স্টাফ রিপোর্টার: শনিবার সন্ধ্যায় ক্লাবের জরুরি সভা। যে সভায় আজ পদত্যাগীরা তুলে ধরবেন সরে দাঁড়ানোর আসল কারণ। সেই সভার দিন সকালে প্র্যাকটিসে গিয়ে ফুটবলারদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এলেন দুই পদত্যাগী শীর্ষকর্তা। সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোস ও অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত সল্টলেক সংলগ্ন মাঠে গিয়ে ফুটবলারদের জানিয়ে এলেন, তাঁরা তাঁদের পাশেই আছেন। ক্লাবের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যাই হোক, সেদিকে কারও নজর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সকলে যেন একত্রিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
[শিয়রে আইপিএল মহারণ, প্র্যাকটিসে স্বমহিমায় ধোনি]
পদত্যাগ করার পর দুই শীর্ষকর্তাকে ক্লাবের অলিন্দে দেখা যায়নি। এমনকী তাঁদের ‘সাজানো বাগানে ফুলের’ (পড়ুন ক্লাবের ফুটবলারদের) পরিচর্যা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তাও অভিমানে দেখতে আসেননি। শেষপর্যন্ত আর নিজেদের ধরে রাখতে পারলেন না। এদিন সকালে যখন সল্টলেক স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে তাঁরা দলের প্র্যাকটিসে এলেন তখন ফুটবলাররা অনেকে মাঠে নামেননি। ফুটবলার থেকে কোচ প্রত্যেকে দুই কর্তাকে দেখতে পেয়ে তাঁদের কাছে ছুটে আসেন। অভিমানের সুর তখন উভয় পক্ষের মধ্যেই স্পষ্ট। ফুটবলারদের একটাই বক্তব্য, আমরা ক্লাবের কাউকে চিনি না। আপনারা এতদিন আমাদের সঙ্গে ছিলেন। হঠাৎ কী হল যে দূরে সরে গেলেন? ভিড়ের মধ্যে থেকে এমনও শোনা যায়, আমাদের কি কোনও দোষ ধরা পড়েছে? অভিমান পর্ব মিটিয়ে দুই শীর্ষকর্তা ঢুকে পড়েন মাঠের মধ্যে। ফুটবলারদের ডেকে নিয়ে প্রথমে বক্তব্য রাখেন সৃঞ্জয় বোস। পরে দেবাশিস দত্ত। দু’জনের সুর ছিল একই, ‘তোমরা নিজেদের ফোকাস ধরে রাখ। যেভাবেই হোক সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া চাই। ক্লাবের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে তোমরা ভেব না। সমস্যা থাকবে না আর্থিক দিকেরও। সব তোমরা পেয়ে যাবে। শুধু মন দিয়ে খেলে যাও।’ পরে আই লিগে দলের দুই শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার পাওয়া গোলকিপার শিল্টন পাল ও সর্বোচ্চ গোলদাতা ডিকার হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকা করে। সেই সঙ্গে একটা কেক।
[শামিকে কাঠগড়ায় তুলে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হাসিনের, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?]
এদিন ছিল প্র্যাকটিস ম্যাচ। বরানগরের একটা ক্লাবকে ৬-১ গোলে হারায় মোহনবাগান। ৩০ মিনিট করে তিনটে অর্ধে খেলে সবুজ–মেরুন জার্সিধারীরা। প্রতি অর্ধেই গোল হয়। ডিকা, আক্রম, ওয়াটসন, মননদীপ, সুরচন্দ্র ও নিখিল কদম গোল করেন। যদিও ওয়াটসন ও নিখিল পেনাল্টি থেকে গোল করেন। প্র্যাকটিসের মাঝে আবার হঠাৎ হাজির হন ক্লাবের অন্যতম ডিরেক্টর সোহিনি মিত্র। দু’দিন আগে ক্লাবের প্র্যাকটিসে হাজির হয়ে সচিব অঞ্জন মিত্র জানিয়ে ছিলেন, শনিবার প্র্যাকটিস ম্যাচ দেখতে আসবেন। এদিন অবশ্য তিনি এলেন না। তাহলে কি পরিবর্ত হিসেবে মাঠে এলেন তাঁর মেয়ে? যদিও সৌজন্যতা প্রকাশ করে সহ-সচিব এগিয়ে গিয়ে সোহিনীকে চেয়ারে বসতে বলেন। ফুটবল সচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে বসতে দেখা যায় সোহিনিকে। তিনি প্র্যাকটিসের শেষ দিকে বেরিয়ে যান। ততক্ষণে অবশ্য বেরিয়ে গিয়েছেন দুই শীর্ষকর্তাও। তবে এদিনের প্র্যাকটিসের পর প্রশ্ন উঠে গেল, তাহলে কি আর শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ধরে যাওয়া ফাটল কোনওদিন বন্ধ হবে না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা বললেন, “বিকেলে সভা হবে তো?”