Advertisement
Advertisement
Kalimpong man cultivates kashmiri apple

গাছপ্রেমীর নেশায় কৃষিক্ষেত্রে চমক, এবার কালিম্পংয়েই বেড়ে উঠছে কাশ্মীরের আপেল

পাহাড়ে কৃষি, উদ্যানপালন, পর্যটনের নতুন দিশা দেখাচ্ছে কাশ্মীরের আপেল।

Kalimpong man cultivates kashmiri apple । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 29, 2023 3:49 pm
  • Updated:July 29, 2023 3:49 pm

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কাশ্মীরের আপেলের স্বাদ এবার কালিম্পংয়েই মিলছে। স্রেফ একজনের গাছের শখ বা হবি। সেটাই এখন বদলে দিতে পারে এখানকার আর্থসামাজিক পরিবেশ। আপেলকে ঘিরে পাহাড়ে কৃষি, উদ্যানপালন, পর্যটনের নতুন দিশা পেতে চলেছে।

কাশ্মীর বা সিমলা গেলে আপেল বাগানে ঘুরতে যান না এমন পর্যটক মেলা দুষ্কর। আমাদের রাজ্যে পাহাড়ের অর্থাৎ দার্জিলিংয়ের কমলালেবু বিখ্যাত। দার্জিলিংয়ের সিটং কমলালেবু বাগানের জন্য পর্যটকদের ভিড় বাড়িয়েছে। এবার সেই পাহাড়ের সাবেক দার্জিলিং জেলা, অধুনা কালিম্পং জেলার পেডং লাল আপেলের জন্য পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চলেছে। চিনের সঙ্গে বাণিজ্যের ‘ওল্ড সিল্ক রুটের’ অন্তর্গত জনপদ পেডং। এতদিন মনাস্ট্রি আর নির্জন নৈসর্গিক পরিবেশ ছিল পেডংয়ের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র। হোমস্টে ছিল এলাকার মানুষের রোজগারের অন্যতম পথ। এবার সংযোজিত হয়েছে আপেল বাগান।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অসুস্থ মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে পাহাড়ে পাড়ি, ব্রহ্ম জয় করে বাড়ি ফিরলেন চুঁচুড়ার দেবাশিস]

পেডং ব্লকের সাকিয়ংয়ের বাসিন্দা বিনোদ চামলিং। গাছ প্রেমী। বিভিন্ন প্রকারের গাছের নেশা রয়েছে তাঁর। সেই সুদূর কাশ্মীর থেকে কয়েকটি আপেল চারা নিয়ে এসেছিলেন কয়েক বছর আগে। ভাল ফল হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের উদ্যোগ নেন তিনি। সেখান থেকে প্রায় তিনশো আপেলের চারা (গ্রাফটিং) নিয়ে আসেন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশেই গড়ে উঠেছে আপেল বাগান। এখন গাছগুলির বয়স ১৯ মাস। লাল টকটকে আপেলে ভরে রয়েছে গাছগুলি। বিনোদ চামলিং ফোনে সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, “বলতে পারেন আমার ‘হবি’ এটা। সেই হবিই এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আপেল হার্ভেস্ট (গাছ থেকে পারা হবে) করা হবে। যা ফলন হয়েছে তাতে আপেল চাষের এখানে প্রভূত সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।”

Advertisement

বিনোদবাবুর এই সাফল্য অন্য চাষিদের আপেল চাষে উৎসাহিত করছে। পেডং সহ কৃষি অধিকর্তা শুভম মারাক বলেন, “এখানকার আবহাওয়া আপেল চাষের সহায়ক। কিন্তু চাষিদের সেই সাহসটা ছিল না আপেল চাষ করে লাভ করতে পারবেন বলে। বিনোদ চাপলিং দরজাটা খুলে দিয়েছেন। এখন অনেকেই আগ্রী আপেল চাষে।” ইতিমধ্যে বিভিন্ন ফার্মার্স প্রডিউসার ক্লাব (এফপিসি), ফার্মার্স প্রডিউসার কোম্পানি (এফপিসি) পেডংয়ে বিনোদবাবুর আপেল বাগান পরিদর্শন করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কোচবিহারের সাতমাইল সতীশ ক্লাব ফার্মার্স প্রডিউসার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক অমল রায় এদিন ফোনে বলেন, “খুবই ভাল ফলন হয়েছে। এই সাফল্য পাহাড়ে কৃষির নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। কৃষি ও পর্যটনের আরও উন্নতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এই আপেল চাষকে ঘিরে।”

আপেল চাষি বিনোদবাবু এখন এই গাছ থেকে গ্রাফটিং করে চারাও তৈরি করছেন। যা কিনে অন্য কৃষকরা আপেল বাগান গড়তে পারবেন। বিনোদবাবুর সাফল্য অন্য চাষিদেরও উৎসাহিত করছে। পাশাপাশি বিনোদবাবুও আপেল চাষের ক্ষেত্র বাড়াচ্ছেন। পেডংয়ের একটি এফপিসির সিইও কে টি পাখরিন বলেন, “পাহাড়ের অর্থনীতির বিকাশে আপেল চাষ নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।” বাঙালির পায়ের তলায় সরষে। তাই এবার পুজোয় ভ্রমণপিপাসু বাঙালির ডেস্টিনেশন হতেই পারে পেডং। সিল্করুটের আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে উপরি পাওনা হতে পারে আপেল বাগান। শীতে সিটংয়ের কমলাবাগান হতছানি দেয়। পেডংয়ের লাল আপেল এবার হাতছানি দিচ্ছে পর্যটকদের।

[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রুখতে তৎপর স্বাস্থ্যদপ্তর, অসুস্থদের রক্তের নমুনা পাঠাতেই হবে নাইসেডে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ