Advertisement
Advertisement

Breaking News

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে জানানো হয় পাকিস্তানকে, ব্রিটেনে মন্তব্য মোদির

'ভয়ে ফোন তোলেননি পাক জেনারেল।'

Dialled Pakistan on surgical strike, they were scared to come on phone: PM Narendra Modi in UK
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 19, 2018 10:49 am
  • Updated:November 12, 2018 6:11 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে পাকিস্তানকে টেলিফোনে জানানো হয় বলে বুধবার ব্রিটেনে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু পাক জেনারেল এতটাই ভীত হয়ে পড়েন যে টেলিফোনে কথা বলতেও সম্ভবত ভয় পাচ্ছিলেন। মোদি বলেন, ‘ভারতের মানুষ জানার আগে আমরা চেয়েছিলাম যে পাকিস্তান জানুক। আমরা চেয়েছিলাম যে পাকিস্তান জানুক আমরা কী করেছি এবং কোথা থেকে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করা যাবে।’ মোদি আরও বলেন, ‘বেলা ১১টা থেকে পাক জেনারেলকে ফোন করে যাচ্ছি কিন্তু বেলা ১২টার আগে কেউ ফোন ধরেননি। তারপর আমরা সংবাদমাধ্যমে জানাই।’ মোদির কথা শুনে হাততালিতে ফেটে পড়েন লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার হলে উপস্থিত শ্রোতারা।

[ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি নয়, বিলেত থেকে বিরোধীদের বার্তা মোদির]

তবে এতেও কাঠুয়া, উন্নাও কাঁটার মধ্যে ব্রিটেন সফরটা খুব একটা মধুর হল না নরেন্দ্র মোদির। ব্রিটেনকেও সন্ত্রাসবাদ রুখতে ডাক দিয়েছেন মোদি। যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’দেশই। মূল লক্ষ্য অবশ্যই পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন। পাশাপাশি, ঋণখেলাপি বিতর্কিত শিল্পপতি বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণের বিষয়টিও সফরের প্রথম দিনে তুলেছেন মোদি। তবে এ বিষয়ে কোনও দেশেরই সরকারি তরফে সরাসরি মুখ খোলা হয়নি। অবশ্য ব্রিটেনের জটিল ও লম্বা আইনি প্রক্রিয়া এড়িয়ে মালিয়াকে ভারতে ফেরানো কার্যত সম্ভব নয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বুধবার দিনভর নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। বাকিংহাম প্যালেসে কথা হয় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গেও। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জমায়েতে বক্তৃতাও করেন তিনি। অনুষ্ঠানের নাম, ‘ভারত কি বাত, সবকে সাথ’। তবে তাল কেটেছে দেশের একাধিক ধর্ষণকাণ্ডে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বিক্ষোভে।

Advertisement

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম থেকে মোদি মঙ্গলবার রাতেই লন্ডনে এসে পৌঁছন। হিথরো বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসন। কমনওয়েলথ-ভুক্ত রাষ্ট্রনায়কদের বৈঠক উপলক্ষে মোদির আগমন। ওই রাষ্ট্রনায়কদের অনেকের সঙ্গেই তাঁর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বুধবার সকালেই সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলের সামনে জমায়েত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ভারতীয় বংশোদ্ভূত বহু মানুষ। এরপর ১০, ডাউনিং স্ট্রিটে প্রাতরাশে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানো নিয়ে মোদি আলোচনা সেরেছেন। কথা হয়েছে সীমান্ত পারের সন্ত্রাস, ভিসা সমস্যা ও অভিবাসন নিয়ে। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরানো নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছিল। তা নিয়ে কথা হয় দুই নেতার মধ্যে। বেশ কয়েকটি মউ আন্তর্জাতিক সৌরশক্তি জোটের সদস্য হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে ব্রিটেন। ২০১৬ সালে পাকিস্তানের উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে মোদিকে প্রশ্ন করলে তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সাফল্যে তিনি সেনাবাহিনীকে নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেন। বলেন, “কেউ যদি ভারতে সন্ত্রাস রপ্তানি করে, আমার দেশের নাগরিকদের আক্রমণ করে, তাঁদের যদি সরাসরি যুদ্ধ করার ক্ষমতা না থাকে এবং তাঁরা যদি পিছন থেকে ছুরি মারে, তাহলে তাদের ভাষায় তাদেরকে জবাব দেওয়ার ক্ষমতা মোদি রাখে।” দর্শকরা এরপর ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

Advertisement

[ফের সিরিয়ায় হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবধারিত, চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি পুতিনের]

মোদি আরও বলেন, ভারতে সন্ত্রাস রপ্তানি করলেই তাদের এমন কড়া জবাব দেওয়া হবে, যাতে তারা সহজে ভুলতে না পারে। কোনও অবস্থায় সন্ত্রাস বরদাস্ত করা হবে না। পরে বিদেশমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, লস্কর, জইশ, হিজবুল, হাক্কানি নেটওয়ার্ক, ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কথা হয়েছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী জমানায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়েও সহমত হয়েছেন মোদি-মে। এরপর যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে দেখা করেন মোদি। দু’জনে একসঙ্গে সায়েন্স মিউজিয়ামে ‘বিজ্ঞান ও আবিষ্কারের ৫০০০ বছর’ শীর্ষক প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, যুবরাজের উদ্যোগেই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান প্রধানমন্ত্রী। এখানে উন্নতমানের একটি আয়ুর্বেদ কেন্দ্রের উদ্বোধন হবে। ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয় এই আয়ুর্বেদ কেন্দ্র তৈরি করেছে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী চলে যান অ্যালবার্ট এমব্যাঙ্কমেন্ট গার্ডেনে। দ্বাদশ শতকের লিঙ্গায়ত দার্শনিক বাসবেশ্বরের মূর্তি রয়েছে টেমস নদীর ধারে এই পার্কে। জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তাঁর মূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানান। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী বাকিংহাম প্যালেসে যান এরপর। শেষে ওয়েস্টমিনস্টারের সেন্ট্রাল হলে ভারতীয়দের জমায়েতে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাছাই করা প্রশ্নের উত্তরও দেন মোদি।

দেখুন ভিডিও:

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ