Advertisement
Advertisement

সাউদাম্পটন টেস্ট জিততে ৮০ থেকে ১০০ রানের লিড নিতে হবে বিরাটদের

প্রথম ইনিংসে বাড়তি ৫০ রান দেওয়াই কি কাল হল বিরাটদের?

Team India to take lead of 80 to 100 runs to win Southampton Test
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:August 31, 2018 9:22 am
  • Updated:August 31, 2018 12:17 pm  

ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ২৪৬ (কুরান ৭৮, বুমরা ৩/৪৬)

ভারত প্রথম ইনিংস- ১৯/০

Advertisement

প্রথম দিনের খেলা শেষে

দীপ দাশগুপ্ত: সাউদাম্পটন টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে স্টিভ হার্মিসনকে বলতে শুনলাম যে, বিরাট কোহলি যদি পনেরো ওভার খেলে দেয়, তা হলে ইংল্যান্ডের পক্ষে ম্যাচ জেতা কঠিন হয়ে যাবে। বিরাটের উপর চতুর্থ টেস্ট তো বটেই। সিরিজের ভাগ্যও নাকি নির্ভর করছে। ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় কাজ হবে বিরাট কোহলিকে ফেরানো।

কথাটা অর্ধসত্য। মানছি, বিরাটের উপর অনেকটাই সাউদাম্পটন টেস্টের ভাগ্য নির্ভর করে থাকবে। কিন্তু শুধু তো বিরাট নয়। আড়াইশো রান তোলার জন্যও যদি আমাদের বিরাটের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক কিছু আর হয় কি? প্রাক্তন ইংল্যান্ড পেসার হার্মিসনকে একটা কথা জিজ্ঞেস করার আছে আমার। কেএল রাহুল আর শিখর ধাওয়ানও যদি পনেরো ওভার দাঁড়িয়ে যায়, ইংল্যান্ড পারবে কি?
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে তোলা ২৪৬ রানের জবাবে ভারত দিনের শেষে ১৯-০। ম্যাচ এখনও পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। শুক্রবার সকালের প্রথম দু’ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। ভারতকে যদি সাউদাম্পটন টেস্ট জিততে হয়, যদি সিরিজ ২-২ করে ফেলতে হয়, অন্তত আশি থেকে একশো রানের লিড নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, রোজ বোল পিচে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করবে ভারত। ইংল্যান্ড নয়। আর প্রথম দিনেই যে রাফগুলো তৈরি হয়েছে পিচে, দেখেছেন? ইশান্ত শর্মার ১৬ ওভারের বোলিংয়েই ওই রাফগুলো তৈরি হয়েছে। ফোর্থ ইনিংসের সময় ওই রাফের অবস্থা কী দাঁড়াবে, ভাবতে পারছেন?

[সাউদাম্পটনে সমতা ফেরানোর লড়াই ভারতের, দুই স্পিনার খেলানোর ভাবনা বিরাটের]

আসলে চিন্তা একজনই। মইন আলি। চার বছর আগে, ভারতের শেষ ইংল্যান্ড সফরে মইন আলি এই সাউদাম্পটনেই ছ’উইকেট নিয়ে এমএস ধোনিদের শেষ করে দিয়েছিল। এ বারও যদি রাফকে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারে অফ স্পিনার মইন, ঠিকঠাক লাইন-লেংথে বল করে, ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতেই পারে। যে কারণে বললাম, ভারতের ফার্স্ট ইনিংসের রানটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তা ছাড়া এই ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপে খুব বেশি বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান নেই। অধিকাংশ ডান হাতি। যাদের ক্ষেত্রে মইনের বল চকিতে ভেতরে আসবে। আমার মতে, ভারত পঞ্চাশটা রান বেশি দিয়ে ফেলেছে। এখানে বলে রাখি, টস জিতে জো রুটকে ব্যাটিং নিতে দেখে অনেকে হয়তো চমকে গিয়েছিলেন। স্কোরবোর্ড দেখে বলাবলিও শুরু হয়েছিল যে, রুট কী করে এত ভুল করে বসলেন? ৪০ রান তুলতে না তুলতে ইংল্যান্ডের তো চারটে উইকেট বেরিয়ে গিয়েছিল। তা-ও বলব, রুট কিন্তু ঠিকই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। একজন ক্যাপ্টেনকে টসের সময় শুধুমাত্র সেদিনকার ভাগ্য ভাবলে চলে না। তাকে গোটা ম্যাচ ভিস্যুয়ালাইজ করতে হয়। রুট বুঝেছিল যে, টেস্টের প্রথম দিন বল নড়বে। মুভ করবে। কিন্তু সেটা সামলাতে হবে। সামলে দিতে পারলে, লাভ হবে ইংল্যান্ডের। ভারতের নয়। চতুর্থ ইনিংস এই পিচে ইংল্যান্ড খেলবে না।

ইংল্যান্ড ব্যাটিং প্রথম দিকে যে ঠকঠক করে কাঁপছিল, তার দু’টো কারণ। প্রথমত, ইংল্যান্ডের পরিবেশ। ইংল্যান্ডে যে মাঠেই খেলা হোক না কেন, প্রথম এক-দেড় ঘণ্টা বল মুভ করবেই। ইংল্যান্ড সামলেও দিত হয়তো। পারেনি, কারণ ভারতীয় বোলিং। আর এটাই দ্বিতীয় কারণ। চার বছর আগের ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় বোলিং লাইন আপের সঙ্গে এ বারের ভারতীয় বোলিংয়ের আকাশ-পাতাল তফাত। সেবারও ইশান্ত শর্মা ছিল টিমে। কিন্তু এ বারের মতো ছিল কি? গত এক বছরে ইশান্তের বোলিংয়ে প্রচুর পরিবর্তন হয়েছে। আগে লেংথটা পিছনে ছিল। এখন অনেক ফুল লেংথে রাখে। ফুল লেংথ মানে বল বেশিক্ষণ হাওয়ায় থাকছে। আর ইংল্যান্ডে বল যতক্ষণ বেশি হাওয়ায় থাকবে, তত বেশি সুইং পাওয়ার সম্ভাবনা। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুইং পাচ্ছে ইশান্ত। প্লাস, ওর রিস্ট পজিশন এখন সোজা থাকছে। আগে যা থাকত না। তবে মাত্র একজন বোলারের পাল্টে যাওয়ায় একটা বোলিং ইউনিট তো পালটে যায় না। সবাইকে উন্নতি করতে হয়। মহম্মদ সামি আগে তিনটে স্পেল করলে দু’টো গড়পড়তার চেয়ে খারাপ করত। একটা ভাল করত। এখন সামি তিনটে স্পেল করলে দু’টো ব্রিলিয়ান্ট করছে। একটা গড়পড়তা। তবে ভারতীয় বোলিংকে দুর্ধর্ষ দেখাচ্ছে একজনের অর্ন্তভুক্তিতে। জসপ্রীত বুমরা। পাঁচটা টেস্ট খেলেছে এখনও পর্যন্ত বুমরা। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যেন পঞ্চাশটা খেলে ফেলেছে! আগে বুমরা শুধু ভেতরে বল আনত। এখন বাইরেও বার করছে।

কিন্তু তারপরেও বলব, বাড়তি পঞ্চাশ রান দিয়েছে ভারতীয় বোলিং। স্যাম কুরান আর স্টুয়ার্ট ব্রড মিলে এক সময় ১০ ওভারে ৭০ তুলেছে। ৭০! ভারতীয় বোলাররা এ দিন ২৩ রান বাই দিয়েছে। জানি, মাত্র দু’টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উইকেটকিপার ঋষভ পন্থকে গালাগাল করাটা সহজ। কিন্তু ২৩ রানের মধ্যে ৯ রান ঋষভের জন্য হয়েছে। বাকি ১৬ রানের জন্য কিন্তু বোলাররা দায়ী। বিরাট তখন খেলাটাকে একটু স্লো করে দিতে পারত। তাতে বড়জোর ম্যাচ ফি যেত হয়তো। কিন্তু ইংল্যান্ডের রান তোলার ছন্দপতন হত। যাক গে। সে সব নিয়ে ভেবে এখন আর লাভ নেই। ওই অতিরিক্ত পঞ্চাশ রান এখন তুলতে হবে ভারতকে। শ’খানেক রানের লিড নিতে হবে। তারপর? তারপর, দেখা যাক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement