সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল, জঙ্গল, পাহাড় – এমন সৌন্দর্য মানুষকে মুক্তি দেবে না তো কে মুক্তি দেবে? প্রকৃতির কোলে মুক্তির আস্বাদ যেন নতুন করে বেঁচে থাকার রসদ জোগায়৷ কিন্তু এই মুক্তি তো হয় ক্ষণিকের মুক্তি৷ প্রবল কাজের চাপ এবং শহরের একঘেয়ে জীবন থেকে কিছুক্ষণ দূরে থাকার অজুহাত মাত্র৷ কিন্তু এমন জঙ্গল এবং প্রকৃতির কাছে যাওয়া কি সহজ যা আপনাকে চিরকালের জন্য ইহলোক থেকে মুক্ত করবে? যে জঙ্গলে গেলে আর ফিরে আসা যায় না, এমন জঙ্গল কি কখনও ঘুরতে যাওয়ার পক্ষে আদর্শ মনে হবে আপনার?
এমনই এক জঙ্গল হল জাপানের আহকিগোহরা৷ ঘন এই জঙ্গলের পথ ধরেই মাউন্ট ফুজির দিকে যেতে হয়৷ লাভা শিলায় সমৃদ্ধ এই জঙ্গল পৃথিবীর অন্যতম সুইসাইড স্পটগুলির একটি৷ ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই অঞ্চলটিতে প্রতি বছর নাকি ১০০-র বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন৷ কিন্তু কেন এখানে মানুষ আসেন আর ফিরে যান না তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই৷ বছরের নানা সময়ে সেখান থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহ৷ অনেক সময় মৃতরা সেখানে আত্মহত্যা করেছে কি না তাও বোঝা সম্ভব হয় না৷ কেবল নিথর দেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ৷
এই জঙ্গলে এমন ভয়াবহ আত্মহত্যা রুখতে বহু চেষ্টা চালানো হয়েছিল জাপান প্রশাসনের পক্ষ থেকে৷ জঙ্গলে প্রবেশ করতে নিষেধ করা থেকে শুরু করে, আত্মহনন যে মোটেই কাজের কথা নয়, সেই বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল৷ কিন্তু তারপরেও মৃত্যুমিছিল জারি রয়ে গিয়েছে এই জঙ্গলে৷ প্রাণপিপাসু এই জঙ্গল এখনও কয়েকশো মানুষের প্রাণ নেয় নির্দ্বিধায়৷ জঙ্গলে যাঁরা যায়, তাঁদের ফিরে আসার আশা প্রায় শেষ হয়ে যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই৷
কেবল আত্মহননের জন্যই এই জঙ্গলে মৃত্যু মিছিল চলে, তেমনটা নয়৷ অনেক সময় ট্রেকিং করতে এসেও বহু মানুষের প্রাণ যায় এই জঙ্গলে৷ বলা হয়, এই মৃত মানুষের আত্মারাই নাকি রয়ে যান এই জঙ্গলে এবং পরবর্তী পর্যটকদের জীবনের দায় থেকে মুক্ত হতে বাধ্য করে৷
এক কথায়, এই জঙ্গলে মানুষ অকারণ আত্মহত্যা করে, এই কথা মেনে নিতে নারাজ সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তাঁদের দাবি, সেখানে এমন কোনও অচেনা শক্তি রয়েছে যা এক এক করে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে৷