Advertisement
Advertisement

Breaking News

সঙ্গী ট্রাইসাইকেল, তবু মায়ের কষ্ট কমাতে দোকান চালান বিশ্বজিত্‍

শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও লড়াই করে মায়ের পাশে বিশ্বজিৎ‍!

physically challenged biswajit helps his mother by running a tea stall in tri-cycle
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 9, 2016 3:06 pm
  • Updated:July 9, 2016 3:06 pm

নিজস্ব সংবাদদাতা, কাটোয়া: দু’পা অকেজো৷ হাতও স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না৷ তবুও ভোরের আলো ফুটতেই সাইকেল ঠেলে যেতে হয় তাঁকে রুজি রোজগারের টানে৷ কাটোয়ার মূলগ্রামের প্রতিবন্ধী যুবক বিশ্বজিত্‍ কর্মকারের এই জীবনযুদ্ধে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন রাজু মোদক, বাবু শেখ, শিবু মাঝিরা৷ যাঁদের কেউ হকারি করেন, কেউ বা রিকশা চালান৷ পড়শিদের এই মানবিকতায় মুগ্ধ ওই যুবক৷ হয়তো একদিন পাশে দাঁড়াবে সরকারও৷ আশা তাঁর৷

কাটোয়া-২ ব্লকের শ্রীবাটি পঞ্চায়েত এলাকার মূলগ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের বিশ্বজিত্‍ কর্মকার৷ বাড়িতে আছেন মা৷ বাবা নারায়ণ কর্মকার বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন৷ দিনমজুর বাবার মৃত্যুর পর সংসারে নেমে আসে তীব্র অভাব৷ এদিকে বিশ্বজিত্‍ ছোট থেকেই পোলিও আক্রান্ত৷ পা দু’টি অকেজো৷ হাত দু’টিতেও তেমন জোর নেই৷ মা শোভা কর্মকার বলেন, “আমি পরিচারিকার কাজ করি৷ আমার কষ্ট দেখে ছেলে ওই শরীর নিয়েই রুজি রোজগারের চেষ্টা করতে থাকে৷ শেষে একটি চায়ের দোকান খোলে৷ এখন যা আয় করে দিনের শেষে আমার হাতে তুলে দেয়৷”

Advertisement

গ্রাম থেকে চাণ্ডুলি বাসস্ট্যান্ড প্রায় দু-আড়াই কিলোমিটার পথ৷ বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের এক কোণে স্টোভ ধরিয়ে চা তৈরি করেন বিশ্বজিৎ৷ সঙ্গী ট্রাইসাইকেল৷ যেটি এক সময় একটি সংস্থা তাঁকে দিয়েছিল৷ ওই সাইকেলে চা তৈরির সরঞ্জাম, বিস্কুটের বয়ামগুলি চাপিয়ে ভোর হতেই চাণ্ডুলি বাসস্ট্যান্ডে চলে আসেন বিশ্বজিৎ৷ আর দোকানের মালপত্র নামানো, দোকান সাজিয়ে দেওয়া এসব নিত্যদিন করে দেন হকার রাজু, রিকশাচালক বাবু শেখরা৷ স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় শ্রমিক শিবু মাঝির কথায় “ছেলেটা কত কষ্ট করে৷ আর আমরা এটুকু করতে পারব না?” প্রতিদিন দুপুরে ছেলের জন্য বাড়ি থেকে পায়ে হেটে খাবার নিয়ে আসেন মা৷ আবার তাঁকে পরের বাড়িতে কাজের জন্য ফিরে যেতে হয়৷

Advertisement

শোভাদেবী বলেন, “আমার ছেলেকে সবাই খুব সাহায্য করে৷ তাই নিশ্চিন্তে থাকি৷” বিশ্বজিত্‍ বলেন, “আমি কিছু রোজগার করি তাই মায়ের কষ্ট কিছুটা কম হয়৷ যদি সরকারিভাবে কিছু সাহায্য পেতাম ভাল লাগত৷” কাটোয়া-২-এর বিডিও শিবাশিস সরকার বলেন, “ওই যুবক আমাদের কাছে সাহায্যের আবেদন করলে সরকারি নিয়মে যেটুকু সম্ভব সাহায্য করা হবে৷” শোভাদেবীর তবু ভরসা, ভাগ্যিস ছেলেটা ছিল৷ শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও লড়াই করে পাশে দাঁড়িয়েছে মায়ের৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ