সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যাট হাতে যখন তিনি ক্যাঙারুদের আগ্রাসন রুখে দিচ্ছিলেন, তখন অনেকের স্মৃতিতেই ফিরে এসেছিলেন কপিল দেব। ঠিক সেই একই চোয়াল চাপা জেদ। ময়দান না ছাড়ার লড়াই। এবং অবশেষে জয় ছিনিয়ে নেওয়া। কিন্তু লড়াই কি শুধু এটুকুই? হরমনপ্রীত কৌর নিজে বোধহয় জানতেন, জবাব দেওয়ার মঞ্চ ইতিহাস একবারই সাজিয়ে দেয়। আর জ্বলে উঠতে হয় সেখানেই।
[ ইনিও ‘ক্যাপ্টেন কুল’! বই হাতে ফাইনালে লড়তে হাজির মিতালি ]
কীসের জবাব? তাহলে ফিরে যেতে হবে বেশ কয়েকবছর আগে। তখন নিয়মিত ভারতীয় দলে খেলছেন তিনি। চাকরির খুব দরকার। নয়তো খেলা চালানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। যোগাযোগ করা হয় পাঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে। হরমনপ্রীতের পরিবারের সদস্যরা আজও সেদিনের কথা ভুলতে পারেননি। চাকরি চাইতে গেলে পুলিশের এক আধিকারিক তাঁদের জানিয়েছিলেন, মেয়ে হরভজন সিং নয় যে তাঁকে ডিএসপি-র পদে চাকরি দিতে হবে। চাকরির আবেদন নাকচই করা হয়েছিল। এমনকী ইনস্পেক্টরের পদও দেওয়া হয়নি তাঁকে। সে সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেশ তা সম্ভব হয়নি।
[ জানেন, ফাইনালের আগে মিতালিদের কী বললেন বিরাটরা? ]
এ পরিস্থিতিতে উদ্ধারকর্তা হয়ে আসেন শচীন তেণ্ডুলকর। সাংসদ থাকাকালীন তাঁর সুপারিশেই পশ্চিম রেলওয়েতে চাকরি পেয়েছিলেন হরমনপ্রীত। তারপর অবস্থা বদলেছে। তবে পুরনো দিনের কথা বোধহয় ভোলেননি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের শেহবাগ। হ্যাঁ, শেহবাগই তাঁর আদর্শ। তাঁর মতোই মারকুটে ব্যাটিং করতে ভালবাসেন। খুব বেশি সুযোগ পাননি। কিন্তু যেদিন পেয়েছেন সেদিন জানিয়ে দিয়েছেন, পাঞ্জাব পুলিশের স্বীকৃতি নয়, তাঁর জায়গা ভারতীয় ক্রিকেটের সোনার জলে লেখা ইতিহাসে। আজ তাঁর সাফল্যের জয়গান চারিদিকে। কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা জানাচ্ছেন, বিশ্বকাপে এমন তৃপ্তিদায়ক ইনিংস বহুদিন দেখা দেয়নি। প্রশংসার টুইট এখনও ভেসে আসছে। আর এত সবের মধ্যে কোথায় পাঞ্জাব পুলিশের সেই আধিকারিক? নাহ, আপাতত তাঁর টিকির নাগালও মিলছে না। আর এসব ছাপিয়ে ইতিহাসের নয়া মাইলফলকের দিকেই যাত্রা শুরু করে দিয়েছেন হরমনপ্রীত কৌর।