Advertisement
Advertisement

Breaking News

দুর্ভিক্ষে ধুঁকছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন, অভুক্ত ৪ লক্ষ মানুষ

খিদে মেটাতে ভরসা বুনো লতা, পিঁপড়ের ডিম৷

War torn Yemen suffers Mass Hunger
Published by: Tanujit Das
  • Posted:October 23, 2018 3:04 pm
  • Updated:October 23, 2018 3:09 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে ধুঁকছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেন। রাজধানী সানার অভিজাত এলাকায় তীব্র গরম, লোডশেডিং, জ্বালানির অভাব নিত্যদিনের ঘটনা। খাবার নেই। দুর্ভিক্ষ, জল সংকট চরমে। শহর এলাকাগুলিতে লাটে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কয়েক বছর ধরে হয়ে চলা গৃহযুদ্ধের জেরে গোটা দেশজুড়েই এখন বারুদের গন্ধ। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট অনুাযায়ী, খিদের জ্বালায় বুনো লতাপাতা ফুটিয়ে খেতে বাধ্য হচ্ছেন ইয়েমেনের নাগরিকরা। কোথাও কোথাও বালির গর্ত থেকে পিঁপড়ে ও পিঁপড়ের ডিম বের করে তা সেদ্ধ করে খাচ্ছেন মানুষজন। ধুঁকতে থাকা শিশুদের দেখে শিউরে উঠছেন ত্রাণকর্মীরা।

[খুলল বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু, তিন ঘণ্টার পথ যাওয়া যাবে ৩০ মিনিটেই]

Advertisement

গত কয়েক বছরের নিরন্তর গৃহযুদ্ধের প্রকোপে খাদ্য উৎপাদন শিকেয় উঠেছে ইয়েমেনে। তার সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে দেশের উত্তর প্রান্তের গ্রামগুলিতে। উত্তর ইয়েমেনের আসলাম জেলার স্বাস্থ্য শিবিরে ভিড় করছে অস্থি-চর্মসার শিশুর দল। আসলে সাম্প্রতিককালে দুর্ভিক্ষপীড়িত নামিবিয়া, ইথিওপিয়া, সুদানের সঙ্গে ফারাক নেই ইয়েমেনের। হাড় জিরজিরে শরীর, কুঁচকে যাওয়া ত্বক আর ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ নিয়ে ইয়েমেনের শিশুরা দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। আসলাম প্রদেশে চলতি বছরে অন্তত ২০টি শিশু অপুষ্টির শিকার হয়ে মারা গিয়েছে। সারা দেশের হিসাব ধরলে সংখ্যাটি হাজারেরও বেশি বলে মনে করছেন ত্রাণকর্মীরা। এলাকার এক গ্রামে খিদের তাড়ায় মায়ের দিকে হাত বাড়াতে দেখা গিয়েছে ৭ মাস বয়সি শিশুকন্যা জারাকে। কিন্তু অপুষ্টির কারণে তাকে স্তন্যপান করাতে অপারগ তার হাড্ডিসার জননী। খিদের তাড়ায় মায়ের দিকে হাত বাড়াচ্ছে অপুষ্টিতে ভোগা শিশু। হাতে এক মুঠো বালি। চারদিকে ভন ভন করছে মাছি। ধুঁকতে থাকা হাড্ডিসার কালো শিশুদের চারপাশে চরে বেড়াচ্ছে বিষাক্ত গিরগিটি।

Advertisement

[কাশ্মীরে নিহত জঙ্গির স্মরণসভা পাকিস্তানে, হাজির হাফিজ সইদ]

আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার চিকিৎসার পরে আপাতত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন জনৈকা জারা। তবে কিছুদিনের মধ্যেই ফের অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে নেতিয়ে পড়েন। ফলে তাঁর মা শিশু সন্তানকে বুকের দুধ তো দূর অস্ত, মুখে জলটুকুও তুলে দিতে পারছেন না। এদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি বা মোটরবাইক ভাড়া করতে অসমর্থ তার দরিদ্র বাবা-মা। শেষ পর্যন্ত হয়তো মৃতের সংখ্যা বাড়ানোই হবে এই শিশুর ভবিতব্য। আসলাম জেলার ক্রমবর্ধমান অপুষ্টি থেকে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক ত্রাণ ব্যবস্থায় বেশ কিছু ফাঁক থেকে যাচ্ছে। তবু এই ত্রাণ সাহায্যের কারণেই এখনও পর্যন্ত তা মহামারীর আকার ধারণ করতে পারেনি। তবে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের ফলে এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি যে আসতে বাধ্য, তা আগাম সতর্কতায় জানিয়েছিলেন মানবাধিকার কর্মীরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনস্থ সংস্থাগুলির কাছে বিষয়টি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সংবাদসংস্থা জানালে তারা বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করে। কী কারণে চূড়ান্ত অপুষ্টিতে ভোগা পরিবারগুলির কাছে ত্রাণ পৌঁছচ্ছে না, তার অনুসন্ধান শুরু করেছে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় উদ্ধারকারী দলগুলি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ