স্টাফ রিপোর্টার: ইস্তফা দেওয়ার পর বুধবার দিনটা কাটল আর পাঁচটি দিনের মতোই। তবে এখনও কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সঞ্জয় সেন। অন্তত বৃহস্পতিবারও বাগান ক্লাব প্রাঙ্গনে ঢুঁ মেরে সেই চিত্রটাই চোখে পড়ল। চেন্নাই সিটির কাছে হারার পর মোহনবাগান কোচের পদ থেকে সরেছেন। প্রায় চার বছরের সম্পর্ক তিলে তিলে গড়ে তুলে ছিলেন। অফিস থেকে পাড়া, সকলেই তাঁর অনুরক্ত। লাল-হলুদের সমর্থক হলেও ডার্বিতে তাঁর অনুগামীরা গলা ফাটাতেন সবুজ-মেরুনের হয়ে। তবে এখন সেসব অতীত। আপাতত ফের একবার দশটা-পাঁচটা অফিস ডিউটিতেই দিন কাটাতে শুরু করেছেন আই লিগ জয়ী কোচ। তবে মনের মধ্য কোথাও যেন একটু খচখচানি আছে। আর তার পাশাপাশি রয়েছে আক্ষেপ। শুনতে অবাক লাগলেও প্রাক্তন বাগান কোচের মতে, মোহনবাগান মাঠে খেলাটাই তাঁদের কাল হয়েছে। এই মাঠে না খেললে রেজাল্ট খারাপ হত না। আর সঞ্জয়ের এই কথার পরেই শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক।
সঞ্জয় স্বীকার করছেন, মোহনবাগান মাঠে আই লিগের খেলা টেনে আনাই কাল হয়েছে। “বারাসতে খেলার পর চোট পেল চার ফুটবলার। তখন ক্লাব কর্তারা আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, নিজেদের মাঠে খেলা হলে কেমন হয়। আমিও ভেবেছিলাম, যে মাঠে প্র্যাকটিস করি সেখানে খেললে ভালই। ভাবিনি নিজেদের মাঠে খেলতে গিয়ে এভাবে ডুবব। মোহনবাগান মাঠে না খেলে অন্য কোথাও খেললে রেজাল্ট এত খারাপ হত না।” কিন্তু শেষ দু’টো ম্যাচে মোহনবাগানের এই হাল হল কেন? সঞ্জয়ের ব্যখ্যা, “সেটা আমিও বুঝতে পারছি না। মাঠই যদি কারণ হয় তা হলে পরপর দু’দিন প্রতিপক্ষ দশজন ফুটবলার নিয়ে কী করে এত ভাল খেলে গেল? আমার প্লেয়াররা দু’দিনই কীভাবে দাঁড়িয়ে পড়ল এখনও বুঝতে পারছি না।”
স্বভাবতই মনের কোণে দুঃখ, যন্ত্রণা রয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেসব মনে রাখতে চাননা তিনি। ঘনিষ্ঠ মহলে সঞ্জয় সেন জানিয়েছেন, মোহনবাগান কর্তাদের প্রতি তাঁর রাগ নেই। তিনি এমনও বলেছেন, “ফুটবলের শেষ কথা গোল। আমরা সেই গোল করতে ব্যর্থ। তাহলে দল জিতবে কী করে? বিদেশিদের ওপর খুব নির্ভর করেছিলাম। সোনি চোট পেল। বাকিরা ওর জায়গা ভরাট করতে পারল না।” সঞ্জয়ের সাফ স্বীকারোক্তি, “বিশ্বাস করুন ক্লাবকর্তাদের ওপর আমার রাগ নেই। আবার মোহনবাগান অফার দিলে নিশ্চয় যাব। আমি পেশাদার কোচ। মোহনবাগান কেন, ইস্টবেঙ্গল থেকেও অফার এলে নিশ্চয় যাব। তবে একটা জায়গায় আমি খুব অবাক। বিশেষ করে প্রথম ছ’টা ম্যাচে দল যখন হারেনি। ড্র করে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও হারিয়ে যাইনি। তখন কেন গো ব্যাক ধ্বনি শুনতে হবে? চার বছরে আমার কী ক্লাবে কোনও অবদান নেই? সমর্থকদের মনে আমার জায়গা এত ঠুনকো? বিশ্বাস করুন এই জায়গায় অঙ্কটা মেলাতে পারছি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.