Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

হানিট্র্যাপের শিকার বাংলাদেশের সাংসদ! নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ডেকেছিল ষড়যন্ত্রকারীর ‘বান্ধবী’ই

সূত্রের খবর, শিলাস্তি রহমান আনোয়ারুল খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী।

Bangladesh MP Killing: Dhaka police found honey trap behind the murder case, woman arrested
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 23, 2024 8:43 pm
  • Updated:May 23, 2024 8:54 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ‘হানিট্র্যাপ’! ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে এল তেমনই তথ্য। আনোয়ারুল আজিমকে কলকাতায় খুনের ঘটনা জানাজানির পর শিলাস্তি রহমান নামে এক নারীর নাম সামনে এসেছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সাংসদকে হত্যার জন্য কলকাতার নিউটাউনে অভিজাত ‘সঞ্জীবনী গার্ডেনে’র যে ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ছিলেন ওই নারী। তাঁর কথা বলে অর্থাৎ ‘হানিট্র্যাপে’র টোপ দিয়ে বরানগর থেকে নিউটাউনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর ঘটে হত্যাকাণ্ড।

ঢাকা পুলিশ সূত্রে খবর, মিশন শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ সাংসদ আনোয়ারুলকে খুনের পর মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহর সঙ্গে শিলাস্তি বাংলাদেশে (Bangladesh) ফিরে যান গত ১৫ মে। তাঁকে এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) নিজেদের জালে নিয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই শিলাস্তি রহমান আনোয়ারুল খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনের বান্ধবী। তাঁর বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। কলকাতা পুলিশ নিউটাউনের (New Town) ওই আবাসনের সিসিটিভি ক্যামেরা বিশ্লেষণ করে দেখেছে, গত ১৩ মে ওই ফ্ল্যাটে তিনজন একসঙ্গে ঢোকেন। তাঁদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। একদিন সেখানে থাকার পর ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আসেন এক পুরুষ ও এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই শিলাস্তি। ১৩ মে শিলাস্তি আমানুল্লাহ ও সাংসদের সঙ্গেই ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন।

Advertisement
বাংলাদেশে সাংসদের হত্যাকাণ্ডে ধৃত নারী শিলাস্তি রহমান। নিজস্ব ছবি।

এর পর শিলাস্তি ১৫ মে বিমানে করে দেশে ফেরেন। তাঁর সঙ্গে দেশে ফেরেন মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন এমপি আনারকে কলকাতা (Kolkata) নিতে এই নারীকেই ‘ফাঁদ’ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কারণ, সব পরিকল্পনা করে শাহিন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়। আমানুল্লাহ ও শিলাস্তি মিলেই সাংসদ আনোয়ারুলের দেহ টুকরো প্রথমে হাড় আর মাংস পৃথক করা হয়। তার পর তা হলুদ মিশিয়ে একটি ট্রলিতে ভরা হয়। তা নিয়ে বেরন তারা। ঢাকার তদন্ত সূত্র বলছে, শাহিন ‘কিলার’ আমানুল্লাহকে নিয়ে কলকাতায় যান গত ৩০ এপ্রিল। সেখানেই বসেই সংসদ সদস্য (Member of Parliament) আনোয়ারুল হত্যার ছক কষা হয়। কলকাতা থেকে ১০ মে দেশে ফেরেন শাহিন। তখন ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন শাহিনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান, মূল কিলার আমানুল্লাহ, জিহাদ, সিয়াম, মোস্তাফিজ। ১৩ মে রাতে হত্যা মিশন সম্পন্ন হয়। আমানুল্লাহ, শিলাস্তি দেশে ফেরার পর তাদের আটক করে হত্যারহস্য উদ্ঘাটন হয়। তাদের কাছে আনোয়ারুল হত্যার রোমহর্ষক কাহিনি জানতে পারেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন শাহরুখ, তবে মেনে চলতে হবে চিকিৎসকদের ‘সাবধানবাণী’!]

তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, নিউটাউনের ওই বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আনোয়ারুলকে শাহিনের বকেয়া টাকার জন্য চাপ দেন আমানুল্লাহ ও তার সহযোগীরা। একসময়ে সাংসদের গলায় চাপাতি ধরেন আমানুল্লাহ। এনিয়ে ধস্তাধস্তি হয়। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পর মূল হোতা শাহিনকে জানানো হয়, মিশন কমপ্লিট। শাহিন মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে আমানুল্লাহ তাঁর লাশ কেটে টুকরো করে। বাইরে থেকে কিনে আনা হয় সাদা পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার ও দুটি বড় সাইজের ট্রলি ব্যাগ। লাশ টুকরো করার পর তা ঢোকানো হয় পৃথক দুটি ট্রলিতে। লাশের টুকরোগুলো ব্যাগে ঢোকানোর পর বাইরে থেকে আনা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ওই ফ্ল্যাটের মেঝে পরিষ্কার করে ফেলা হয়। কিলার গ্রুপের সদস্য সিয়ামকে এই ট্রলি তুলে দেওয়া হয়। সিয়াম একটা গাড়িতে উঠে কিছু দূর যাওয়ার পর সেটি নিয়ে নেমে যান। এর পর এই ব্যাগ কোথায় নিয়ে গেছেন, তা আর জানাতে পারেননি আমানুল্লাহ।

[আরও পড়ুন: ‘এই রাজ্যে Ph.D-র ইতিহাস ভালো না’, হিরণকে তোপ ‘বাম’ রাহুলের, দেবের খোঁচা, ‘ঢপের ডক্টর’!]

আরেকটি ব্যাগ ফ্ল্যাটে রেখেই ১৫ মে আমানুল্লাহ ও শাহিনের বান্ধবী শিলাস্তি বিমানে ঢাকায় (Dhaka) ফিরে আসে। অন্য ট্রলি ব্যাগটি মোস্তাফিজ, ফয়সাল-সহ অন্যরা সরিয়ে ফেলে। জানা গিয়েছে, আমানুল্লাহ, শাহিন সকলেই সাংসদ আনোয়ারুলের পূর্বপরিচিত। তবে আমানুল্লাকে আনার হত্যায় বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজে লাগান শাহিন। চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমানুল্লাহ ভাড়া করেন মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল সাহাজিকে। আর শাহিন আগে থেকেই ভারতে জিহাদ ও সিয়ামকে ভাড়া করে রাখেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ