BREAKING NEWS

১৩ চৈত্র  ১৪২৯  মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

আস্তাকুঁড়ে জন্মানো এই মানুষটির উত্থানের কাহিনি জানলে অবাক হবেন

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: June 14, 2017 1:40 pm|    Updated: June 14, 2017 1:40 pm

Dreams of a Refugee : From the Middle East to Everest

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উদ্বাস্তু শিবিরে পৃথিবীর আলো দেখা। ৯ ভাই-বোনকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ। প্যালেস্তাইন থেকে পালিয়ে ব্রিটেন। হোটেলের ওয়েটার, তারপর ফাইভ স্টারের ম্যানেজার। মোস্তাফা সালামেহর গল্প এই পর্যন্ত শুনলে মনে হতে পারে শূন্য থেকে আকাশে ওঠার বৃত্ত বোধহয় শেষ। কাহিনির মোচড় এরপর থেকে। অর্থ, বৈভব নয়, মোস্তাফার দৃষ্টি ছিল আরও অনেক উঁচুতে। পাহাড়ে ওঠার ভূত তাঁর মাথায় চেপে বসে। এক দশকের চেষ্টায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ সাতটি শৃঙ্গ জয় বা গ্র্যান্ড স্ল্যামের অনন্য নজির এখন এই জর্ডনের নাগরিকের দখলে।

[গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তালিবান, ফিঁদায়ে হামলায় মৃত ৫ জঙ্গি]

গত কয়েক বছরে এভারেস্ট অভিযানের সংখ্যা বাড়িয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। যে প্রবণতা দেখে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন পাহাড়ে চড়া কি সহজ হয়ে গেল। কিন্তু যারা শৃঙ্গে ওঠেন তারা জানেন মৃত্যুকে কীভাবে পায়ের ভৃত্য করে এগোতে হয়। শুধু এভারেস্ট নয়, কথাটা একইভাবে মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, এলব্রুস বা ডেনালির মতো বিশ্বের অন্যান্য উঁচু শৃঙ্গগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পৃথিবীর এরকম ৬টি মহাদেশের সাতটি উঁচু শৃঙ্গ ছুঁতে পারলে পর্বতারোহীদের গ্র্যান্ড স্ল্যামের সম্মান মেলে। এখনও পর্যন্ত ১৬ জন এই বিরল কীর্তি ছুঁয়েছেন। পঞ্চদশ ব্যক্তি নিয়ে যত আলোচনা। বিস্ময় মানুষটির নাম মোস্তাফা সালামেহ।

[অপেক্ষার শেষ, এবার আকাশের রং পাল্টাবে NASA]

মোস্তাফার জীবন আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে আসা। তাঁর জন্মের আগে প্যালেস্তাইন থেকে কুয়েতে পালিয়ে আসতে হয়েছিল মোস্তাফার পরিবারকে। উদ্বাস্তু শিবিরে জন্ম। অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থাই ছিল। শৈশবে পেটের তাগিদে মোস্তাফাকে দৌড়াতে হয়েছিল জর্ডনে। সেখানে কিছু করে উঠতে না পারায় আবার পলায়ন। এবার ব্রিটেন। রেস্তোঁরায় ওয়েটার হিসাবে কাজ করা। তারপর স্কটল্যান্ডে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করে পাঁচতারা হোটেলে চাকরি। ৩০ এর কোঠায় এসে ছন্দে ফেরে মোস্তাফার জীবন। ২০০৪ সালে আচমকাই জীবনের পথ অন্য দিকে মোড় নেয়। ধর্মভীরু মোস্তাফা ট্রেকিংয়ের নেশায় মেতে ওঠেন। ফিরে আসেন জর্ডনে। শুরু হয় নতুন জীবন। নেপাল, তিব্বত, উত্তর আমেরিকায় নানা পাহাড়ে তাঁর ট্রেনিং দেখে অনেকেই উন্মাদ বলেছিলেন। আর্থিক সমস্যাও শুরু হয়। জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লা মোস্তাফার খিদেটা বুঝতে পেড়েছিলেন। পাশে পেয়ে যান বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থাকে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেছিলেন, এভারেস্টে উঠতে না পারলে স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দেবেন। ২০০৪ সালে চেষ্টা করেও ব্যর্থ। ২ বছর পর ফের গিয়েও পেটের যন্ত্রণার জন্য সুবিধা করতে পারেননি। তৃতীয়বার অর্থাৎ, ২০০৮ সালে স্বপ্নপূরণ। এভারেস্টের আত্মবিশ্বাস মোস্তাফাকে অনেকটা এগিয়ে দেয়। এরপর মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, ডেনাইলি, অ্যাকনকাগুয়া, ভিনসন ম্যাসিফের মতো দুনিয়ার ৬টি মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়। তারপর সাউথ ও নর্থ পোল ছোঁয়া। পর্বতারোহণের জগতে শিখরগুলো স্পর্শ করে এখন গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক মোস্তাফা। সব পাওয়ার পরও তাঁর খিদে মেটেনি। জর্ডনের মেয়েদের জন্য মোস্তাফার ভাবনার শেষ নেই। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশের মেয়েদের মধ্যে পাহাড়ে চড়ার সখ তিনি উস্কে দিয়েছেন। জর্জনের মেয়েরা এভারেস্ট উঠলে তবেই তাঁর শান্তি।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে