Advertisement
Advertisement

Breaking News

সাবেকিয়ানাই বৈশিষ্ট্য রাজধানীর পুজোমণ্ডপে

যমুনার চরে কাশবনে হাওয়া লাগলেই এখানেও পুরনো রূপে ফেরে বাঙালি৷

Durga Pujas in Delhi
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 6, 2016 11:58 am
  • Updated:October 6, 2016 11:58 am

জ্যোতির্ময় কর্মকার, নয়াদিল্লি: দূরত্বের বেড় যতই বাড়ুক, নাড়ির টান ভোলার নয়৷ প্রবাসের পুজোমণ্ডপ মানেই এই উপলব্ধি বারবার ঘুরে ফিরে আসে৷ রাজধানীর নগরজীবন বরাবরই ‘ট্রেন্ড কনসাস’৷ কিন্তু যমুনার চরে কাশবনে হাওয়া লাগলেই এখানেও পুরনো রূপে ফেরে বাঙালি৷ আটপৌরে ঢঙে শাড়িতে সাজে বাঙালি বধূ৷ স্বাভাবিকভাবেই মা দুর্গার সাজও এখানে সাবেকি৷ গাজিয়াবাদের বৈশালির রচনা পার্ক সেক্টর থ্রি-এর পুজোর ক্ষেত্রেও কোনও ব্যতিক্রম নেই৷ দিল্লি-এনসিআর-এর অন্যান্য মণ্ডপের মতোই এখানকার পুজোতেও সেই চেনা ছোঁয়া৷

কোনও এক নাম না জানা প্রাচীন রাজবাড়ির অন্দরমহলের আদলেই এখানে তৈরি হয়েছে মণ্ডপের ভিতরের কারুকাজ৷ রাজবাড়ির আবহ তৈরি করতে ঝোলানো হয়েছে ঝাড়বাতিও৷ কিন্তু ‘হাজার টাকার ঝাড়বাতি’র দেখনদারি এখানে নেই৷ বরং আন্তরিকতাই মূলধন৷ নিজেরাই হাতে করে মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই ঝাড়বাতি তৈরি করেছেন পুজো কমিটির সদস্যরা৷ এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝোলানো হয়েছে অসংখ্য সুদৃশ্য বাহারি লণ্ঠন৷ বাঁশ, তক্তা, কাপড় দিয়েই তৈরি হয়েছে মণ্ডপ৷

Advertisement

প্রায় এক মাস দিনরাত এক করে মণ্ডপ সাজানোর কাজ করছেন বর্ধমান থেকে আসা ১৪-১৫ জনের এক শিল্পীদল৷ যদিও প্রতিমা তৈরি হয়েছে প্রবাসের মাটিতেই৷ গত কয়েক বছর ধরেই দিল্লি কালীবাড়ির বিশ্বজিৎ পালের তৈরি প্রতিমাই নিয়ে আসেন এই পুজোর উদ্যোক্তারা৷ এবার মণ্ডপের সঙ্গে তাল রেখে প্রতিমার রূপটান কিছুটা বদলালেও সাবেকিয়ানা পাল্টাচ্ছে না এতটুকু৷ বরং মাথার মুকুট থেকে পায়ের নূপুর-সহ আগাগোড়া সোনালি সাজে সালঙ্কারা হয়ে উঠেছেন মা দশভুজা৷

Advertisement

আপাতভাবে বৈশালির রচনা পার্ক সেক্টর থ্রি-এর পুজো বলে পরিচিত হলেও এখানাকার পুজোর মূল নাম সর্বজনীন শ্রী শ্রী কালীপুজো কমিটি৷ একসময় কালীপুজো দিয়েই শুরু হয়েছিল মাতৃ আরাধনা৷ পূজ্য দেবী বদলে গেলেও রেজিস্ট্রেশনের গেরোয় কমিটির নাম বদলায়নি৷ এভাবেই পুজোর বয়স হয়ে গেল এগারো বছর৷ নামে কী বা আসে যায়! এখানে আন্তরিকতাই সব৷ কমিটির সেক্রেটারি দীপেন্দু ঘোষের কথায়, “প্রায় ১২৮ থেকে ১৩০টি বাঙালি পরিবার একসঙ্গে মিলে এই পুজো করছে৷ পুজোর চারদিন সব বাড়ির মেয়েদের হেঁশেলে ছুটি৷ মণ্ডপেই চলবে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা৷ ভোগের রান্না হোক বা তিথি-সময় মেনে পূজোর খুঁটিনাটি আয়োজন, দশভুজার মতো এখানে সব কাজ সামলান কমপ্লেক্সের মেয়েরাই৷”

পুজোর বিষয় ভাবনা এবং বাস্তবায়নের অন্যতম অংশীদার আনন্দ ভট্টাচার্যর আরও দাবি, “ঘরে ফিরতে না পারার চাপা কষ্ট নিয়েই প্রবাসের পুজোর আয়োজন হয়৷ স্বাভাবিকভাবেই খাতায় কলমে বারোয়ারি হলেও এটা ঘরের পুজোই হয়ে গিয়েছে৷ সবাই নিজের মতো করেই সাজিয়ে নেয় সবকিছু৷”

পঞ্চমী থেকেই ঢাকে কাঠি পড়ে যায় এখানে৷ বীরভূমের সুদূর এক গ্রাম থেকে আসেন ঢাকী৷ দৈনন্দিন জীবনের লড়াই থেকে উঠে আসা অপরিচিত কোনও মুখ দিয়েই পুজোর উদ্বোধন করানো এখানে রেওয়াজ৷ যদিও এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করির আসার কথা রয়েছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ