Advertisement
Advertisement

জীবনের বসন্তকে মুঠোবন্দি রেখেই চাঁদপরির দেশে ‘চাঁদনি’

বাই বাই মিস হাওয়া হাওয়াই।

sridevi has no more but her grace is still alive
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 25, 2018 5:23 pm
  • Updated:September 16, 2019 3:00 pm

শাম্মী হুদা: ঘোর লাগা সৌন্দর্য নিয়ে জমকালো সাজে আসর মাতাচ্ছেন মিস হাওয়া হাওয়াই। স্বপ্ন সুন্দরীর পোশাকের ঝলকে দিশেহারা দর্শক। মিউজিকের তালে তালে শরীরি বিভঙ্গ যেমন হিল্লোল তোলে পুরুষ হৃদয়ে। তেমনই অপাঙ্গের চাহনি টলমলিয়ে দেয় সামনের পৃথিবীটাকে। হিলহিলে সৌন্দর্য নিয়ে নাগিন যখন সাপের তরঙ্গ ছন্দে নিজের ছন্দ খুঁজে পায়। তখন দর্শকাসন যেন সাপুড়েকেই অনুসরণ করে। এই পিছলে যাওয়া সৌন্দর্যের মাদকতা নিয়ে রূপ কি রানি তখন আপনাকে টানছে। চুরি, ছিনতাই তো তুচ্ছ সেই চাহনির কাছে। মিস্টার ইন্ডিয়া দেখে চালচুলোহীন অনিল কাপুর নয় দুষ্টুমিষ্টি শ্রীদেবীর প্রেমে পড়েছিল নারী পুরুষ নির্বিশেষে। সৌন্দর্যের যেন আলাদা কোনও সংজ্ঞা হতে নেই শ্রীদেবীদের কাছে। এঁরা ফিরে ফিরে আসেন নিত্য নতুন রূপে। সেই রূপ কখন কীভাবে দর্শকের মন কাড়বে তা আগে থেকে ভেবে ওঠা মুশকিল।250px-Sridevi_still3

তাই তো বার বার ভেঙেছেন সৌন্দর্যের সীমানা। নিজেই নিজের স্টাইল আইকন হয়ে খুঁজে নিয়েছেন নতুন প্রেক্ষাপট। কখনও জিতেন্দ্র, কখনও মিঠুন, কখনও অনিল কাপুর তো কখনও সলমন খান। যখনই যে নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তখনই মনে হয়েছে সর্বকালের সেরা জুটি। জিতেন্দ্রর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে জিতেন্দ্রর জিতেন্দ্রানী হওয়ার একটা ক্ষমতা ছিল এই অভিনেত্রীর মধ্যে। স্নিগ্ধ সৌন্দর্য আর অসামান্য অভিনয় দক্ষতায় যা তাঁকে পেশাদারি খ্যাতি এনে দিয়েছে। একইভাবে বলিউডের ডিস্কো ড্যান্সারকেও তিনি মননে বিদ্ধ করেছেন। তাই তো সমাজ সংসার ভুলে শুধু অভিনয়েই নয়, ব্যক্তিজীবনেও শ্রীদেবীকে আপন করে নিতে ভোলেননি মিঠুন চক্রবর্তী। তবে জীবনের ছোটখাটো ভুলকে খুব একটা পাত্তা দেননি এই দক্ষিণী অভিনেত্রী। সময় যত এগিয়েছে ততই বহতা নদীর মতো নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। ফিল্মি স্ক্যান্ডাল তাঁর কেরিয়ার গ্রাফে শ্যাঁওলার মতো ক্ষণস্থায়ী হয়েছে। বাঁক বদলে অন্য খাতে বয়ে গিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনেও থেকেছেন রঙিন। অভিনয়কে মননে বাঁধতে পেরেছিলেন চাঁদনি। তাই বলিউডের ভাইজানের সঙ্গেও ছিলেন সমান স্বচ্ছন্দ। বৈবাহিক জীবনের বড়সড় হার্ডল পেরিয়ে এক সময় থিতু হন। বিয়ে করেন একদা বান্ধবীর বর বনি কাপুরকে। এরপর সংসারে ব্যস্ত হয়ে যান রূপ কি রানি। হঠাৎ করেই যেন উবে গেলেন তিনি। ফিরলেন ১৫টা বছর পর একেবারে নতুন হয়ে। না না জুহি চাওলা, মাধুরি দীক্ষিত, হেমা মালিনির মতো বলি ডিভাদের ছাড়িয়ে একটু অন্যভাবে।

Advertisement

Sridevi-actress

Advertisement

জীবনের বসন্তকে মুঠোবন্দি করার চাবিকাঠি ছিল শ্রীদেবীর দখলে। যখনই ক্যামেরাবন্দি হতেন তখনই মনে হত বসন্ত এসে গিয়েছে। না প্রেম নয়, প্রেমের পরশ। শ্রীদেবী মানেই বসন্তের হাওয়া। শ্রীদেবী মানেই সদ্য প্রেমে পড়া যুগলের হাতে ম্যাটিনি শোয়ের টিকিট। শ্রীদেবী মানেই মিষ্টি হাসির তিখা চাহনি। অন্তরের অন্তস্থল যেন ঝলমলিয়ে ওঠে। ৫০ কোঠাতেও সমান আবেদনময়ী। চাইলে ক্যাটরিনা, করিনা হার মানবে সেই যৌবনের কাছে। হিল্লোলিত যৌবন ধরে রাখতে গিয়ে পরিশ্রমে কার্পণ্য করেননি চাঁদনি। যখনই মনে হয়েছে শীত বুড়ো আঁকড়ে ধরতে আসছে তখনই ছুটে গিয়েছেন সুদূর ক্যালিফোর্ণিয়ায়। চলেছে নানা রকম কাটাছেঁড়া। ফের তন্বী হয়েই পা রেখেছেন আরব সাগরের তীরে। চমকে গিয়েছিল বলিউড ১৫ বছরেও শ্রীদেবী শ্রীদেবীতে থেকে যাওয়ায়। তিনি চমকাননি, চেয়েছিলেন তো মধ্যমণি হয়ে থাকতে। জীবনের শেষ মুহূর্তও কাটল কর্মচঞ্চলতায়। বিয়ের মতো রঙিন অনুষ্ঠানে কেমন টুক করে চাঁদের দেশে পাড়ি দিল চাঁদনি। এই বসন্তেই বয়স তো এক সময় বাড়তই। তখন হয়তো ধরে রাখা বসন্তও গ্রীষ্মের দাবদাহে শুকিয়ে যেত। ভাগ্য কিন্তু তাঁর সঙ্গ দিয়েছে। আইসিইউ, অক্সিজেন মাস্ক, স্যালাইন চ্যানেল, হুইলচেয়ার এভাবে মিস হাওয়া হাওয়াইকে দেখলে দর্শকদের কষ্টই হত। তাই সূর্য পাটে বসার আগে বসন্তেই চলে গেলেন বসন্তের রানি। মুঠোবন্দি বসন্ত অক্ষুন্ন রইল তাঁর ছবিতে। মনে হচ্ছে বড় কড়া কথা। আসলে তা নয়, সুখ তো ক্ষণস্থায়ীই হয়। স্বপ্নকন্যারাও ক্ষণিকেরই অতিথি হন।

5_sridevilux_idiva

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ