Advertisement
Advertisement

Breaking News

আয়ারল্যান্ড

করোনার থাবায় বহু প্রতীক্ষিত বসন্তও ম্লান, আয়ারল্যান্ডেও গৃহবন্দি বাসিন্দারা

কঠিন পরিস্থিতিতে ফের স্বাস্থ‌্য পরিষেবায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর।

Ireland is under lock down amid Corona Virus threat
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 19, 2020 9:36 am
  • Updated:April 19, 2020 9:36 am

সায়ন্তনী দত্ত, ডাবলিন: মার্চ মাসের শুরুর দিক। প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গেল ডাবলিনে। তিনি এসেছিলেন নর্দার্ন ইতালি থেকে। তখনও করোনা মহামারির সবচেয়ে বেশি প্রকোপ ছিল ইতালিতে, তা বলাই বাহুল‌্য। এরপর কিছুদিন কোনও করোনা সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে কিছুটা স্বস্তিতেই ছিল আয়ারল্যান্ডের মানুষ। কিন্তু বিধি বাম। করোনার থাবা এসে পড়ল এ দেশেও।

রোগীর সংখ‌্যা মোটামুটি একশো পেরনোর আগেই ১৩ মার্চ এ দেশে আংশিক লকডাউনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর। সে সময় তিনি নিজে ছিলেন ওয়াশিংটনে। একই সঙ্গে তিনি বাতিল করে দেন এ দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব সেন্ট প‌্যাট্রিকস ডে উদযাপন। পরে এ মাসে বাতিল হয়েছে ইস্টার উদ্‌যাপনও। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ‌্যালয়গুলিকে সবার আগে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বেশির ভাগ সংস্থাই কর্মীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর অনুমতি দেয়। কিন্তু সংক্রমণ ক্রমাগত বেড়েই চলে। তাই মার্চের শেষ থেকে আয়ারল্যান্ডে পুরোপুরি লকডাউন জারি করা হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবা, সুপার স্টোর ইত‌্যাদির পাশাপাশি ছাড় দেওয়া হয়েছে শরীর চর্চাতেও।

Advertisement

[আরও পড়ুন : ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে থাকলে শাস্তি পেতে হবে’, এবার চিনকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের]

এখনও পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে মোট করোনা আক্রান্ত ১৩,৯৮০। মৃত্যু হয়েছে ৫৩০ জনের। মাত্র ৫০ লক্ষ জনসংখ‌্যার দেশে এই সংখ‌্যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আপাতত ৫ মে পর্যন্ত লকডাউন চলবে। প্রয়োজনে কিছু বিধিনিষেধ হয়তো শিথিল হতে পারে। তবে আয়ারল্যান্ডে ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু লকডাউনের জেরে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তাঁদের জন‌্য সরকার ন্যূনতম ৩৫০ ইউরো সাপ্তাহিক ভাতার ব‌্যবস্থা করেছে। এই ধরনের মানুষের বাড়ি ভাড়ায় মিলছে ছাড়। গৃহহীন মানুষের জন‌্য তৈরি হয়েছে আইসোলেশন সেন্টার। বড় বড় হোটেল এ জন‌্য নিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন‌্য বহু দেশের মতো এখানেও চিন থেকে চিকিৎসা সামগ্রী আনা হয়। যার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ব‌্যবহারের অযোগ‌্য বলে জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ‌্য মন্ত্রক (এইচএসই)।

Advertisement

[আরও পড়ুন : ‘করোনা জয়ীরা ফের আক্রান্ত হতে পারেন’, ভয় ধরাচ্ছে WHO’র বিশেষজ্ঞদের দাবি]

প্রথমদিকে মাস্ক, স‌্যানিটাইজার কেনার ধুম পড়ে গিয়েছিল আতঙ্কে। বাজারে দেখা দিয়েছিল আকাল। ধীরে ধীরে অবশ‌্য সেগুলির জোগান স্বাভাবিক হয়েছে। সুপার স্টোরগুলিতে সতর্কতামূলক ব‌্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিন মিটার বাধ‌্যতামূক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি, একসঙ্গে পাঁচ-সাত জনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, মেটারনিটি হাসপাতালগুলিতেও আলাদা করোনা ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে। যাতে কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা করোনা আক্রান্ত হলে তাঁর পৃথক চিকিৎসা করা যায়। আপাতত অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ছাড়া পরিবারের আর কোনও সদস‌্যকে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, কঠিন পরিস্থিতির জেরে ফের স্বাস্থ‌্য পরিষেবায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর।

এদেশে বহু প্রতীক্ষিত বসন্ত এসে গিয়েছে। সাধারণত, এপ্রিল থেকেই আবহাওয়া ভাল হতে শুরু করে। গাছগুলিতে নতুন পাতা গজায়, ফুল ফুটতে শুরু করে। উজ্জ্বল সূর্যালোকে প্রকৃতি মনোরম হয়ে ওঠে। সমুদ্রের স্বচ্ছ নীল জল যেন সবাইকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কিন্তু এই মুহূর্তে করোনা মহামারিকে হারাতে সবাই এককাট্টা। তাই সেই প্রলোভন উপেক্ষা করে সবাই নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন। মেনে চলছেন মহামারি রুখতে জারি করা সরকারি নির্দেশিকা। কারণ, এই সংযমই একদিন করোনাকে পরাস্ত করবে। এই আশাতেই ধৈর্য ধরছেন আয়ারল্যান্ডে মানুষ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ