সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী। শেষপর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করে জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদকে গৃহবন্দি করেছিল পাক সরকার। তবে কয়েকদিন আগেই গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়েছে ওই জঙ্গিনেতা। আর এবার নিজের সেনা তৈরি করায় মন দিয়েছে হাফিজ সইদ। সম্প্রতি গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, হাফিজ সইদকে এ কাজে সহায়তা করছে নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা। সেই সঙ্গে রয়েছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং পাক সেনার পরোক্ষ মদতও।
[যৌন হেনস্তার প্রতিবাদ, প্রকাশ্যে উন্মুক্ত স্তন দিয়েই ব্যক্তিকে মার মহিলার]
কিন্তু কেন হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই জঙ্গি নেতা? জানা গিয়েছে, পাক সরকারের পরোক্ষ মদত থাকলেও জীবনসংশয় রয়েছে হাফিজ সইদের। তাই ইতিমধ্যে তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সেটা আরও জোরদার করতে লস্করের জঙ্গিদের আরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এরপর তাদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে জামাত নেতার নিরাপত্তার দায়িত্ব। এমনকী লাহোরের বাইরে গেলেও সঙ্গে থাকবে ওই বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনী। জানা গিয়েছে, তাদের হাতে থাকবে অত্যাধুনিক সব মারণাস্ত্র। ইতিমধ্যে নতুন জঙ্গিদের প্যারাডে যোগ দিতে গুজরানওয়ালা ঘুরে গিয়েছে এই হাফিজ সইদ।
[বাংলাদেশের পিঠে মেলায় জঙ্গি হানার আশঙ্কা]
দশমাস গৃহবন্দি থাকার পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে হাফিজ। আর বেরিয়েই নিজের আসল রূপ দেখিয়েছে সে। জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের ঘোষণার পরই আমেরিকাকে একহাত নিয়েছে এই জঙ্গিনেতা। আর এতেই বেজায় ক্ষাপ্পা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বিগত কয়েকমাসে হাফিজের কারণে পাকিস্তানের একাধিক আর্থিক বরাদ্দ বাতিল করেছে ওয়াশিংটন। এছাড়া হাফিজ এবং তাঁর নয়া দল মিল্লি মুসলিম লিগকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এদিকে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ওসামা বিন লাদেনকে অ্যাবটাবাদে ঢুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, হাফিজের ক্ষেত্রেও সেরকম কিছু করতে পারে আমেরিকা। এমনকী আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কথা ভেবে তাতে সায় দিতে পারে পাকিস্তানও। আর তাই নিজের জন্য নয়া বাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাফিজ। কারণ আমেরিকার পাশাপাশি নিজের ঘরেও জীবনসংশয়ে ভুগছে এই জঙ্গি নেতা।
[মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যে নারী, মৌলবাদীদের রোষে শিল্পী]
সম্প্রতি মিল্লি মুসলিম লিগ (এমএমএল) নামে নয়া সংগঠন খুলে ২০১৮-র সাধারণ নির্বাচনে লড়ার ঘোষণাও করেছে সে। যদিও পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন গত ১১ অক্টোবর এক নির্দেশে এমএমএলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। যার পর আদালতে চ্যালেঞ্জও জানিয়েছে এমএমএল। চুপ করে বসে নেই পাক সরকারও। মিল্লি মুসলিম লিগের আবেদন খতিয়ে না দেখে তা খারিজ করে দেওয়ার জন্য আদালতে পালটা আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। পাক অভ্যন্তরীণ মন্তকের পেশ করা উত্তরে বলা হয়েছে, এই সংগঠনটি নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার সৃষ্টি। এমএমএল রাজনৈতিক দল হিসাবে স্বীকৃতি পেলে পাকিস্তানে ‘রাজনীতিতে হিংসা, উগ্রপন্থা মাথাচাড়া দেবে’। যদিও এই মামলার রায় ঘোষণা এখনও করা হয়নি। এখন দেখার হাফিজ সইদকে নিয়ে পরবর্তী সময়ে কী অবস্থান নেয় পাকিস্তান।