Advertisement
Advertisement

Breaking News

স্কুলের ফরমে ধর্ম উল্লেখ না করে নজির মহম্মদবাজারের ছাত্রীর

স্যালুট!!!

Suri: School girl leaves religion column blank
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 2, 2018 10:32 am
  • Updated:June 29, 2019 5:47 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ধর্মের নামে উন্মাদনা দেখে এবার নিজের পরিচয়ে আর ধর্মের উল্লেখই করলেন না এক আদিবাসী ছাত্রী। মহম্মদ বাজারের রানিপুর গ্রামের সোনালি হেমব্রম স্কুলের পরিচয়পত্রে ধর্মের কোনও উল্লেখ করলেন না। নবম শ্রেণির ছাত্রীটি বলেন, “ধর্মের নামে এই বজ্জাতির প্রতিবাদ করা দরকার বলে মনে হল। তাই স্কুলের ফরমে থেকেই সেটা শুরু করলাম।” লেখাপড়ার অধিকার চেয়ে যেমন লড়াই শুরু করেছিলেন মালালা ইউসুফজাই। সোনালির এই প্রতিবাদকে তারই উত্তরসুরী বলে মনে করছেন অনেকে। সম্প্রতি কেরলে লাখখানেক ছাত্রছাত্রীও এই একই পথে হাঁটেন। সে খবর সোনালির জানা আছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু এ রাজ্যেও যে স্রেফ জাতপাতের বিচারে মানুষের মূল্যায়ণ করা যাবে না, বুঝিয়ে দিল সোনালি। যদিও এত কান্ডের পর সোনালি নিজে এই প্রতিবাদ করেছে নাকি তাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদের ভাষা, সে সন্দেহ থেকেই গিয়েছে।

[এটাই বাংলা, হনুমান জয়ন্তীর ব়্যালিতে জল হাতে এগিয়ে এলেন ফিরোজরা]

Advertisement

ধর্মীয় মেরুকরণ শুরু হয়েছে রাজ্যে। শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে আসানসোল, রানিগঞ্জে রক্তক্ষয়ী অবস্থা। সে ঘটনা টেলিভিশনের পর্দায় দেখে চমকে উঠেছে সোনালির কোমল মন। সোনালি বলে, “টিভি দেখে আমি চমকে উঠেছি। তাই শনিবার যখন স্কুলের ফরমে ধর্মের কী পরিচয় হবে লিখতে বলা হল তখন আমি তা বর্জন করলাম।” যদিও রবিবার রানিপুরে সোনালির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল গত দেড় মাস থেকে তাদের বাড়ির টেলিভিশন সেটটি বিকল হয়ে আছে। তবুও সোনালির এই প্রতিবাদ দেখে চমকে উঠেছে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।

Advertisement

সোনালি হেমব্রম গিরিপুর পুরাতনগ্রাম বি এন হাইস্কুলের ছাত্রী। অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। সংসারে একটু সচ্ছলতার খোঁজে মেয়েকে নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন মা। লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে মায়ের সঙ্গে দেশান্তরী সোনালির ভাল লাগেনি। তাই কয়েকমাস ভিন রাজ্যে কাটিয়ে ফের নিজেদের কুঁড়ে ঘরে ফিরে আসে সে। ফের স্কুলে যাওয়ার ভাবনা শুরু করে। স্কুলে ভরতি হতে গেলে স্কুলের তরফে একটি ফরম ভরতি করতে বলা হয়। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাকে এব্যাপারে সাহায্য করে। সেখান থেকেই সোনালিকে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপরেই স্কুলের ফরমে ধর্মের জায়গায় কিছু লেখেনি সে।

[সফল হাঁটু প্রতিস্থাপন, নয়া নজির গড়লেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা]

যদিও বি এন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, “ফরমে ফাঁকা ঘরটি দেখে আমার প্রথমে খটকা লাগে। তিন বলেন ছাত্রীটিকে আমি আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তাতে ছাত্রীটি তার বিশ্বাস থেকে যা বলে আমি শুনে হতবাক হয়ে যায়। সোনালি জানায় ধর্মের নামে যা চলছে তাতে নিজের পরিচয় দিতে কেমন কুন্ঠা হচ্ছে। সোনালি বলে ধর্ম যার যার। কিন্তু দেশ সবার। আমি তারপর আর কথা বাড়ায় নি। এক আদিবাসী ছাত্রীর এমন মনোভাবের প্রশাংসা করতেই হয়।” এই প্রতিবাদ চমকে দিয়েছে গোটা এলাকাকে। তার প্রতিবাদ কতদূর যাবে তা জানে না সোনালি। ঠিক যেমন জানতেন না লেখাপড়ার অধিকার চেয়ে বুলেটে রক্তাক্ত হওয়া মালালা ইউসুফজাই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ