দেবাশিস সেন: জন্মদিনের মতো একটা স্পেশাল দিন। অথচ সারা দিন বাবা বাড়িতেই নেই। বাড়ির বাইরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ছে। কিন্তু বাবা যেন মুম্বই থেকে ফিরতেই চাইছেন না। শনিবার সকাল থেকে মেয়ে সানার মনের অবস্থাটা ছিল ঠিক এমনটাই। শেষে সন্ধেতে যখন বাবা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ি এসে হাজির, তখন অভিমানে মুখ ফুলিয়ে সানা। ডাকাডাকি করেও তাকে কেক কাটার সেলিব্রেশনে আনা যাচ্ছে না। অভিমানী মেয়ে জানিয়ে দিয়েছে, সে পড়াশোনায় ব্যস্ত। কিন্তু ভক্তদের তো আর তর সয় না। অগত্যা মেয়েকে ছাড়াই কেক কাটতে হল মহারাজকে। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেয়ে গেলেন স্ত্রী ডোনাকে। মেয়ে রাগ দেখালেও এতদিন সংসার করতে করতে ডোনা যে সৌরভের ব্যস্ততার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন, তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।
সকলের প্রিয়, সকলের কাছের দাদার জন্মদিন বলে কথা। তাই একটা কেকে কি চলে? প্রতিবারের মতো ৪৫তম জন্মদিনেও বেশ কয়েকটি কেক কাটলেন। ডোনার সঙ্গে অবশ্য একটি স্পেশাল কেক কেটে হল সেলিব্রেশন। যে কেকে টেবলের উপর পা তুলে বসে স্বয়ং দাদা। উপরে লেখা দাদাগিরি। একে অপরকে কেক খাইয়ে জন্মদিন পালন হলেও এবার আর তাঁর ফেভরিট বিরিয়ানি খাওয়া হল না। গুরুপূর্ণিমার জন্য বাড়িতে নিরামিষ রান্নাবান্না হয়েছে। তাই মেনুতে তেমন কিছু স্পেশাল থাকছে না। সৌরভ অবশ্য মজা করে বলছেন, “আর ৫ বছর হলেই তো ৫০ হয়ে যাবে। এ বয়সে আর আলাদা করে জন্মদিনের সেলিব্রেশনের কী আছে! ওসব বাচ্চাদের জন্যই ভাল।” কিন্তু মাঠ ও মাঠের বাইরে ৪৫-এও তিনি যেভাবে পারফর্ম করে চলেছেন, তাতে মুগ্ধ তাঁর ভক্তরা। নেতা হোক বা স্বামী, ব্যাটসম্যান হোক বা সঞ্চালক, জীবনের প্রতিটি ভূমিকাতেই নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছেন। তাই তো হয়ে উঠেছেন মহারাজ।
তবে মহারাজের সামনে এখন একটি বড় দায়িত্ব অপেক্ষা করেরয়েছে। টিম ইন্ডিয়ার কোচ বাছাইয়ের কাজ। সেলিব্রেশনের ফাঁকেই জানালেন, কোচ বেছে নেওয়ার বিষয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলির মতামত নেওয়া নিঃসন্দেহে জরুরি। কারণ যে কোনও দলের জন্যই কোচ-ক্যাপ্টেনের মধ্যে সম্পর্ক ভাল হওয়াটা দরকার।
এ তো গেল ক্রিকেট প্রসঙ্গ। আর ফুটবল? এটিকে কর্ণধার সৌরভ নিয়মিত আইএসএল সংক্রান্ত খবরাখবর রাখেন। তাই বললেন, ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মতো দুটি দল আইএসএল-এ খেললে তাঁর ভালই লাগবে। ক্লাবগুলি সমাধান সূত্রে পৌঁছতে পারলে ভারতীয় ফুটবলও আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। আর ফুটবল পায়ে নিজের মাঠে নামা নিয়েও দারুণ উত্তেজিত দাদা। পুজোর আগে তাঁর দলের বিরুদ্ধেই তো প্রীতি ম্যাচ খেলবেন ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা। এখন থেকেই সেই ঐতিহাসিক দিনের অপেক্ষা করে রয়েছেন তিনি। আর অপেক্ষার কথাতেই সৌরভের মনে পড়ে গেল সানার কথা। মেয়ে সারাদিন অপেক্ষা করছে বাবার জন্য। তাই এবার বাবার ভূমিকা পালনের পালা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.