Advertisement
Advertisement
Bangladesh

পদ্মার পর কালনা সেতু, কলকাতা-ঢাকা দূরত্ব কমবে ২০০ কিলোমিটার!

৩০ আগস্টের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

Bangladesh soon to get Kalna Bridge | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:August 27, 2022 9:45 am
  • Updated:August 27, 2022 9:45 am

সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পর এবার চালু হচ্ছে কালনা ব্রিজ। কলকাতা ও ঢাকাকে আরও কাছে নিয়ে আসবে ফরিদপুর ও নড়াইল জেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত কালনা সেতু। পরিষেবা শুরু হলে ঢাকার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটর হ্রাস পাবে। শুধু যাত্রী নয়, পরিবহণ খরচেও বিপুল সাশ্রয় হবে। সময়ও কমবে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর আরেকটি স্বপ্নপূরণ হচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতুর মধ্য দিয়ে। সেতুর মূল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর চলছে আলোর ব্যবস্থা ও দৃষ্টিনন্দন কাজ। আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) পক্ষ থেকে তারিখ ঘোষণা হলেই চূড়ান্ত হবে উদ্বোধনের দিনক্ষণ। সেই অপেক্ষায় আছেন কলকাতা-ঢাকা যাতায়াতকারী-সহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। মুখিয়ে আছেন যাত্রীবাহী বাস-সহ অন্যান্য যানবাহন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভারতের সাহায্যে রুশ তেল আমদানিতে আগ্রহী জ্বালানি জ্বালায় জর্জরিত বাংলাদেশ]

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে। কালনা সেতু চালু না হওয়ায় কলকাতা-ঢাকা ভ্রমণকারী-সহ নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া শিল্পনগর, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর-সহ আশেপাশের কয়েকটি জেলার লোকজন পদ্মা সেতুর সরাসরি সুফলও পাচ্ছেন না। কারণ, কালনাঘাটে এসে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সব ধরনের যানবাহনকে। ফেরি পার এড়াতে বহু বাস ও অন্যান্য যানবাহন ফরিদপুর, মাগুরা এবং গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা ঘুরে কলকাতায় যেতে হচ্ছে। এজন্য সবাই এখন কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন।

Advertisement

সেতু কর্তৃপক্ষ-সহ স্থানীয়রা জানান, এপারে গোপালগঞ্জের শংকরপাশা এবং ওপারে নড়াইলের কালনাঘাট। মাঝে প্রবাহিত মধুমতি নদী। এই নদীর ওপরই নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মতি পেলে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যানবাহন চালাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে সেতুটি। কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, “কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। দুই পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে। তবে এতোদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা আর রইল না।”

বলে রাখা ভাল, কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ভারতের কলকাতা, অসম-সহ বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল-পেট্রাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালু-সহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ৮৬ কিলোমিটার কমে যাবে। তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরণের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’র সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বড় একটি অংশ। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত বর্তমানে দুই লেন সড়ক চালু আছে। এই অংশে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ সড়ক নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান।

[আরও পড়ুন: তিস্তার জলবণ্টনে জোর দেবে বাংলাদেশ, যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে বসছে দুই প্রতিবেশী দেশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ