দেবাশিস সেন, গল: সিরিজের প্রথম টেস্ট জয় এবং একই সঙ্গে ১৭তম সেঞ্চুরি। গলে একই দিনে দু’টি উপহার পেয়েছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। আর ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ভূয়সী প্রশংসা করলেন দলের খেলোয়াড়দের। তবে অধিনায়কের মুখে সবথেকে বেশি শোনা গেল দলের অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ডিয়ার কথাই। হার্দিকের সঙ্গে তুলনা করেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকসেরও। শুধু তাই নয়, উঠে এল দু’বছর আগের টেস্ট ম্যাচের প্রসঙ্গও। পাশাপাশি জানালেন, দলের খেলাতে তিনি খুশি। তবে আগামীদিনে তাঁদের আরও উন্নতি করতে হবে।
শনিবার গল টেস্টের চতুর্থ দিনে ৫৫০ রানের সুবিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ২৪৫ রানেই গুটিয়ে যায়। ৩০৪ রানে জয় পায় টিম ইন্ডিয়া। এরপরেই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে দলের খেলোয়াড়দের প্রসঙ্গে বিরাট বলেন, ‘আমাদের এখনও কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আগামী ম্যাচগুলিতে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম। এরপর থেকে কেবল ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলেছি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে দলের খেলায় আমি যথেষ্ট খুশি।’ পিচ প্রসঙ্গে বিরাট জানান, গতবারের তুলনায় এবারের পিচ একটু বেশিই ব্যাটিং সহায়ক ছিল। গতবার স্পিনাররাও বেশি সাহায্য পেয়েছিল। কিন্তু এবার চতুর্থ দিনেও ব্যাটসম্যানরা ভালভাবেই ব্যাট করতে পারছিলেন।
পাণ্ডিয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিরাট তাঁর সঙ্গে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের তুলনা করেন। বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে বেশি বোলিং করার সুযোগ পায়নি হার্দিক। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ও দুর্দান্ত বোলিং করেছে। এছাড়া প্রথম ইনিংসে ওর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের দৌলতেই আমরা ৬০০ রান করতে পেরেছিলাম। আমার মতে, আগামীদিনে হার্দিক দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে। বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই হার্দিক দুর্দান্ত। ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটেই ও প্রথম একাদশে থাকতে পারে। একটা কথা পরিস্কার জানিয়ে দিতে চাই, হার্দিকের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। নিজেকে মেলে ধরতে পারলে হার্দিক অনেকদূর যাবে। ইংল্যান্ডের হয়ে বেন স্টোকস যে ভূমিকা নেয়, আমাদের হয়ে হার্দিকও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আমি অন্তত তেমনটা না হওয়ার কোনও কারণ দেখছি না।’ এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে শতরান পেয়েছেন বিরাট। সাংবাদিক সম্মেলনে সে বিষয়ে বিরাট জানান, ‘দলের জন্য রান করতে পেরে ভাল লাগছে। বিশেষ করে যেখানে আমার দল জিতেছে।’
দেখে নিন ভিডি:
টেস্টে জয় তো এসেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে ম্যাচ শেষে বিরাটের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে রয়ে গিয়েছে খচখচানি। ম্যাচের পরেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এই রকম নখ-দন্তহীন শ্রীলঙ্কান দলকে বাগে পেয়েও কেন ফলো-অন করালেন না বিরাট কোহলি। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৯১ রানে। অর্থাৎ বিরাটরা লিড পেয়েছিল ৩০৯ রানের। তবুও তাঁদের দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে পাঠাননি বিরাট। উলটে ব্যাট করতে নামে ভারতীয় দল। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত বিরাটের? বিশেষজ্ঞ মহলের ধারনা, ভারত অধিনায়কের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে না পারার জন্যই দ্বিতীয় বার ব্যাট করতে নামে টিম ইন্ডিয়া। এর আগেও এমনটা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। এছাড়া ভেসে আসছে আরও একটি জল্পনা। কেউ কেউ বলছেন, অফ ফর্মে থাকা বিরাট নিজে যাতে ব্যাট করার সুযোগ পান, সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, গল টেস্টের চতুর্থ দিনেই বিরাট শতরান করেছেন। তারপরই নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার দেয় ভারত। ২০১৪ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির থেকে নেতৃত্ব নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। তারপর থেকে সাতবার বিপক্ষকে ফলো-অন খাওয়ানোর সুযোগ এসেছিল। যার মধ্যে পাঁচবারই সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তিনি। যদিও এই সমালোচনাকে দূরে ঠেলে জয় নিয়েই ভাবতে চাইছেন বিরাটরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.