সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজোড়া নাম কাকে বলে, তা জীবদ্দশায় জানতে পারেননি তিনি। দেশের লোকেদের কাছ থেকে সম্মান পেলেও বিশ্ব তাঁকে প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি। বেতার তরঙ্গ আবিষ্কার করেও তিনি আড়ালেই রয়ে গিয়েছিলেন। কৃতিত্ব নিয়ে গিয়েছিলেন মার্কনি। কিন্তু বেটার লেট দ্যান নেভার। মৃত্যুর এত বছর পর আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস সম্ভবত পেতে চলেছেন তাঁর হৃত গৌরব। ইংল্যান্ডে প্রচলিত হতে পারে আচার্যের ছবিযুক্ত মুদ্রা।
কাকতালীয় ঘটনা বোধহয় একেই বলে। নাকি সমাপতন? যে ইউরোপ মহাদেশের এক বিজ্ঞানীকে একদিন জগদীশচন্দ্র বোসের আবিস্কৃত বেতার যন্ত্রের আবিষ্কর্তা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই ইউরোপেই এবার বেতারের জন্যই সম্মানীত হতে চলেছেন আচার্য। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড জানিয়েছে, ৫০ ব্রিটিশ পাউন্ডের নোটে কার ছবি থাকবে, তা নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। যে তালিকা তাতে জমা পড়েছে, সেখানে রয়েছে ভারতীয় এই বিজ্ঞানীর নাম। নিজেদের ওয়েবসাইটে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড জানিয়েছে, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত তাদের কাছে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মনোনয়ন জমা পড়েছে। তার মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ১৪ হাজার নাম। এর মধ্যেই রয়েছেন আচার্য।
[ কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে বিমান ওড়াল দুই কিশোর! ]
কেন উঠল জগদীশচন্দ্রের নাম?
আধুনিক বিজ্ঞানের পথিকৃত তিনি। তার ছাড়াও যে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়, তা তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন। আবিষ্কার করেছিলেন আধুনিক বেতার তরঙ্গ। এটি ছাড়া ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সম্ভব ছিল না। আর এই সংযোগ ব্যবস্থা আবিষ্কৃত না হলে ওয়াই-ফাইও আসত না।
মার্কনি বেতার আবিষ্কার করেন ১৯০১ সালে। কিন্তু তার বহু আগে জগদীশচন্দ্র বোস বেতার তরঙ্গ আবিষ্কার করেন। কিন্তু তিনি এর বাণিজ্যিকিকরণ করেননি। উলটে বাকি গবেষকদের এই তরঙ্গ নিয়ে আরও গবেষণা করতে বলেছিলেন। ১৮৯৬ সালে তাঁর সঙ্গে মার্কনির দেখা হয়। তখন মার্কনি ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফ নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, ব্রিটিশদের এই পরিষেবা দিয়ে সাহায্য করা। জগদীশ বোসের বেতার তরঙ্গ তাঁকে এই রাস্তায় অনেকটা এগিয়ে দেয়। নিজের লেখায় মার্কনি সেকথা উল্লেখও করেছেন। এছাড়া জগদীশচন্দ্র বোস পলিম্যাথ, বায়োলজিস্ট, বায়োফিজিস্ট, বোটানিস্ট ও আর্কিওলজিস্টও ছিলেন। বায়োলজিতেও তাঁর অবদান অনেক। তিনিই সিসমোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন। কৃষি বিজ্ঞানেও তাঁর অনেক অবদান রয়েছে।
[ আকাশে ভাসছে বিমান, ককপিটে ঘুমিয়ে পাইলট! তারপর… ]