Advertisement
Advertisement

সেনা পাঠাক ভারত, আরজি মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নাশিদের

তবে কি ফের ওই দ্বীপরাষ্ট্রে পা রাখবে ভারতীয় সেনা।

Maldives' Ex-President Nasheed seeks Indian military intervention
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 7, 2018 9:41 am
  • Updated:February 7, 2018 9:41 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মালদ্বীপে রাজনৈতিক সংকট চরম আকার নিল। দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও আরও কয়েকজন বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। এই অবস্থায় সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে দেশকে উদ্ধার করতে সরাসরি ভারতের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করলেন মালদ্বীপের ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদ।

[সেনার দখলে মালদ্বীপের পার্লামেন্ট, ২ সাংসদের গ্রেপ্তারিতে অচলাবস্থা দ্বীপরাষ্ট্রে]

Advertisement

পর্যটকদের সবচেয়ে পছন্দের পর্যটনের জায়গা মালদ্বীপে না যেতে নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে চিন ও ভারত সরকার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনও চিনা বা ভারতীয় নাগরিক যেন মালদ্বীপে বেড়াতে না যান।
মঙ্গলবার ভারতপন্থী হিসাবে পরিচিত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নাশিদ বলেছেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। একনায়কতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এই অবস্থায় আমি আরজি জানাচ্ছি, নয়াদিল্লি যেন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাঠিয়ে দ্রুত মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। মালদ্বীপে সংকট কাটাতে এছাড়া কোনও উপায় নেই। ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তার জন্যই মালদ্বীপে ভারতের হস্তক্ষেপ জরুরি।’ তাঁর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের রায় শিকেয় তুলে দিয়ে এবং আইনসভা ভেঙে দিয়ে দেশে অরাজকতা কায়েম করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। অসাংবিধানিক ও অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করেছেন ইয়ামিন। এখন বিক্ষুব্ধ জনতার উপর পুলিশ ও সেনা লেলিয়ে দিয়েছেন। এর এখনই বিহিত করুক ভারত ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি। মালদ্বীপে গণতন্ত্র ফেরাতেই হবে।

Advertisement

নাশিদের দল মালদিভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কলম্বো থেকে ইয়ামিনের ইস্তফা দাবি করেছে। তারা জানিয়েছে, এখনই সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। নাশিদের আশঙ্কা, ক্ষমতা ধরে রাখতে রাজনৈতিক বন্দিদের হত্যারও নির্দেশ দিতে পারেন ইয়ামিন। তাই ভারতের হস্তক্ষেপ করা খুব জরুরি। যদিও ভারতের বিদেশমন্ত্রক মালদ্বীপ নিয়ে টুইট করেছে, মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালিত না হওয়ায় এবং তার জেরে তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় ভারত খুব উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত। সূত্রের খবর, পিছনের দরজার কূটনীতির মাধ্যমে মালদ্বীপে সংকট নিরসনে চেষ্টা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি।

বৃহস্পতিবারই রাজধানী মালেতে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের সরকার অন্যায়ভাবে ন’জন বিরোধী এমপিকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের গ্রেফতারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাই অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করা হল। এই অবস্থায় প্রমাদ গোনেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। কারণ, তাঁকে সরাতে পার্লামেন্টে ইমপিচমেন্ট নিয়ে ভোটাভুটি হলে তিনি হেরে যেতে পারেন। ন’জন এমপি সদ্য মুক্তি পাওয়ায় বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবে পার্লামেন্টে। এমপি-দের মুক্তি রুখে দেন তিনি। আইনসভা ও সুপ্রিম কোর্ট ভেঙে দেন। তাঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আবদুল্লা সায়িদ ও অন্য বিচারপতি আলি হামিদকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন তিনি। গ্রেপ্তার করা হয় মালদ্বীপের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গায়ুমকে।

[সঞ্জয় মিত্রর দৌত্যে ইজরায়েলের কাছ থেকে ৩০০০ ‘স্পাইক মিসাইল’ কিনছে ভারত]

বর্ষীয়ান মামুন হলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অতীতে মালদ্বীপে ভারতের নৌবাহিনী পাঠিয়ে দু’বার সামরিক অভ্যুত্থান থেকে মামুনকে রক্ষা করেছিলেন রাজীব। ইতিমধ্যে পর পর গ্রেপ্তারিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দেশজুড়ে পথে নেমে যানবাহন ও দোকানপাটে ভাঙচুর চালায় ও আগুন লাগায় উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা ও পুলিশ নামায় ইয়ামিনের সরকার। সূত্রের খবর, চিন ও সৌদি আরব ঘনিষ্ঠ আবদুল্লা ইয়ামিন সরকারের পতন চায় নয়াদিল্লি। ভারত চায় নাশিদকে ক্ষমতায় বসাতে। নয়া সংকট ভারতের সামনে সেই সুযোগ এনে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ