সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের অংশ নিজের বলে দাবি করে প্রকাশ করা নয়া মানচিত্র নিয়ে পিছু হটল নেপাল। বুধবার, ওই মানচিত্রের সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার দরজা খুলে দিতে সংসদে বিল পেশ করল না প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার। শাসকদলের অন্দরে বিরোধিতা ও বিরোধীদের আরও সময় চাওয়ে নেপাল পার্লামেন্টে পিছিয়ে গেল নয়া মানচিত্র নিয়ে আলোচনা।
[আরও পড়ুন: তিব্বতকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দিতে বিল পেশ মার্কিন কংগ্রেসে, চাপে চিন]
নতুন মানচিত্র নিয়ে কয়েকদিন ধরেই নয়াদিল্লি ও কাঠমাণ্ডুর মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এককালের ‘বন্ধু’ দেশটি যুদ্ধের হুঙ্কার পর্যন্ত দিয়ে ফেলেছে। দিনকয়েক আগেই ভারতীয় ভূখণ্ডের লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ এবং কালাপানিকে নেপালের মানচিত্র দেখিয়েছে ওলি প্রশাসন। পাশাপাশি, সীমান্তে ভারতের তিনটি এলাকাকে নেপালেরই বলে দাবি করেছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। মঙ্গলবার কাঠমাণ্ডুতে সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে ওলি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি সংসদেকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানির মতো তিনটি এলাকার বিষয়টি চাপা পড়ে যাবে না। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের অন্দরে ভারতের বিরুদ্ধে অতি-জাতীয়তাবাদী মনোভাবের জিগির তুলে নিজের মসনদ পোক্ত করার উদ্দেশ্য রয়েছে ওলির। তবে নয়া মানচিত্র নিয়ে নেপালের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐক্যমত গড়ে ওঠেনি। গোর্খা ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে ওলি নিজের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করছেন। একাংশের মতে মানচিত্র নিয়ে চলা সংঘাতে ওলিকে রয়েসয়ে পদক্ষেপ করার উপদেশ দিয়েছেন শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তথা দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল ওরফে ‘প্রচণ্ড’। তার কথা মেনেই সংসদে আপাতত মানচিত্র সংক্রান্ত বিল পেশ করা থেকে বিরত থেকেছে সরকার। এদিকে, অনেকেই আবার মনে করছেন, গোটা ঘটনাচক্রের নেপথে রয়েছে চিন। লাদাখে বিবাদ উসকে দিয়ে ভারতকে চাপে রাখতে নেপাল সীমান্তেও প্রচণ্ডকে হাতিয়ার করে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল চিন। এবার লাদাখ নিয়ে বেজিং সুর নরম করায় একই পথে হাঁটল কাঠমাণ্ডু।