Advertisement
Advertisement

নোবেল কোথায়? অনেকটাই জানেন কেএলও নেতা জীবন সিং!

সিআইডি-র মতে, নোবেল চুরির তদন্তের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে বাংলাদেশেই৷

New Clues In Rabindranath Tagore's Nobel Theft Case
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 9, 2016 9:19 am
  • Updated:August 9, 2016 9:20 am

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্ণব আইচ: শান্তিনিকেতন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে নোবেল নিয়ে যাওয়ার পিছনে কি ছিল কোনও ইউরোপীয়? বাংলাদেশের ব্যবসায়ী শিপলুরই বা কী ভূমিকা ছিল নোবেল পাচার-কাণ্ডে? নোবেল চুরির পর তা পাচার করার ক্ষেত্রে কি হাত ছিল কেএলও নেতা জীবন সিংয়ের? নোবেল চুরির তদন্তের দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিতে চাইতেই এই কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই ভবানী ভবনে ফাইল নাড়াচাড়া করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন সিআইডির গোয়েন্দারা৷ তার থেকেই উঠে এসেছে এই সব প্রশ্ন৷ যে প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারেনি সিবিআই৷ সিআইডির বক্তব্য, এইসব ‘মিসিং লিঙ্ক’ মেলাতে পারলেই নোবেল চুরির কিনারা করা যাবে৷ এখনও সিআইডি শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরির তদন্তভার সিবিআইয়ের কাছ থেকে নেয়নি৷ কিন্তু তার আগেই তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন সিআইডি আধিকারিকরা৷ সিআইডি-র মতে, নোবেল চুরির তদন্তের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে বাংলাদেশেই৷ তাই তদন্তের খাতিরেই বাংলাদেশে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন সিআইডি আধিকারিকরা৷
২০০৪ সালের মার্চে শান্তিনিকেতন থেকে নোবেল ও কবিগুরু এবং তাঁর পরিবারের ব্যবহৃত প্রায় ৪৩টি জিনিস চুরি যাওয়ার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই৷ ওই ঘটনার চার বছর পর নোবেল চুরি সম্পর্কে সিবিআইকে আলো দিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ৷ সিবিআই ও ভারতীয় গোয়েন্দাদের সূত্রেই খবর পেয়ে ঢাকা শহরের আজিমপুর এলাকায় হানা দেয় বাংলাদেশের সিআইডি ও ‘ব়্যাব’৷ সেখান থেকেই মহম্মদ হোসেন শিপলু নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়৷ কারণ, বাংলাদেশ ও ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল যে, শিপলুর হাতেই পৌঁছেছে নোবেল৷ শিপলুর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়৷ ঢাকায় শিপলুর সোনার দোকান৷ সেই দোকানেও বাংলাদেশের গোয়েন্দারা তল্লাশি চালান৷ একই সঙ্গে শিপলুর বাবা আবুল হোসেনের দোকানেও চালানো হয় তল্লাশি৷ ওই দোকানে বহু অ্যান্টিক জিনিস ছিল৷ যদিও বাংলাদেশ পুলিশ ভারতীয় গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল যে, শান্তিনিকেতনের ‘বিচিত্রা’-র সংগ্রহশালা থেকে চুরি যাওয়া নোবেল বা অন্য কোনও অ্যান্টিক শিপলুর কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়নি৷
কিন্তু এখানেও রয়ে গিয়েছে বহু প্রশ্ন৷ শিপলু পরে জামিন পেয়ে গেলেও তাঁকে জেরা করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা৷ জানা যায়, শিপলু বাংলাদেশের নাগরিক হলেও তাঁর আসল বসবাস ইতালিতে৷ সেখান থেকেই তিনি সোনা ও অ্যান্টিকের ব্যবসা চালান৷ সেই সূত্রে বহু ইউরোপীয় ব্যবসায়ী তাঁর পরিচিত৷ শিপলু নোবেল চুরির আগে ও পরে বহুবার ভারতে এসেছেন৷ থেকেছেন কলকাতায়৷ তাঁর সূত্র ধরে এক জার্মান নাগরিকের সন্ধান পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা৷ ওই বিদেশি যে ভারত ও বাংলাদেশে বহুবার যাতায়াত করেছেন, সেই প্রমাণ পেয়েছেন দুই দেশের গোয়েন্দারাই৷ ওই জার্মান নাগরিকের হাত দিয়ে দুষ্কৃতীরা নোবেল বাংলাদেশে পাচার করেছে, এমন সম্ভাবনা গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না৷ আবার শিপলু তাঁর নিজের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইউরোপের কোনও জায়গায় ওই নোবেল পাচার করেছেন, এমন সম্ভাবনাও রয়ে গিয়েছে৷
এদিকে, শিপলুকে জেরা করে তাঁর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের জঙ্গি সংগঠন কেএলও-র সর্বোচচ নেতা জীবন সিংয়ের যে সম্পর্ক ছিল, সেই সম্পর্কে অনেকটাই নিশ্চিত হন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা৷ সিবিআই-ও নিশ্চিত ছিল যে, বাংলাদেশে শিপলু-ই জীবন সিংকে আশ্রয় দিয়েছিলেন৷ সেই সূত্র ধরে নোবেল ও শান্তিনিকেতন থেকে দুষ্প্রাপ্য জিনিস পাচারের ক্ষেত্রে জীবন সিংয়ের একটি বড় ভূমিকা ছিল বলে অনেকটাই নিশ্চিত গোয়েন্দারা৷ সম্প্রতি মায়ানমারে সেনাদের অপারেশনের পর প্রথমে রটে যায় যে, জীবন সিংয়ের মৃত্যু হয়েছে৷ যদিও পরে জানা যায় যে, জীবন সিং বেঁচেই রয়েছেন৷ নতুন করে মায়ানমারের জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি৷ তাই তদন্ত শুরু করার পর যে দুষ্কৃতীরা নোবেল চুরি করেছিল, তাদের সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে গিয়ে শিপলু ও অন্য সোনা এবং অ্যান্টিক ব্যবসায়ীদের সন্ধান পেতে চায় সিআইডি৷ প্রয়োজনে শিপলুকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ