Advertisement
Advertisement

Breaking News

দুই জইশের পৃথক হানায় রক্তাক্ত ইরান-কাশ্মীর, দায় ঝাড়ল পাকিস্তান

নিষিদ্ধ সংগঠন ‘জুনদুল্লা’র নাম বদল।

Terror attack: Pakistan denies all claims
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:February 15, 2019 10:08 am
  • Updated:February 15, 2019 1:35 pm

মৈনাক মণ্ডল: দক্ষিণ-পূর্ব ইরান ও দক্ষিণ পশ্চিম পাকিস্তানের বালুচিস্তান সীমান্ত হল ইসলামিক সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুড়ঘর। গত এক দশকে এই সীমান্ত এবং পাকিস্তানের জমি ব্যবহার করে, পাক সেনাদের সক্রিয় সাহায্যে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি সংগঠন অতীতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের উপর।

শিয়া মুসলিম রাষ্ট্র ইরানের এলিট সামরিকবাহিনী রেভোলিউশনারি গার্ডের উপর অতীতে হামলা চালিয়েছে জুনদুল্লা। জুনদুল্লা শব্দের অর্থ, আল্লার সেনা। এরা ইসলামিক স্টেটের মতোই নৃশংস জঙ্গি গোষ্ঠী। শিয়া মুসলিম ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের দুনিয়া থেকে মুছে ফেলার জন্যই এরা জেহাদ চালাচ্ছে।

Advertisement

[কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় শহিদ হাওড়ার জওয়ান, বাড়ি ফিরছে কফিনবন্দি দেহ]

ইরানের চাপে ও হুমকিতে জুনদুল্লাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু তারাই এখন নাম বদলে হয়েছে ‘জইশ-আল-আদিল’। পাক গুপ্তচরসংস্থা আইএসআইয়ের এক শ্রেণির অফিসারদের সক্রিয় মদত রয়েছে এদের প্রতি। কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ঢুকে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ হত্যা করেছে ৪৪ জন ভারতীয় আধাসেনাকে। তার ২৪ ঘণ্টা আগেই ইরানে ঢুকে হামলা চালিয়ে ২৭ জন ইরানি সেনা কমান্ডোকে হত্যা করেছে জইশ-আল-আদিল। দুই জইশের পৃথক হামলার যোগসূত্র একটাই। তা হল, পাকিস্তান।

Advertisement

পাকিস্তান সরকার প্রথমেই সব দায় ঝেড়ে ফেলে দায়সারা বিবৃতি দেয়, হামলাকারীরা ‘নন স্টেট অ্যাক্টর’। অর্থাৎ এসব ঘটনায় পাকিস্তানের সেনা বা সরকারের কোনও দায় নেই। নন স্টেট অ্যাক্টররা হল মূলত সন্ত্রাসবাদী, যাদের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই পাকিস্তান সরকারের। শুধু তাই নয়, ‘ঠাকুরঘরে কে রে? আমরা তো কলা খাইনি’ গোছের চালাকি করে ইসলামাবাদ আগ বাড়িয়ে এবারও বিবৃতি দিয়েছে, “এই সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা করছি আমরা। কোনও সাহায্য চাইলে বলুন, আমরা সবরকমভাবে আপনাদের সাহায্য করছি।” বরাবর এই বিবৃতি দিয়ে আফগানিস্তান, ভারত ও ইরানের কাছে নিজের ভাবমূর্তি সাফ রাখতে চায় পাক সরকার। কিন্তু পাক সেনা ও আইএসআই ভালই জানে যে, এক, বুধবার ইরানের রেভলিউশানির গার্ডের উপর হামলার নীল নকশা কারা কখন কোথায় তৈরি করেছিল। দুই, ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বদলা নিতে বৃহস্পিতবার কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গিদের ভয়াবহ হামলার নকশা সযত্ন কারা বানিয়েছিল?

আসলে ‘দার-উল-হারব’ (অ-ইসলামিক ভূখণ্ডকে) ‘দার-উল-ইসলাম’ (ইসলামিক ভূখণ্ড) বানাতে জেহাদ চালাচ্ছে পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি। সেখানে শিয়া মুসলিম, আহমদিয়া, মোহাজির, ইয়াজিদি ও হাজারা মুসলিমদের খতম করাই তাদের লক্ষ্য। ‘প্যান ইসলামিক’ রাষ্ট্র বানাতে সব শক্তি, ক্ষমতা, অর্থ ব্যয় করছে পাক সেনা ও আইএসআই। এই বৃহত্তর ইসলামিক রাষ্ট্র হবে শুধুমাত্র সুন্নি মুসলিমদের জন্য বৃহত্তর জন্নত বা স্বর্গ। যার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকবে ইসলামাবাদের হাতেই।

২০০৮ সালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা ও সেনাবাহিনীতে গণহত্যা, আফগানিস্তানে তালিবান ও ইসলামিক স্টেটকে তিন দশক ধরে মদত দিয়ে অস্থিরতা জিইয়ে রাখা, কাশ্মীরে তিন দশক ধরে লাগাতার জেহাদ, ইরানে শিয়া সেনাদের পর পর হত্যা আসলে এক সুতোয় গাঁথা মালা। এই মালা জপছে পাক সেনা। জেহাদের নামে ইসলামকে বদনাম করার ওই সব ঘটনার কারিগর রাওয়ালপিন্ডির সেনা কর্তারা। নিজেদের হাতে তৈরি ‘নন স্টেট অ্যাক্টরদের’ কাঁধে বন্দুক রেখে পাকিস্তানের মানচিত্রটা আরও বাড়াতে চাইছেন তাঁরা। এদের চক্রান্তেই রক্ত ভাসল ইরান ও কাশ্মীর।

[জঙ্গি হামলার বদলা চাই, ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দাবি ক্ষুব্ধ দেশবাসীর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ