সুপর্ণা মজুমদার: দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গিয়েছে। সুবজের চাদরে জমতে শুরু করেছে বিন্দু বিন্দু হিমের পরশ। ভোরের আলতো শীতের ছোঁয়া জানান দিচ্ছে সময় এসে গিয়েছে। সময় এসে গিয়েছে তাঁর আসার। পুত্র-কন্যা নিয়ে বাপের বাড়ি আসবেন উমা। আর তাঁর আগমনে বাঙালি মেতে উঠবে আনন্দে, উৎসবে। উৎসবের এই জোয়ারে গা ভাসিয়েছেন ওঁরাও। বসত বিদেশে হলেও মনে রয়েছে সেই বাঙালিয়ানা যা আজও বচ্ছরকার চারটে দিন চায় ঢাকের শব্দ, ডাকের সাজ আর একচালার এই প্রতিমা। মা দুর্গার আরাধনায় এবারও শামিল হয়েছেন সুইজারল্যান্ডের জুরিখের বাঙালিরা।
[পুজোয় বাংলার ব্রতকথার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে শ্যামবাজার নবীন সংঘ]
আজ থেকে নয়, ২০০৪ সাল থেকে চারদিনের এই উৎসবে মাতেন সুইজারল্যান্ডের বাঙালিরা। এই চারটে দিনের জন্যই সারা বছর ধরে চলে প্রস্তুতি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের যাবতীয় দ্বায়িত্ব সামলায় ‘স্পর্শন’ সংগঠন। ‘স্পর্শন’-এর ছোঁয়াতেই ২০০৯ সাল থেকে আল্পস কিনারে নতুন করে বাঙালিয়ানার মজেন দূরদেশের আপনজনেরা। এবার আয়োজিত হয়েছিল প্রাক-দুর্গাপূজার বিশেষ অনুষ্ঠানও। দুই দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক সুইস বেঙ্গলি ফেস্টিভ্যালের মেতেছিলেন প্রবাসী বাঙালিরা। যাতে সংগীত পরিবেশন করেছিলেন সদ্য জাতীয় পুরস্কার-প্রাপ্ত শিল্পী ইমন চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ও। মঞ্চে সুইজারল্যান্ডের লোকগীতিকে তুলে ধরেন স্থানীয় শিল্পী মালা গাসম্যানও।
[আমার দুগ্গা: পুজোয় সেই চারদিনের প্রেম ভোলা যায় না]
ছিল বাংলার বিভিন্ন শিল্পকীর্তির প্রদর্শনী। বাঙালি খাবার চেখে দেখার সুবর্ণ সুযোগ। একই সঙ্গে ছিল বাঙালি রান্না শেখার সুযোগও। বাংলার উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয় অর্থ সাহায্যও। এভাবেই স্থান-কাল-পাত্র ভুলে চার দিনের মায়ের আরাধনায় মাতবেন ওঁরাও। ষষ্ঠীর বোধন, অষ্টমীর অঞ্জলি, নবমীর সন্ধ্যারতি সবই হবে নিয়ম মেনে। গতবারের মতো এবারও আল্পসের পাদদেশ এভাবেই নতুন করে সেজে উঠবে শারদীয়ার আমেজে।
তথ্য সরবরাহ ও ছবি সৌজন্যে – মহুয়া মুখোপাধ্যায়
[সাহিত্যের মহোৎসব: পাঠকের হাতে ‘শারদীয় সংবাদ প্রতিদিন’]