Advertisement
Advertisement

Breaking News

ধর্ম নিয়ে এ কী বক্তব্য আইসল্যান্ডের আইনসভার! শুরু বিতর্ক

ধর্ম আর ধর্মীয় মোহ গুলিয়ে ফেলছেন অ্যান্ড্রু বানার্ড, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

'Religions are like weapons', says Iceland parliament
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 9, 2019 9:11 pm
  • Updated:March 9, 2019 9:11 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণহত্যার অস্ত্রের মতোই বিপজ্জনক ধর্ম। আইসল্যান্ডের আইনসভায় এই মর্মে ভোটাভুটি হয়ে গেল। হিন্দু, ইসলাম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইহুদি – সব ধর্মকেই এর আওতায় এনে পার্লামেন্ট সদস্য অ্যান্ড্রু কানার্ডের বক্তব্য, পরমাণু অস্ত্র গণহত্যার জন্য ঠিক যতটা অব্যর্থ, তেমনই ধর্মও মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাঁর মতে, রাসায়ানিক বা পরমাণু অস্ত্র দিয়ে বড় মাপের হত্যা নিশ্চিত করা যায়। আর সম্প্রতি ধর্ম এমনভাবে মানুষকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে, তা হত্যারই শামিল।

লন্ডনের রাস্তায় বুক চিতিয়ে ঘুরছেন ‘পলাতক’ নীরব মোদি, প্রকাশ্যে ভিডিও

Advertisement

ধর্মবিশ্বাস, ধর্মীয় আচরণ অনেকটাই মানুষকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে পার্লামেন্টে বক্তব্য পেশ করেছেন অ্যান্ড্রু কানার্ড। তাঁর কথায়, ধর্মীয় অন্ধতাই জেহাদের জন্ম দেয়। বহু যুগ আগেও ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধও মানব সভ্যতাকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে। আর ইদানিং এই ধর্মান্ধতা থেকেই হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে অনেকে। কানার্ডের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ইউরোপ মহাদেশের শান্তিপ্রিয় দেশগুলিতে সম্প্রতি জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কথাই বলতে চাইছেন। তাই তাঁর পরামর্শ, পূর্বপ্রজন্ম বাহিত ধর্মীয় ভাবধারা, আচার-আচরণ ঝেড়ে ফেলা দরকার এই প্রজন্মের। তবে নিজের দেশের ধর্মীয় দিকটাকেও বাদ দেননি আইসল্যান্ডের এই পার্লামেন্ট সদস্য। একইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন, “আমাদের এখানে খ্রিস্ট ধর্মের আধিক্য বেশি। কিছুদিন আগে এই ধর্মের বিষয়েও আমরা একই কথা বলেছি। আমরা মনে করছি, মানুষকে এবিষয়ে এবার বোঝানো দরকার যে ধর্মের মোহে আটকে পড়া একটা মানসিক বিকারমাত্র এবং এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।” এ প্রসঙ্গে আইসল্যান্ডের আইনসভার পরামর্শ, একাধিক ধর্মের অবসান ঘটিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা হোক।

Advertisement

iceland-parl

খুলল ইমরানের মুখোশ, পাকিস্তানে সক্রিয় ২২টি জঙ্গি শিবির

তবে আইসল্যান্ডের পার্লামেন্ট সদস্য অ্যান্ড্রু কানার্ডের এই বক্তব্য একাধিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, প্রকৃত ধর্মকে বুঝতে ভুল করছেন কানার্ড। ধর্ম আর ধর্মের মোহকে গুলিয়ে ফেলেছেন। যে যে ধর্মের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন, তার প্রতিটির মধ্যেই একাধিক ইতিবাচক দিক আছে। হিন্দু ধর্মকে কাঠগড়ায় তুললে, প্রাচ্য সংস্কৃতিতে তার দর্শনের ভাগ, যা পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকেও অনেকাংশে উদ্বুব্ধ করেছে, সেটিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়। ঠিক একইভাবে বৌদ্ধধর্মে মোহমুক্তির দিক, খ্রিস্টধর্মের পরম করুণার দিক, ইসলাম ধর্মের শান্তিবাদী দিকটি এখানে উপেক্ষিত হয়েছে। যেমন অ্যান্ড্রু কানার্ড ধর্মীয় অন্ধতা বা মোহকে পরমাণু অস্ত্রের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, গণহত্যাকারী। প্রশ্ন উঠছে, বিজ্ঞানের অবদান কি শুধুই পরমাণু অস্ত্র? যদি তা না হয়, তাহলে ধর্মকেই বা কীভাবে শুধুমাত্র মোহ দিয়েই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে? তাঁদের বিশ্লেষণ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রয়োগই ভাল অথবা খারাপ নির্ধারণ করে। সেভাবেই ধর্ম নয়, ধর্মের অপপ্রয়োগের জন্যই হাতে অস্ত্র তুলে জেহাদ তৈরি হয়, বাঁধে ধর্মযুদ্ধ। আবার ধর্মকে কুটিলভাবে ব্যবহার করে কেউ কেউ ক্ষমতা ধরে রাখতেও সক্রিয় হন। সেইদিকটিও ভেবে দেখার মতো। আইসল্যান্ড আইনসভার সদস্য অ্যান্ড্রু কানার্ডের বক্তব্যের নিশানায় তাঁরাও আছেন বলে মনে করছেন আরেক মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ