সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হার্ভাডের পর আলিগড়, জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়াদের পাশে এবার অক্সফোর্ড, ইয়েল, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইটির পড়ুয়ারা। ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর মারধরের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বিদেশের তাবড় তাবড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কোথাও অবস্থান, কোথাও আবার মৌন মিছিল, কোথাও আবার চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। সকলের গলায় একই সুর, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে লাঠিচার্জে নিন্দনীয় ঘটনা। পড়ুয়াদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে।
মঙ্গলবারই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা চিঠিতে জানিয়েছেন, কোনও বিষয় সম্পর্কে ভিন্ন মত পোষণ করা বা প্রতিবাদ করা গণতন্ত্রের সহজাত ব্যাপার। জোর ফলিয়ে প্রতিবাদ দমন করা গণতান্ত্রিকভাবেই অনুচিত। কিন্তু CAA’র প্রতিবাদকে সেভাবেই দমন করছে প্রশাসন। যা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিবাদ অবশ্যই সাধারণ জীবন ব্যাহত করে ও অসুবিধার সৃষ্টি করে। কিন্তু এর ফলেই গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় থাকে। পুলিশ দিয়ে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস বা প্রতিবাদীদের শারীরিক অত্যাচার কোনওভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে পুলিশ জোর করে ঢুকে পড়েছে, এমন ঘটনাও নিন্দনীয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। তবে শুধু জামিয়া মিলিয়া নয়, উত্তরপ্রদেশের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়েও পুলিশ CAA’র প্রতিবাদীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। এই ঘটনারও নিন্দা করা হয়েছে চিঠিতে।
[আরও পড়ুন :রাষ্ট্রসংঘে খারিজ চিনের কাশ্মীর প্রস্তাব, বেজায় চটলেন ইমরান]
মার্কিব যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ পড়ুয়ার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আলিগড় ও জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে যেভাবে পড়ুয়াদের মারধর করা হয়েছে, তা নৃশংস। এই ঘটনা ভারতীয় সংবিধানে বিবৃত মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। আমরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশে আছি।” এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন(CAA) প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। তাঁদের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাতেই পারে। এটা ওঁদের অধিকার। কিন্তু পুলিশ এভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে মারধর করতে পারে না। এটা গণতন্ত্রের প্রাথমিক ভিত্তিকে খর্ব করে।” তাঁরা আরও জানান, “এই অসাংবিধানিক ও অমানবিক এই আইনের (CAA) বিরুদ্ধে আমরাও লড়াই করব।”
[আরও পড়ুন :CAA’র প্রতিবাদ, জামিয়ার পাশে থাকার বার্তা দিয়ে খোলা চিঠি হার্ভার্ডের পড়ুয়াদের]
এদিকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের দাবি, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পড়ুয়াদের উপর হামলা গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরোধী। এই ঘটনা গোটা বিশ্বের গবেষক, পড়ুয়া ও বিদ্বজনেদের নাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন। গোটা ঘটনার উপর আমরা নজর রাখছি।” একইভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এমআইটি, ফিনল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও। দেশে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে বিশ্বের একের পর এক তাবড় তাবড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা প্রতিবাদে ফুঁসছে। যা কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।