Advertisement
Advertisement

Breaking News

বন্যা ‘ম্যানমেড’, ডিভিসির বিরুদ্ধে মামলার হুমকি মুখ্যমন্ত্রীর

প্লাবিত এলাকায় রাজ্যের পক্ষ থেকে ত্রাণশিবির করা হয়েছে৷ খাদ্যও দেওয়া হচ্ছে৷ জেলা প্রশাসনকেও সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

CM will complaint against DVC for the ‘Man Made Flood’
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 24, 2016 9:13 am
  • Updated:June 22, 2022 5:04 pm

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বৃষ্টি কমলেও ডিভিসি জল ছাড়ায় এবার অন্তত চারটি জেলা প্লাবিত হয়েছে৷ আরও জল ছাড়া হলে বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে৷ এই জল ছাড়া নিয়েই আবারও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত দেখা দিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় জল কমিশন ও ডিভিসি-কে কড়া বার্তা দিয়েছেন৷ তিনি রাজ্যের, মূলত দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ডিভিসি-কেই দায়ী করেছেন৷ ‘ম্যানমেড বন্যা’র অভিযোগ তুলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় তিনি বলেন, “ডিভিসি তাদের ইচ্ছামতো জল ছেড়ে দিচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় জল কমিশনকে না জানিয়েই এমন করছে, আমাদের জিজ্ঞাসা পর্যন্ত করে না৷ বৃষ্টির জলে বন্যা হলে আমি বুঝি৷ কিন্তু জল ছেড়ে দিয়ে বন্যা হলে সেটা তো ‘ম্যানমেড’ বন্যা৷ রাজ্যকে না জানিয়ে ইচ্ছামতো এভাবে জল ছাড়লে আর বরদাস্ত করা হবে না৷ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ আইনে যা রয়েছে, তাই হবে৷ এভাবে যদি চলতে থাকে, ওদেরও সহযোগিতার দরকার হয় আমাদের কাছে৷ সেক্ষেত্রে আমরাও কতটা সহযোগিতা করব, ভাবতে হবে৷”

সোমবার রাতে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে সব মিলিয়ে এক লক্ষ ২০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়৷ রাতেই প্লাবিত হয়েছে হুগলি, হাওড়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ৷ সেই খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আসতেই তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন৷ কেন্দ্রকে আক্রমণ করে তিনি স্পষ্ট বলেন, “জল ছাড়তে বারণ করলেও শোনে না৷ প্রতিবার এভাবে ভাসিয়ে দেবে, এটা ঠিক নয়৷ আমি বাঁচব, আর অন্যকে মেরে ফেলব, এটা হয় না৷ খরায় পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জল পায় না৷ আর জল ছেড়ে দিয়ে ডুবিয়ে দেব, এটা হতে পারে না৷” ভাঙন নিয়েও কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাঙন কেন্দ্রের বিষয়৷ কিন্তু কেন্দ্র এনিয়ে কিছু করছে না৷ ঘাটাল পরিকল্পনার অনুমোদন এখনও দেয়নি৷”

Advertisement

প্লাবিত এলাকায় রাজ্যের পক্ষ থেকে ত্রাণশিবির করা হয়েছে৷ খাদ্যও দেওয়া হচ্ছে৷ জেলা প্রশাসনকেও সজাগ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷

Advertisement

আরামবাগের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে জলস্রোতে ভেসে গিয়েছেন কেষ্ট দিগার (৫৮) নামে এক মাছ ব্যবসায়ী৷

ডিভিসি-র ছাড়া জলে বাঁকুড়ার সোনামুখিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ প্লাবিত পাত্রসায়রের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত৷ সোনামুখীতে শিলাবতী নদীর জল উপচে বিঘার পর বিঘা চাষজমিতে হাঁটুসমান জল দাঁড়িয়ে রয়েছে৷

উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডে অতিবর্ষণের জেরে ফরাক্কা ব্যারেজের আপ স্ট্রিম ও ডাউন স্ট্রিমে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল৷ ফরাক্কা ব্যারেজের এক আধিকারিক জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় আপ স্ট্রিমে জল থাকার কথা ৭৪ ফুট, ডাউন স্ট্রিমে ৭৩ ফুট৷  কিন্তু বর্তমানে আপ স্ট্রিমে রয়েছে ৭৮.০৫ ফুট জল৷ ডাউন স্ট্রিমে ৭৭.৯০ ফুট জল৷ দু’ক্ষেত্রেই স্বাভাবিকের থেকে প্রায় চার ফুট বেশি৷

এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের বাঁধ একের পর এক জায়গায় ভাঙতে থাকে৷ ব্লকের নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত জলমগ্ন৷ কয়েক লক্ষ মানুষ জলবন্দি৷ দশটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে৷ মোট দশ-বারোটি জায়গায় নদীবাঁধ দশ থেকে ত্রিশ ফুট ভেঙে গিয়েছে৷ সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কানুপাট-মনশুকা, কুরচি-শিবপুর, সিংটি ও ডিহিভুরশুট গ্রাম পঞ্চায়েত৷ জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন মন্ত্রী অরূপ রায়, বিধায়ক পুলক রায়৷ জলমগ্ণ হাওড়া পুরসভার কিছু এলাকাও৷

উত্তর ২৪ পরগনারও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে৷ ইছামতী ও যমুনা নদীতে জলস্ফীতি হওয়ায় স্বরূপনগর ব্লকের তেপুল মির্জাপুর, সগুনা ও চারঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত প্লাবিত হয়েছে৷ আরও কয়েকটি পঞ্চায়েতের কিছু গ্রাম ভেসে গিয়েছে৷ কয়েক হাজার বিঘা জমির ফসল ও আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷

মঙ্গলবার ভোরে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চন্দ্রকোনার বিস্তীর্ণ এলাকা৷ চন্দ্রকোনা ১ এবং ২ নম্বর ব্লকের ভ্লঙ্মটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবক’টি গ্রাম, ঘাটাল ব্লক ও ঘাটাল পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকাও প্লাবিত হয়ে পড়েছে৷ বিঘার পর বিঘা সদ্য চাষ করা ধানজমি জলমগ্ণ৷ ডুবে গিয়েছে রাস্তাঘাট৷ নামানো হয়েছে যন্ত্রচালিত বোট এবং নৌকা৷ ঘাটাল মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে কণ্ট্রোল রুম৷ বাতিল করা হয়েছে ছুটির আবেদন৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ