সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিনের ভারতীয় আধিপত্য শেষ! নেপালের ইন্টারনেট মার্কেটে পা রাখল চিন। গত কয়েক দশক ধরে হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট জনপদে বাসিন্দারা ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য সম্পূর্ণভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। ভারতী এয়ারটেল ও টাটা কমিউনিকেশনের মতো সংস্থা নেপালে ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রেখেছিল। কিন্তু সম্প্রতি নেপালের সরকারি কর্তারা অভিযোগ করছিলেন, ভারতীয় টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের ইন্টারনেট পরিষেবায় খামতি রয়েছে। সেগুলি সরকারি কাজকর্ম পরিচালনার জন্য নিরাপদ নয়।
আর এই পরিস্থিতিতেই তড়িঘড়ি নেপাল হাত বাড়ায় চিনের দিকে। নেপাল টেলিকম ও চায়না টেলিকম গ্লোবাল গাঁটছড়া বাঁধে। রাজধানী কাঠমান্ডুর উত্তরে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকা জুড়ে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল পেতেছে চিনা সংস্থাটি। চিনের কেরাং থেকে নেপালের রাসুওয়াগাড়ি পর্যন্ত এভাবেই চলছে ইন্টারনেট পরিষেবা। নেপাল টেলিকমের মুখপাত্র প্রতিভা বৈদ্য সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘চিন আমাদের কাছে ভারতের বিকল্প হিসাবে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার আবেদন জানায়। বেজিংয়ের দাবি, তাদের ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ নিরাপদ ও গোপনীয়তা বজায় রাখবে। সেই সঙ্গে নিরব্বিচ্ছিন্ন পরিষেবা দেবে।’ আর তাই নেপাল ওই পরিষেবা গ্রহণে সবুজ সঙ্কেত দেয় বলে দাবি করেছেন ওই মুখপাত্র।
একটি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, নেপালের প্রায় তিন লক্ষ বাসিন্দাদের মধ্যে ৬০% মানুষই ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন ২০১৭ সালে। নেপালের মার্কেটকে নিজেদের দখলে রাখতে ভারত ও চিনের মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন চলে আসছে। সম্প্রতি চিন সরকার নেপালে কোটি কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে সড়ক-সহ অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপরে জোর দেয়। পাশাপাশি. ২০১৬-তে নেপালকে চিনা বন্দর ব্যবহারের ছাড়পত্রও দেয় বেজিং। ২০১৭-তে ভারতের আপত্তি উড়িয়ে চিনের মহাপ্রকল্প ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এ যোগ দিয়েছে নেপাল। আর এবার নেপালের ব্রডব্যান্ড পরিষেবাকেও কার্যত নিজেদের দখলে নিল চিন। এবার নেপাল থেকে তিব্বতে রেললাইন পাতার যে স্বপ্ন বহুদিন ধরে দেখে আসছে বেজিং, সেটাও সম্ভবত সফল হতে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.