সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় মারা যেতে পারে ১৪ হাজার শিশু! এমনই আশঙ্কার কথা শোনাল রাষ্ট্রসংঘ। প্রায় ১১ সপ্তাহ ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে রেখেছিল ইজরায়েল। এই মুহূর্তে প্রবেশের অনুমতি মিললেও নেহাতই সামান্য ত্রাণের ক্ষেত্রেই তা মিলছে। এখনই বেশি পরিমাণে ত্রাণ গাজায় প্রবেশ না করতে দিলে এমনই মর্মান্তিক পরিণতি হতে চলেছে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রসংঘের।
আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের তরফে লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছে ইজরায়েলকে। কিন্তু রাষ্ট্রসংঘের মানবিক শাখার প্রধান টম ফ্লেচার জানাচ্ছে মাত্র পাঁচ ট্রাক ত্রাণ সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশুদের খাদ্যও। কিন্তু দীর্ঘ সপ্তাহ ধরে ত্রাণ বন্ধ থাকার ফলে ওই ত্রাণ সমুদ্রে একফোঁটা জল পড়ার শামিল। বিবিসির রেডিও ৪-কে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি বলেছেন, ”আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ১৪ হাজার শিশু মারা যেতে পারে, আমরা যদি ওদের কাছে পৌঁছতে না পারি। অপুষ্টিতে ভোগার ফলে শিশুসন্তানকে স্তন্যপান করাতে না পারা মায়েদের কাছে শিশুখাদ্য পৌঁছে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা করে চলেছি আমরা।”
প্রসঙ্গত, ইউনিসেফের পরিসংখ্যান বলছেন, ১৮ মাসের যুদ্ধে গাজায় অন্তত ১৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জখম ৩৪ হাজার। এবং অন্তত ১০ লক্ষ শিশু ঘরছাড়া! বড়দের পৃথিবীতে এভাবেই গুলি-বোমার ছোবলে বিপন্ন শৈশব। রাষ্ট্রসংঘের মতে গাজা এখন ‘পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক কিলিং জোন’। অর্থাৎ প্রলয়-পরবর্তী হত্যাক্ষেত্র। কেবল কি শিশু? ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই ঝলসে যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রাণ! গত বছরের এপ্রিলে সামনে এসেছিল এমনই এক হাড়হিম তথ্য। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গাজার সবচেয়ে বড় ফার্টিলিটি ক্লিনিকে ইজরায়েলি সেনার হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় চারহাজারেরও বেশি ‘টেস্টটিউব বেবি’। পাশাপাশি নিষেকের জন্য সংরক্ষিত হাজারেরও বেশি শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নমুনাও ধ্বংস হয়ে যায় আল বামসা আইভিএফ সেন্টারের সেই বিস্ফোরণে। যুদ্ধের থাবার আঘাত নানাভাবে দীর্ণ করে। সামান্য খাবার আর জলের জন্য গাজার শিশুদের হাহাকার পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত ছড়িয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে সেখানকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরল রাষ্ট্রসংঘ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.