সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্কার মঈন খানের ইফতারে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। প্রশ্ন উঠছে, আওয়ামি লিগকে গদিচ্যুত করতে না পেরেই এই কি ‘কূটনৈতিক নৈশভোজে’র আয়োজন? আবার নতুন কোনও ছক কষছে বিএনপি? গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। যা রুখে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েছিল বিএনপি। শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের একাধিক দেশের কাছে নালিশ জানিয়েছিল খালেদা জিয়ার দল। যা নিয়ে হাসিনা সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছিল পশ্চিমি দুনিয়া। কিন্তু বিএনপির সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফেরেন হাসিনা।
নির্বাচনের পর কেটে গিয়েছে তিনমাস। এখনও পর্যন্ত সেভাবে শক্তিশালী কোনও সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিএনপি। বিশ্লেষকদের মতে, এই আবহে আরও বেশি করে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ছে বিএনপি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। আর এই কাজের মূল উদ্যোগী হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেদের তিনি নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। রবিবার তাঁর ঢাকার বাসভবনে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত অখিম ট্রোস্টার, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, চিনের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর হুয়ালং ইয়ান, চিনের সচিব গু ঝিকিন।
এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় মঈন খানের বাড়িতে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। তাঁরা সকলে আলোচনাতেও বসেছিলেন। তবে ঠিক কী নিয়ে বৈঠক হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এর আগে একটি অনুষ্ঠানে মঈন খান বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। হাসিনা সরকারকে নিশানা করে তাঁর অভিযোগ ছিল, “সরকার যেখানে হাত দিয়েছে, সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে। শুধু রাজনীতিকে ধ্বংস করেনি, অর্থনীতিকেও ধ্বংস করেছে।”
এদিকে বিএনপির মহাসচিব পদ নিয়ে টালবাহানা অব্যাহত। দলের বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই পদের দায়িত্ব পালন করতে অপারগ। এই দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তাঁর অনীহার কথা তিনি দলের হাইকমান্ডকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। তবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এবং তার মা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দুজনেই মির্জা ফখরুলকে নতুন মহাসচিব না পাওয়া পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।অবশ্য মঈন খান নিজে মহাসচিব হতে আগ্রহী। কিন্তু জনপ্রিয়তার দৌড়ে এখন মহাসচিব হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন কট্টর ভারতবিদ্বেষী হিসাবে পরিচিত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.