স্টাফ রিপোর্টার: কোয়েসের সঙ্গে কাজের শিক্ষা থেকে নতুন ইনভেস্টরের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতি ইস্টবেঙ্গলের। বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসলেও এটিকের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সেলটিক, লিভারপুল সহ আরও কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে চেষ্টা করা হচ্ছে যত বেশি সম্ভব শেয়ার নিজেদের দখলে রেখে সামনে পা ফেলা যায়। ইস্টবেঙ্গল আশাবাদী, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইনভেস্টর ইস্যুতে পাকা খবর সমর্থকদের জানাতে পারবেন তাঁরা।
মোহনবাগান কর্তারা ইনভেস্টর পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে। এফএসডিএল কর্তারা চেয়েছিলেন, ইস্টবেঙ্গল যদি এটিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারে, তাহলে সব সমস্যার সমাধান। পরের মরশুমে দুটি দলকে আইএসএলে নেওয়া হবে। তাই সহজে ঢুকে পড়তে পারবে দুই প্রধান। আবার একটা শহর থেকে তিনটে দলের খেলার সম্ভাবনাও কমল।
এফএসডিএল এবং এটিকে কর্তাদের আগ্রহে আলোচনায় বসেছিল ইস্টবেঙ্গল। কয়েকবার আলোচনাও হয়। প্রথমদিকে আলোচনা নিয়ে এটিকে এবং এফএসডিএল দু’পক্ষই খুশি ছিল। এখন সেটাই ব্যাকফুটে। ইস্টবেঙ্গলের এই মুহূর্তে যা মনোভাব, তাতে এটিকের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
এটিকে সম্পর্কে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মনোভাব বিপরীতমুখী হওয়ার কারণ, কেউ চাইছেন না এটিকে নামের সঙ্গে যুক্ত হতে।
[আরও পড়ুন: শতবর্ষের চমক, ইউরোপের বিখ্যাত ক্লাবের সঙ্গে গাঁটছড়ার পথে ইস্টবেঙ্গল!]
আলোচনায় শুরুতে এটিকে চেয়েছিল জার্সিতে ইস্টবেঙ্গলের লোগোর পাশে তাদের লোগোও থাকবে। এর পাশে ক্লাবের ৮০ শতাংশ শেয়ার এটিকের হাতে থাকবে। ক্লাবের অনেকে মনে করছেন, এই ইস্যুগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনায় হয়তো একটা সমাধান বেরিয়ে আসত। কিন্তু এটিকে ব্র্যান্ডের কেউ ইস্টবেঙ্গল নামটা জড়াতে চাইছেন না। এর পিছনে কারণ হল কোয়েস। ৭০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের যেভাবে অথর্ব করে দেওয়া হয়েছিল, তারপর এটিকের সঙ্গে চুক্তি হলে ক্লাব অন্ধকারে চলে যাবে। ক্লাব চলবে ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে। পছন্দ না হওয়ায় কোয়েস থেকে মুক্তি মিললেও মনোমালিন্য হলে এটিকের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব হবে। তাই এটিকের সঙ্গে চুক্তিতে ইস্টবেঙ্গল যাচ্ছে না।
তাহলে নতুন ইনভেস্টরের কী হবে? সেলটিক যে অর্থ দিয়ে চুক্তি করতে রাজি নয়, সেটা ইস্টবেঙ্গল কর্তারা জানতেন। তারপরও আলোচনায় সেলটিকের মার্কেটিং হেড ইস্টবেঙ্গলের আর্থিক প্রস্তাবটি যেভাবে খুশি মনে নিয়েছেন, তাতে কিছুটা হলেও আশান্বিত ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। সেলটিকের বোর্ড মিটিং শেষ হলে ডাকা হবে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। সেখানে কি বলা হবে, তার জন্য প্রস্তুতি শুরু ক্লাব কর্তাদের। পাশাপাশি আরও তিন-চারটে সংস্থার সঙ্গেও কথা চলছে। ক্লাব কর্তাদের প্রাথমিক টার্গেট, নিজেদের কাছে বেশি শেয়ার রাখা। এবং সেটা হলে কেউ কোয়েসের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবে না তাই ধীরে চলো নীতি।
এ সবের মাঝে মোহনবাগানের নতুন স্পনসর ঘোষণা হলে কী করবে ইস্টবেঙ্গল? সেক্ষেত্রে সমর্থকদের থেকে চাপ তৈরি হলেও ইনভেস্টরের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবে না। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কোয়েসের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়েছিল। তেমন হলে আরও এক বছর ক্লাব আইএসএল না খেলে আই লিগেই খেলবে। ক্লাব-কর্তারা আশাবাদী, ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভাল কিছু হবে। ক্লাব কর্তাদের ধারণা, নতুন স্পনসর এলে ক্লাবের মধ্যে উদ্ভুত সমস্যা আর তেমন থাকবে না। আসলে কোয়েসের সঙ্গে ব্যবধান এখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ক্লাবের। তাই ক্লাবের শীর্ষকর্তারা চান না কোয়েসের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক রাখতে।