায় সম্ভব নয় বলে শনিবার প্র্যাকটিসের পর ফুটবলারদের ছুটি দেওয়া হতে পারে। তার মধ্যে ঠিক হবে খালিদের ভবিষ্যৎ।
শুক্রবার দেবব্রত সরকার এবং রাজা গুহের সঙ্গে মিটিংয়ে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। মিটিং শেষে বলেন, “আমি মানসিক দিক থেকে খারাপ জায়গায় আছি। আই লিগে এমন কিছু হয়নি যে আনন্দ করতে হবে।” মিটিংয়ে আপনি কী খালিদ নিয়ে কর্তাদের কিছু বললেন? “মিটিংয়ে কী আলোচনা হয়েছে তা সংবাদ মাধ্যমকে বলব না।” ক্ষুব্ধভাবে বলেন মনোরঞ্জন। তাহলে কী, শনিবার সকালে খালিদের প্র্যাকটিসে আসছেন? মনোরঞ্জন বললেন, “জানি না।”
খালিদ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মনোরঞ্জন কিছু না বললেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে সরাসরিভাবে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যতদিন খালিদ কোচ হিসাবে প্র্যাকটিস করাবে, একদিনের জন্যেও তিনি আসবেন না। স্বাভাবিকভাবেই শনিবার সকালে নিজেদের মাঠে খালিদের প্র্যাকটিসে শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার উপস্থিত থাকলেও মাঠে থাকবেন না মনোরঞ্জন। খালিদ নিয়ে সরকারিভাবে কিছু না বললেও, সংবাদ মাধ্যমের কাছে মনোরঞ্জন শুধু বলেন, “আই লিগে আমরা যা করেছি, তার থেকে ভাল ফল করতে পারতাম।”
খালিদের কোচিংয়ের প্রতি ক্লাব এবং সমর্থকদের অসন্তোষ থাকলেও এরকম নয় যে, শনিবার খালিদ অনুশীলনে আসবেন আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাতে বিচ্ছেদের চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত মনোরঞ্জনের মতামত জেনে নেওয়া হয়েছে। এবার হয়তো ক্লাবের শীর্ষকর্তাদেরও মতামত চাওয়া হবে খালিদের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, এদিন ক্লাবে এসেছিলেন খালিদ বিরোধী বলে পরিচিত ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ও। আইলিগে দলের ভরাডুবিতে ঘরের ছেলে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের হাতে সুপার কাপের জন্য সাময়িকভাবে দায়িত্ব তুলে দেওয়া ছাড়া অন্য নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.