সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু পরিকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করাই নয়, ব্রহ্মপুত্র নদীর জলস্তর নিয়ে তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রেও যে বাংলাদেশ ও চিনের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে, এবার তার প্রমাণ মিলল। বিবিসির দাবি, গত ১৫ মে থেকে ব্রহ্মপুত্র নদীর জলস্তর নিয়ে লাগাতার বাংলাদেশকে তথ্য দিয়ে গিয়েছে চিন। অথচ এ বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি ভারতকে। কেন? বেজিংয়ের দাবি, টেকনিক্যাল কারণেই ব্রহ্মপুত্র নদীর জলস্তর নিয়ে দিল্লিকে কোনও তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
[উত্তর কোরিয়ার আকাশে লাগাতার টহল মার্কিন যুদ্ধবিমানের]
গত আগস্ট মাসেই প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল অসম, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রবল বন্যায় প্রাণ গিয়েছিল কয়েকশো মানুষের। গৃহহীন হয়েছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। এমনিতে ভারতে বন্যা নতুন কিছু নয়। তবে এবারের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা পরিস্থিতির জন্য চিনকেই দায়ী করেছিলেন অনেকেই। অভিযোগ উঠেছিল, ডোকলাম নিয়ে সংঘাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদীর জলস্তর নিয়ে ভারতকে তথ্য সরবরাহ করা বন্ধ করে করে দিয়েছে চিন। আর তার জেরেই বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
[পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে হাফিজ]
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে হাইড্রোলজিক্যাল বা জল সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র নদের গতিবিধি নিয়ে ভারতকে তথ্য সরবরাহ করার কথা চিনের। কিন্তু চুক্তি থাকা সত্ত্বেও চিন তথ্য সরবরাহ করেনি বলে অভিযোগ করেছিলেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। যদিও ভারতের অভিযোগ মানতে চায়নি চিন। বেজিং দাবি করেছিল, তিব্বত তাদের জল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্রটি সংস্কারের কাজ চলছে। তাই টেকনিক্যাল কারণে নয়াদিল্লিতে ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তরকে সম্পর্কে কোনও তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
[সমনে সাড়া না দিলে খালেদাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ আদালতের]
তবে কারণ যাই হোক না কেন, ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তর নিয়ে চিনের কাছ থেকে ভারত কোনও তথ্য পায়নি। কিন্তু, বাংলাদেশকে ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। বিবিসি-র দাবি, গত ১৫ মে থেকে নিয়ম মেনেই ঢাকাকে ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তর নিয়ে লাগাতার তথ্য সরবরাহ করে গিয়েছে বেজিং। এই খবরের সতত্য স্বীকার করে নিয়েছে খোদ বাংলাদেশের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী আনিসূল রহমানও। তিনি জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ, জলস্তর সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যই বাংলাদেশকে দিচ্ছে চিন।
[উত্তর কোরিয়াকে ‘ঠান্ডা’ করতে ব্যাপক মহড়া শুরু চিন-রাশিয়ার]
প্রসঙ্গত, সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চিনের বিবাদ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি সিকিম-চিন-ভুটানের সংযোগস্থল ডোকালামে সেনা মোতায়েন নিয়ে নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের সংঘাত চরমে ওঠে। প্রায় দেড়মাসের বেশি সময়ে ধরে ডোকালামে মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল দু’দেশের সেনা। শেষপর্যন্ত ব্রিকস সম্মেলনের আগে ডোকলাম নিয়ে অচলাবস্তা কেটেছে ঠিকই। তবে ভারতে চাপে রাখতে ভুটান, বাংলাদেশে পড়শি দেশগুলিতে যে চিন প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
[ভারতীয় নৌসেনাকে যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে উদ্যোগী মিগ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.