Advertisement
Advertisement

কোথায় মৌলানা মাসুদ? পরস্পর বিরোধী তথ্যে বাড়ছে বিভ্রান্তি

জঙ্গিদের আড়াল করার খেলা খেলছে পাকিস্তান!

Where is Masood Azhar?
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 5, 2019 8:54 am
  • Updated:March 5, 2019 8:54 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গিদের আড়াল করার খেলা খেলছে পাকিস্তান। বালাকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর সফল অভিযানের পর মাসুদ আজহারের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছিল। মাসুদ জীবিত না মৃত? সেই প্রশ্ন নিয়ে রবিবার তোলপাড় হচ্ছিল ভারত ও পাকিস্তান।

[হামলার আগে বালাকোটে সক্রিয় ছিল ৩০০টি মোবাইল]

Advertisement

সোমবার অসমর্থিত সূত্রের খবর, মাসুদকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও গোয়েন্দাদের কাছ থেকে আড়ালে রাখতে তড়িঘড়ি নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। এই মুহূর্তে তার সঠিক অবস্থান জানা না গেলেও বিভিন্ন পাকিস্তানি টিভি চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত খবর অনুযায়ী, মাসুদকে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরের কোঠাগনিতে গোপন জায়গায় সরানো হয়েছে। কিন্তু সেখানেই যে মাসুদ রয়েছে এমন কোনও নিশ্চিত খবর নেই। কারণ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ধারণা, ভারতীয় গুপ্তচরদের স্লিপার এজেন্ট বা ভারতীয় বাহিনী মাসুদের অবস্থান জানতে পারলেই তাকে খতম করে দেবে। তাই ‘কোলের ছেলেকে’ আড়াল করতে তৎপর হয়েছে ইসলামাবাদ। তাদের ধারণা, মাসুদের সঠিক অবস্থান জানতে পারলে ফের বিমান হামলা চালাতে পারে ভারত সরকার। ফলে মাসুদ আজহারকে নিয়ে চাপ বাড়ছে পাক সরকারের ওপরে। বিষয়টি নিয়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে সেনা হাসপাতালে মাসুদের থাকার খবর প্রমাণ হয়ে গেলে আরও চাপে পড়তে হবে পাকিস্তান সরকারকে। তাই সাত তাড়াতাড়ি জইশ প্রধানকে বাহাওয়ালপুরে সরানো হল বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে সর্বক্ষণ তার সঙ্গে রাখা হয়েছে চিকিৎসক ও নেফ্রোলজিস্টকে। এমনিতেই দুটি কিডনি বিকল হওয়ায় প্রচণ্ড অসুস্থ মাসুদ। তবে এখন সে নিরাপদে ও সুস্থ আছে বলে জইশ-ই-মহম্মদ আগেই দাবি করেছিল। সূত্রের খবর, পাক সেনার নির্দেশে মাসুদের নিরাপত্তায় রয়েছে ১০ জন স্পেশ্যাল কমান্ডো।

Advertisement

মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করতে গত ১০ বছরে এই নিয়ে চতুর্থবার প্রস্তাব পেশ হতে চলেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। প্রস্তাব আনছে ফ্রান্স। সমর্থন করবে ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া। সম্ভবত চিনও এবার তাদের পুরনো অবস্থান পুরো বদলে মাসুদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবকে সমর্থন করতে পারে। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে পাকিস্তান রবিবারই জানিয়েছে, তারা মাসুদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করবে না।

এতদিন ভেটো প্রয়োগ করেই মাসুদকে রক্ষা করত চিন। চিনের প্রবল বিরোধিতার কারণেই মাসুদের উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়নি। কিন্তু পুলওয়ামায় হামলার জেরে বাস্তব পরিস্থিতির চাপে পড়ে চিনও মুখ ফিরিয়েছে পাকিস্তানের দিক থেকে। মনে করা হচ্ছে, চিন এবার মাসুদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবকে সমর্থন করতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ নম্বর নিষেধাজ্ঞা কমিটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। এই কমিটি তালিবান, আল কায়দা, চেচেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এই কমিটির কাছেই যাবে মাসুদ সংক্রান্ত প্রস্তাব। এদিকে, মাসুদের সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান ‘আড়াল করে চলেছে’ মুম্বইয়ে ২০০৮ সালে জঙ্গি হামলায় জড়িত লস্কর-ই-তইবার রাজনৈতিক সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া ও ফালাহ-এ-ইনসায়িত সংগঠনকে। তাদের শুধু ‘নজরদারি তালিকায়’ রেখেই দায় সারল ইমরান খান সরকার। সোমবার প্রকাশিত জঙ্গি সংগঠনের নয়া তালিকায় তাদের নাম রয়েছে নজরদারি করতে। কিন্তু একবারও ওই দুই ভয়ঙ্কর সংগঠনকে ‘নিষিদ্ধ করার’ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করেনি ইমরান খান সরকার। ফলে নাম পালটে ফের স্বমিহমায় ফিরে আসার সুবর্ণ সুযোগ থাকল ওই দুই সংগঠনের।

পাকিস্তানের ১৯৯৭ সালের ‘সন্ত্রাস দমন আইন’ অনুসারে বহুবার ওই দুই প্রভাবশালী সংগঠনের যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথা ঘোষণা করেছিল পাক সরকার। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি। কারণ ২০১৮ তে লাহোর হাইকোর্ট ও পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট রায় দিয়েছিল, কোনও অবস্থাতেই ওই দুই সমাজিক সংগঠনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। এরপর ইমরানের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের যে বৈঠক হয়েছিল তাতে ঠিক হয়, ওই দুই সংগঠনকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। লস্কর ঘনিষ্ঠ ওই দুই সংগঠনের প্রায় ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, অসংখ্য কর্মী সমর্থক, সদস্য, হাসপাতাল, মাদ্রাসা পাকিস্তানে রয়েছে। এদের পিছনে ব্যাপক জনসমর্থনও রয়েছে। সর্বোপরি সমর্থন রয়েছে আইএসআইয়ের।

[বেঁচে আছে জঙ্গি মাসুদ, বিবৃতি দিয়ে দাবি জইশ-এর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ