দিল্লি ডেয়ারডেভিলস: ১৬০/৬ (স্যামসন-৬০)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬১/৩ (উথাপ্পা-৫৯, গম্ভীর-৭১*)
৭ উইকেটে জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্স
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনও পর্যন্ত মরশুমটা যে মনের মতো যাচ্ছে, কেকেআর প্রেমীদের উৎসাহ আর উদ্দীপনাই তা বলে দিচ্ছিল। আর হবে নাই-বা কেন। এই সেদিন বিরাট কোহলির আরসিবি-কে আক্ষরিক অর্থে মাটি ধরিয়ে দিয়েছেন গম্ভীররা। এতটাই হাস্যকর সে পরাজয় যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের ছড়াছড়ি। অনেকেই আত্মতুষ্টির ছায়া দেখে আতঙ্কের প্রহর গুণছিলেন। কিন্তু এই নাইটরা যেন অন্য ধাতুতে গড়া। বোদধয় ক্যাপ্টেনই সেভাবে তৈরি করে নিয়েছেন তাঁর দলকে। তাই স্মিথ-ধোনির পুণেকেও রেয়াত করেননি উথাপ্পারা। এই কেকেআর-কে নিয়ে যদি না ক্রিকেটপ্রেমীরা উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটবেন, তবে আর হবে কীসে। শুক্রবারের ভরদুপুরে এপ্রিলের প্রবল দাবদাহ উপেক্ষা করে তাই জনসমুদ্রের ঢেউ গড়িয়ে উপচে পড়েছিল ইডেনে। আর সব প্রত্যাশা কানায় কানায় পূর্ণ করে দিলেন উথাপ্পা-গম্ভীররা। জাহিরের দিল্লি ডেয়ারগেভিলসকে তাঁরা হারিয়ে দিলেন ৭ উইকেটে।
আসলে এই কেকেআর টিম যেন অনেকটাই আলাদা। অন্তত বিগত মরশুমের দিকে তাকালে বলতে হয় নাইটদের চরিত্রে অনেকটাই বদল আনতে পরেছেন নেতা গম্ভীর। কার কী কাজ ভালই জানেন। আর নিজের ভূমিকাটা সকলেই যথাযথভাবে পালন করতে পারেন। এটা দল যদি টিম হয়ে খেলে তবে কী হতে পারে, তারই নমুনা দেখাচ্ছে কেকেআর। ইউসুফ পাঠান থেকে কুলদীপ যাদব-প্রত্যেকেই নিজের নিজের দরকারটা পূরণ করছেন। গত ম্যাচে ধোনিকে ঠিক যেভাবে আউট করেছিলেন কুলদীপ, যেভাবে সুনীল নারিনের প্রস্থানের পর দুর্গ হয়ে উঠেছিলেন রবীন উথাপ্পা, যেভাবে স্মিথদের বিরুদ্ধে হাসিল হয়েছিল জয়, তা যে কোনও দলকেই চাঙ্গা করে তুলবে। এই ভরপুর এনার্জির কেকেআর-কে রোখা তাই সমস্যাই হয়ে দাঁড়াল দিল্লির কাছে।
এদিন অবশ্য দিল্লির সঞ্জু স্যামসন চালিয়েই খেলতে শুরু করেছিলেন। তাঁর দলের নামের সঙ্গে যোগ হয়ে থাকা ডেয়ারডেভিল শব্দটাকেই যেন মর্যাদা দিয়ে চলেছিল তাঁর ব্যাটিং। ভালই গতি পেয়েছিল দিল্লির স্কোরবোর্ড। কিন্তু তাঁকে ফিরিয়ে দেন উমেশ যাদব। ৩৮ বলে ৬০ রান করে ফিরতে হয় তাঁকে। এদিন আবার কেকেআর বোলিংয়ে হিরো বনে গেলেন কুল্টার-নাইল। তুলে নিলেন তিনটে উইকেট। ওদিকে নারিন, উমেশ নিলেন একটি করে উইকেট। দিল্লির ব্যাটিং লাইন আপে এরপর বলার মতো রান শ্রেয়াস আইআরের ৪৭। স্লগ ওভারেও দিল্লির রানরেটে কড়া রাশ টানল কেকেআর। ফলে শুরুতে ঝোড়ো গতি দেখা গিয়েছিল, সে ঝড় শেষে প্রায় ফিকে হয়ে গেল। ৬ উইকেটে ১৬০ রানেই শেষ হল দিল্লির ইনিংস।
গম্ভীরের নারিন টোটকা বেশ কয়েক ম্যাচে কাজে লেগেছিল। কিন্তু সম্ভবত তা ফিকে করার জড়িবুটি আবিষ্কার করে ফেলেছে বিপক্ষরা। এদিনও নারিন হুল ফুঁটল না দিল্লির বুকে। মোটে চার রানে তাঁকে ফিরিয়ে দেন রাবাদা। কিন্তু তারপরই মাঠে শুরু হয় গম্ভীর-উথাপ্পার সোনার যুগলবন্দি। অতীতে এই জুটি কেকেআর-কে বহু ম্যাচ জিতিয়েছে। আজও তাঁরাই টেনে নিয়ে গেলেন জয়ের দোরগোড়ায়। গত ম্যাচে উথাপ্পার ক্যাচ ফেলার খেসারত দিতে হয়েছিল পুণেকে। এদিনও হাস্যকর ভাবে তাঁর ক্যাচ মিস করল দিল্লির ফিল্ডার। স্যামসন আর অমিত মিশ্রর ভুল বোঝাবোঝিতে হাতের বল পড়ল মাটিতে, তার মূল্য তো দিতেই হবে। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস-এর সেই পুরনো ও ক্লিশে হওয়া প্রবাদটাই আরও একবার সত্যি হয়ে উঠল তাঁর ব্যাটিংয়ে। রীতিমতো খুনে মেজাজে এদিন পাওয়া গেল উথাপ্পাকে। ৫৯ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। সঙ্গী হিসেবে গম্ভীরও আগুন ঝরালেন। আর সে দাবদাহে একরকম ছাইই হয়ে গেল দিল্লির আক্রমণ। এই জয়ের পর ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার শীর্ষ স্থান ধরে রাখল কিং খানের দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.